পাতা:প্রবাসী (অষ্টম ভাগ).pdf/৮৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>6 o সময়াভাব প্রযুক্ত এবং স্বক্ষ যন্ত্রাদি হাতের গোড়ায় না পাইয়া ম্যাক্সওয়েল সাহেব এই ব্যাপার লইয়া পরীক্ষা করিতে পারেন নাই। কিন্তু গবেষণা শেষ হইলে তিনি স্পষ্টই বলিয়াছিলেন, ঈথরদ্বারা তাপালোকাদির উৎপত্তির কথা যদি সত্য হয়, তবে নিশ্চয়ই একদিন তাপালোকের চাপ বা ধাক্কার অস্তিত্ব প্রত্যক্ষ পরীক্ষায় ধরা পড়িবে। অৰ্দ্ধ শতাব্দী পরে ম্যাক্সওয়েলের ভবিষ্যদবাণী সফল হইয়াছে। আমেরিকার কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নিকলস সাহেব, আজ কয়েকমাস হইল রয়াল ইনষ্টিটিউশনের এক বিশেষ অধিবেশনে আলোক-চাপের অস্তিত্ব সুম্পষ্ট দেখাইয়াছেন। কাচ পাত্র হইতে কতকটা বায়ু নিষ্কাশিত করিয়া যদি, তাহার মধ্যে চারিটি ক্ষুদ্র পক্ষবিশিষ্ট চরকি রাখা যায়, এবং প্রত্যেক পাথার এক এক দিক কোনপ্রকার কৃষ্ণবর্ণে রঞ্জিত করা যায়, তবে কাচ ভেদ করিয়া তাপ বা আলোকের রশ্মি পাথায় আসিয়া পড়িলেই চরকি আপনা হইতেই ঘুরিতে আরম্ভ করে। স্ববিখ্যাত বৈজ্ঞানিক ক্রুকস এই যন্ত্রটির উদ্ভাবন করিয়াছিলেন, এবং ইহার কার্য্য দেখিয়া মনে হইয়াছিল বুঝি বা এটা আলোক-চাপেরই কাজ । কিন্তু পরে জানা গিয়াছিল, ইহা তাপেরই সাধারণ কাৰ্য্য ; পাত্রের স্বল্পাবশিষ্ট বায়ুর উপর তাপই কাৰ্য্য করিয়া চরকির লঘু পক্ষগুলিকে ঘুরাইয়া থাকে। ইহার পর এপর্য্যন্ত আলোকের চাপ সম্বন্ধে আর কোন নুতন কথা শুনা যায় নাই। মুতরাং এই আবিষ্কারের সমগ্র গৌরব একক নিকলস সাহেবেরই প্রাপ্য বলা যাইতে পারে। অধ্যাপক নিকলস যে যন্ত্ৰ নিৰ্ম্মাণ করিয়া ম্যাক্সওয়েলের উক্তির সত্যতা প্রতিপন্ন করিয়াছেন, তাহার গঠন খুব সরল হইলেও যন্ত্র ব্যবহারে অত্যন্ত কৌশলের আবশ্যকতা দেখা যায়। আলোক-চাপের পরিমাণ এত অল্প যে পরীক্ষকের অতি সামান্ত ক্রটিতে সকল আয়োজন ব্যর্থ হইয়া যাইতে পারে। নিকলস সাহেব একটি স্বগ ছিদ্রবিশিষ্ট কাচের Rts (capillary tube) È «fa লঘু দর্পণ বসাইয়া, নলটিকে ঝুলটুয়া রাখিবার স্বব্যবস্থা করিয়াছিলেন। স্বর্যের তীব্র কিরণ বা বৈদ্যুতিক আলোকের রশ্মি দৰ্পণদ্বারে পড়িয়া প্রবাসী । পদার্থের উপর একটা মৃদ্ধ বা পড়বার সম্ভাবনা থাকে। [ ન્ય જ્ઞા তাহাদিগকে স্পষ্ট ৱাই দিছিল। কি পরিমাণ গ দর্পণ ঘুরিল, নিকলস সাহেব তাহাও হিসাব করিয়া সকলকে জানাইয়াছিলেন। সূর্য্যের আকার পরিবর্তন’। আজ প্রায় চল্লিশ বৎসর গত হইল বিখ্যাত জ্যোতিৰ্ব্বি রদারফোর্ড সাহেব চৌদ্দ বৎসর ধরিয়া স্বর্যের অনেকগুলি ফোটোগ্রাফ ছবি উঠাইয়াছিলেন। এগুলি এখন আমেরিকার কলম্বিয়া মানমন্দিরে রহিয়াছে। সূর্যের আধুনিক ছবির সহিত সেই প্রাচীন ছবিগুলির তুলনা করায় সম্প্রতি অনেক অনৈক্য দেখা গিয়াছে। মোট ১৩৯ খানি ছবি লইয়া পরীক্ষা আরম্ভ হইয়াছিল, এবং এ গুলিকে বৎসর অনুসারে পর পর সজ্জিত করিয়৷ চিত্রস্থ সুর্য্যবিম্বের ব্যাস পরিমাপ করা হইয়াছিল। এই পরীক্ষায় একই বৎসরের গৃহীত নানা ছবির ব্যাসের মধ্যে কোন অনৈক্য দেখা যায় নাই। কিন্তু দুই তিন বৎসরের পূৰ্ব্ব বা পরের ছবির সহিত তুলনা করায় ব্যাসের পরিমাণে বিশেষ পার্থক্য ধরা পড়িয়াছিল। ' রদারফোর্ড যখন ছবি তুলিয়াছিলেন তখন এখনকার মত নিভুলপ্রথার ফোটোগ্রাফ লইবার কৌশল জানা ছিল না। সুতরাং প্রাচীন ছবিতে ভূলভ্রান্তি আছে মনে করিয়া, স্বর্য্যের এই আকার পরিবর্তনের প্রমাণে সহসা কেন্থ বিশ্বাস স্থাপন করিতে চাহে নাই। মানমন্দির হইতে স্বৰ্য্যের পুরাতন ছবি বাহির করিবার জন্ত সেই সময় হইতে অনুসন্ধান চলিতেছিল। দুর্ভাগ্য বশত: প্রাচীন ছবি কোন স্থানেই পাওয়া যায় নাই। কিন্তু গত ১৮৭৪ এবং ১৮৮২ সালের শুক্রোপগ্রহণ (Transit of Venus) পরীক্ষার জন্ত জৰ্ম্মাণ জ্যোতিষিগণ হেলিয়োমিটর যন্ত্র সাহায্যে স্বৰ্য্যবিশ্বের যে পরিমাপ লইয়াছিলেন, তাহার কাগজপত্র সম্প্রতি বাহির হইয় ফোর্ডের ছবির অনৈক্যের সহিত অবিকল একই ধেৰ গিয়াছে। সুতরাং গভীর বাষ্পমণ্ডিত স্বৰ্য্য নিজের বাঙ্গাবরণ খানিকে সঙ্কুচিত ও প্রসারিত করিয়া যে আকার পরিবর্তন করে, তাহাতে আর সন্দেহ নাই। গত ১৮৯৩ ও ১৮৯৪ সালে উইলসন নামক জনৈক মার্কিন জ্যোতিষী নর্থফিলর্ড অপর দেশের প্রাচীন | ] . করি বাস বের যে সকল ছবি উঠাগৈছিলেন তাহাতেও ঐ প্রকার পরিবর্তন দেখা গিয়াছে। পূর্য্যের আকার পরিবর্তন নিঃসন্দেহে প্রমাণিত হইলে, কোন সময়ে পরিবর্তনের মাত্রা অধিক হয় জানিবার জন্য অনুসন্ধান চলিয়াছিল। পাঠক বোধ হয় অবগত আছেন, মূৰ্য্যমণ্ডলে যে সকল সৌরকলঙ্ক (Sun-spots) gwosi qfa তাহার সংখ্যা সকল সময়ে সমান থাকে না। কেবল প্রতি এগারো বৎসর অন্তর কিছুদিন ধরিয়া স্বৰ্য্যমণ্ডল বহু কলঙ্কে আচ্ছন্ন হইয়া থাকে। অনুসন্ধানে জানা গিয়াছে, এই কলঙ্ক-প্রাচুর্য্যকালেই সৌরদেহের বিশেষ পরিবর্তন ঘটে। পৃথিবীর উত্তর ও দক্ষিণ মেরুপ্রদেশ যেমন সাধারণতঃ কিঞ্চিৎ চাপা, স্বৰ্য্যের আকারও কতকটা তদ্রুপ। কিন্তু বলন্ধের প্রাচুর্য হইলে স্বৰ্য্যের আর এই আকার থাকে না। তখন অক্ষ-ব্যাস (Polar-diameter) অসম্ভব বুদ্ধি পাইয়া স্বৰ্য্যকে লম্বাটে আকার প্রদান করে। স্বৰ্য্যের এই আকারপরিবর্তনের সহিত সৌরকলঙ্কের কি সম্বন্ধ আছে অদ্যাপি জানা যায় নাই । মঙ্গল বুধ ও শুক্র এই তিনটি গ্রহ স্বৰ্য্যের খুব নিকটবর্তী, কাজেই আমাদেরো খুব নিকটবর্তী। ইহাদের গতিবিধি নানা দেশের পণ্ডিতগণ নানা সময়ে অতি স্বশ্নরূপে গণনা করিয়া রাপিয়াছেন । তথাপি গণনালব্ধপথ হইতে গ্ৰহগণকে কখন কখন বিচলিত হইতে দেখা যায়। জ্যোতিষিগণ অস্থাপি এই গতিবিভ্রাটের প্রকৃত কারণ নির্ণয় করিতে পারেন নাই। স্বৰ্য্যের আকার পরিবর্তনের সহিত ইহার কোন নিগূঢ় সম্বন্ধ আছে বলিয়া অনেকে অনুমান করিতেছেন। কৃত্রিম হীরক " ফরাসী পণ্ডিত ময়সনের (Moisson) নাম আজ ঈগদ্বিখ্যাত। কয়লা ও হীরক এক অঙ্গার হইতেই উৎপন্ন হয় জানা ছিল, কিন্তু কিপ্রকার প্রাকৃতিক অবস্থায় পড়িয়া কৃষ্ণ অঙ্গার উজ্জল ও স্বচ্ছ হীরকে পরিণত হয় তাহ জানা পড়িয়াছে, এবং ঐ দুই বৎসরের মাপের অনৈক্য রদার } | ছিল না। ময়সন সাহেব তাহার পরীক্ষাগারে অঙ্গার লইয় নানা পরীক্ষা করিয়া যে পদ্ধতিতে কয়লা স্বভাবতঃ হীরকে পরিণত হয় তাহ জানিতে পারিয়াছিলেন ; এবং পরীক্ষাগারে উংকৃষ্ট কৃত্রিম হীরকও প্রস্তুত করিয়াছিলেন। হিসাবে দেখা গিাছিল, নানা আয়োজন করিয়া রতিপ্রমাণ হীরক প্রস্তুত __ বৈজ্ঞানিক সারসংগ্রহ।


WikitanvirBot (আলাপ) ১৪:১৭, ২৪ মার্চ ২০১৬ (ইউটিসি)"--------------------

>Q> করিতে যত অর্থব্যয় হয়, আকরিক হীরক সংগ্ৰহ করিতে তাহা অপেক্ষা অনেক অল্প খরচ পড়ে। কাজেই হীরক প্রস্তুতের উপায় উদ্ভাবিত হওয়া সত্ত্বেও প্রতিযোগিতায় আকরিক হীরককে স্থানচ্যুত করা যায় নাই। কৃত্রিম হীরককে অগত্যা নিছক্‌ পুথিগত ব্যাপার হইয়া থাকিতে হইয়াছে। পাঠক অবশুই জানেন আমাদের পৃথিবী প্রতিদিনই শত শত উল্কাপিণ্ড (meteors) টানিয়া নিজের কুক্ষিগত করে। ইহাদের অধিকাংশই বায়ুর ভিতর দিয়া আসিবার সময় বায়ুর সংঘর্ষণে জলিয়া পুড়িয়া ছাই হইয়া যায়। তাই কিছুদূর নামিয়া আসার পরই আমরা উল্কাপিণ্ডগুলিকে অদৃগু হইতে দেখি। কিন্তু বড় বড় উল্কাপিণ্ডগুলি পড়িবার সময় নিঃশেষে পুড়িয়া যায় না। এ জন্ত কতকগুলি পিও পুড়িতে পুড়িতে ভীমবেগে ভূপৃষ্ঠে আসিয়া পতিত হয়। পৃথিবীর নানা স্থানে উল্কাপিণ্ডের এই প্রকার দগ্ধাবশেষ, পাওয়া গিয়াছে। সম্প্রতি একটি অদ্ভুত রকমের উল্কাপিও ময়সন সাহেবের হস্তগত হইয়াছে। পরীক্ষায় ইহাতে লৌহ, গন্ধক ও ফসফরস ছাড়া সাধারণ অঙ্গার এবং অতি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র হীরককণিকা পাওয়া গিয়াছিল। পূৰ্ব্বে যে সকল উল্কাপিও লইয়া পরীক্ষা করা গিয়াছে, তাহার কোনটিতেই হীরকের চিকু দেখা যায় নাই, এবং তাহাতে লৌহ, গন্ধক ও ফসফরসের পরিমাণও এ প্রকার ছিল না। ময়সন সাহেব অনুমান করিয়াছিলেন, সম্ভবতঃ ঐ লৌহগন্ধকাদি পদার্থ উল্কাপিণ্ডস্থ সাধারণ অঙ্গারকে দানা বিশিষ্ট করিয়া হীরকে পরিণত করার সহায়তা করিয়াছে। পূৰ্ব্বোক্ত অনুমানের উপর নির্ভর করিয়া ময়সন সাহেব বৈদ্যুতিক চুল্লীতে লৌহ গালাইয়া তাহাতে কিঞ্চিৎ চিনি ফেলিয়া দিয়াছিলেন। চিনির অঙ্গার লৌহের সহিত বেশ মিশিয়া গিয়াছিল। তা’র পর তাহাতে গন্ধকযুক্ত লৌহ (iron sulphide) fit-tfềni sforsorgtrsē forfirðir শীতল জলে ডুবাইয়া ঠাণ্ড করা হইয়াছিল। এই অবস্থা অঙ্গারকে আর তাহার সাধারণ আকারে দেখা যায় নাই, অধিকাংশ অঙ্গারই উজ্জ্বল হীরকের ক্ষুদ্র দানায় পরিণত হইয়াছিল। লৌহ ও গন্ধক অঙ্গারকে দানাদার করিয়া হীরকে পরিণত করিতে যে এত সাহায্য করে, তাহা অস্কাপি T