পাতা:প্রবাসী (অষ্টম ভাগ).pdf/৯৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>や28 চাউল। ফুলের পাপড় (৩২ পৃ: ), শেওলা (১৭১ পৃ: ) ছলো বেড়াল ( ২২২ পূঃ , ইত্যাদি পড়িয়া নদীয়া জেলার অংশ বিশেষের গ্রাম্য পইঠা, বোচক, হিসাব, ছেকল, হাসি শব্দ মনে আসে । এক স্থানে আছে, এক কামার কাস্তে গড়াইতেছে" (২১৩ পৃ: ),—সেখানে গড়িতেছে হইবার কথা। ‘নাক যোড়াইয়া দে’ ( ১৭৭ পৃ: ),—জুড়িয়া দে ? “অত পডিতী চুলিয়ে কাজ নাই’ (১৯৮ পূঃ )—ঢলাইয়া ? ফলাইয়া ? ‘নিবেদনে,’ ‘জ্যোচ্ছন ফুল ফুট্‌ছে, মার মুথের এক একটা কথায় সেই আকাশ-নিখিল-ভরা জ্যোৎস্নার রাজ্যে, * * * কত অছিন অভিন রাজপুরী, কত চির সুন্দর রাজপুত্র রাজকন্যার অবর্ণনীয় ছবি আমার শৈশব চক্ষুর সামনে সত্যকারটার মত হইয়া ফুটিয়া উঠিয়াছিল।”—এখানে বোধ হয় ফুটেছে করিলে পরের সংগে মিল খাইত। জোচ্ছনা ফুল ফোটে, না, জোচ্ছনায় ফুল ফোটে ? বোধ হয় জোচ্ছনায় ঠিক। এমন জোচ্ছন যেন বোধ হয় চারিদিকে ( শাদা ) ফুল ফুটিয়া রহিয়াছে। . জোচ্ছনায় ফিনও ফোটে। ফুট ফুটে জোচ্ছন, কিন্তু জোছনায় ফুল ফোটে। লেখক জানাইয়াছেন, কেহ কেহ ভিন ফোটা” কেহ বা ফটিক ফোটা” বলে। ফুল ফোটা আর ফটিক ফোটার মূলভাব এক। ফিন ও ভিন এক বোধ হয়। ভিন্ন শব্দ হইতে ভিন আসিয়াছে। জোছনায় ফিন ফোটে—গাছপালা ভিন্ন ভিন্ন, স্পষ্ট স্পষ্ট দেখায়। কিংবা সং স্ফুলিঙ্গ শব্দ হইতে ফিন আসিয়াছে। স্ফুলিঙ্গ শব্দের চলিত রূপ ফিনকি শব্দ আছে। কিন্তু অছি অভিন্‌ পুরী নিশ্চয়ই অছিন্ন, অভিন্ন । বাগালায় কর্মকারকে কে’ বিভকৃতি বসে। ইহাই সাধারণ রীতি। কোন কোন স্থানে 'রে’, এবং সৰ্ব্বনামে ‘য়’ও বসে। আমাকে, আমারে, আমায়,—এই তিন রূপ। আমাকে শব্দের কে’ বিভকৃতির ‘ক’ লুপ্ত হইয়া "য়"। সুতরাং আমাকে ও আমা'এ' বা আমা" মূলে এক। আমা'এ' পদের ‘এ’ স্থানে রে’, ‘র’ আগম। কোন কোন স্থানে কর্মকারকে ‘আমার’ পদেরও প্রয়োগ আছে। হয়ত তাহা মুলে ষষ্ঠীপদ, কিংবা কর্মকারকে ‘রে’ প্রবাসী । প্রমাণ, সংস্কৃত শৃংখল বাগলায় শিকল, সং ত"ভুল বাং [ ৮ম ভাগ। হইতে উৎপন্ন। বংগের স্থানাস্থানে কর্মকারকে নানাবিধ বিভকৃতি আছে। একবচনে আমাকে’, আমায় আমারে"। আমাক, আমার ; এবং বহুবচনে আমাঘরক”, আমাদের ঘরে আমার"গে" ইত্যাদি । এই সকল বিভিন্ন পদের মধ্যে লেথার ভাষা আমাকে, আমায়, আমাদিগকে লইয়াছে; অন্তগুলির প্রশ্ৰয় দেয় না। আমাদিগকে স্থলে আমাদিকে করাও চলে। ঠাকুমার ঝুলি’তে যেন বাছিয়া বাছি৷ কর্মকালুক্সের এবং ‘দেরকে’ পোরা হইয়াছে। "আমরা উহাদের পুষিব' ( ৬ পৃ: ) ; আমাদেরকে আনিয়াছ, মাদেরকেও আন’ ( ৭ পূ: ) ; তাহাদেরকে খেদাইয়া দেন (৮ পূঃ ) ; রাজপুত্রদেরকে থলের মধ্যে পূরিয়া ( ১৫ পূ: ) ; ইত্যাদি । তাছাদেরকে দিয়া তিন বুড়ী তিন সন্ধ্যা জল খাইয়া’ ( ১৫ পূ: )—সহজে অর্থ পাই না। ঝুলির কোন কোন স্থানে কিয়াপদ প্রয়োগেও একটু বিশেষত্ব দেখা যায়। “খোকন নাচতে লেগেছে’, ‘নাচতে নেগেছে ; বিছানা নিলেন (৩৫ ) ; মাথার চুল জটা দিয়াছে’ (৩৯ পৃ: ) ; ‘যোগাড়-যাগাড় দিক্‌’ ( ৪২ পৃ: ); “টান দিল’ ( ৪৯ পৃ: ) ; ‘আসন নিল’ .( ৯৮ পূঃ ); ‘নেমস্তন দিতিস্ (১৯৫ পৃ: ) ইত্যাদি। স্থান ভেদে রায় করা ( রাধা ), টান দেওয়া (টানা ), নাচিতে লাগা (নাচা) ইত্যাদি আছে। চুলে জটা ধরে ; যোগার-যাগাড় করা: নেমস্তন্ন করা, ইত্যাদিও আছে। ঝুলিতে কোন কোন স্থলে এক এক শব্দের অম্লচর শব্দ যোজিত হইয়াছে। কাপড়-চোপড় শব্দের চোপড়কে অনুচর বলিতেছি। অনুচর স্বাধীন নয় বটে, কিন্তু অর্থহীন নয়। সাড়া-শব্দ, কুন্ডলী-মণ্ডলী পাকাইয়া, চটিয়া-মটিয়া, বাধিয়া-ছাদিয়া, ঝুলি হইতে লইলাম। কিন্তু পরিষ্কার ঋরিষ্কার, বটি মটি,কুলো মূলে, ভাবিয়া টাবিয়া, প্রভৃতির নিরর্থক অনুচর বা প্রচর শব্দ না থাকিলে ভাল হইত। কারণ ইহারা বৃথা ধোকা জন্মায়। ভাবিয়াচিন্তিয়া আছে ; টাবিয়া না আসিলেও চলিত। অন্তগুলির গোড়ায় ট দিয়া আরম্ভ করা সাধারণ নিয়ম। কএকটি অনুচরের রূপ দেখিলে অর্থহীন বোধ হয় না, কিন্তু অর্থ বুঝিতে পারা গেল না। তাড়াতাড়ি হাতিয়া-পিতিয়া (৮১ পৃ: ) ; স্থাপিয়া-জাপিয়া (৮৫ পৃ: ) ; ‘জন-জৌলুষ ৩য় সংখ্যা । ] (১৪১ পৃ: ); 'কাবু-জাবু’ ( ১৭৬ পৃ: ) ; উড়ো-খুবড়ো পড়ে আছে মস্ত গাধাটা’ ( ১৯৯ পৃ: ) ; ভেংগে যায় সব डिीज़' (२०११: ) ; ‘डा'cठ ८कन अड़ि-भड़ि' (२२० }); ইত্যাদি |. বাগল দ্বিবৃক্ত শব্দ সম্বন্ধে অনেকে অনেক কথা লিয়াছেন। (মাছি) ভন্‌-ভন, (ফোড়া) টন টন ইত্যাদিকে ংিস্কৃত শব্দ বলিতেছি। এইরূপ শব্দের আলোচনা স্থান এ নহে। মোটা-মোটি বলিতে পারা যায়, ইহাদের অর্থ শ। ঝুলিতে এরূপ শব্দের ছড়া ছড়ি। জানি না, লেখক পদগুলি বিশিষ্ট লোকের মুখে শুনিয়াছেন, কি নিরক্ষর গ্রাম লোকের শিশুভাষা অনুকরণ করিয়াছেন । লেখক অনুপ্রাসের লোভে পড়িয়া কতকগুলিকে টানিয়া আনিয়াছেন। প্রশংসার বিষয়, অনেক স্থলে দ্বিরুকৃত শল্প ঠিক বসিয়াছে। কিন্তু এক স্থানে দেখিতেছি ; ‘মন ছ (১০৫ পৃঃ), অন্ত স্থানে সেই মন ছব্ৰ’ছৰ (১৩১ পূ:) ; অন্ত স্থানে 'শ্বেত মাণিক ছক্‌ছ (৮৭ পৃঃ), রিতেছে। যদি শ্বেত মাণিক ছত্ৰ-ছব্‌ করে,–ছবি— প্তি প্রকাশ করে, তাহা হইলে মন ছত্ৰ-ছা করিতে "ার না। হয় ত ছমৃ-ছম শব্দ কোথাও ছন-ছন, কোথাও লোও ছবছৰ ইয়া পড়িয়াছে। মা স্থানে বা আসা আশ্চর্য নয়। ঝুলিতেই পাই, ভিটে বাতির নিশ্বন (২.৪ পৃ:) --ইহা ভিটামাটির নিদর্শন বোধ হয়। ভয়ে ছম্ছম করে ; ঘরও ছমৃ-ছম (১০৪ পৃঃ) করিতে পারে, কিন্তু শোনা যায় না। মনের চা"চল্য বুঝাইতে ছিম বলা যায় না। ‘পুরী যেন দুধে ধোয়া-দবৃদব ধি করিতেছে’ (৩০ পৃঃ)। ধর্ধব যথেষ্ট ; উহার স্বপত্রংশে দক্‌দৰ আনিবার প্রয়োজন ছিল না। ‘গজৰােতির টলটলে আলো’ (৬৮ পূঃ) ; টুল-টুলে চাপা’ লি (৫, পৃঃ), মুখখানি পাপড়ার মধ্যে টুল-টুল করিতেছে’ (৩২ পৃঃ), ইত্যাদি অনেক টল-টল, টুল-টুল আছে। | sারতচন্দ্র টলটল কলকল তর্গ লিথিয়া টল-টল শব্দের কি প্রয়োগ দেখাইয়া গিয়াছেন। বোধ হয়, গজমতির লীলা বা ঢলঢ়লে আলো, তুল-তুল চাপাফুল, এবং খানি টল্টল বা টুল-টুল হইবে। বিড়াল গড় মড়, দি ইত্বরকে ধরিয়া’ (১৩৬ পৃঃ); ‘অজিত ধড়-মড়, > ソQ করিয়া উঠিয়া দেপে’ (১০৪ পৃঃ)। ধড়-মড়, বরং বুঝিতে পারি, গড়-মড় বুঝিলাম না। পিচায়, গলায়, পুরী দগ-দগ, থক-থক' (১১৯ পৃঃ)--দ্বিরুস্কৃত শব্দদ্বয়ের অপপ্রয়োগ । ‘কড়-কড়া ভাত’ বুঝি, কিন্তু ‘সড়-সড়া চাল’ (চা’ল ) (৫৪ পৃঃ) বুঝি না ; ডরে লোককে থর থর করিয়া কঁাপিতে দেখি, কিন্তু ঠি-ঠি’ (২১৩ পৃঃ) করিতে দেখি না ; বা বা রোদ জানি, ঠিা ঠা রৌদ্র’ (২১• পৃঃ) জানি না। দেশে দেশে বিদ্যার চি চি পড়িয়া গেল’ (১৯৬ পুঃ )—নিন্দাপ্রচার না হইলে টি টি (ধিক্ ধিক্) বলা যায় না । কতকগুলি শব্দের অর্থ বুঝিলাম না। “রাণীর পা উছল, চোক উথর ( ১১৫ পূ: ) ; ‘চিড়িক দিয়া ঘরে চমক জলিয়া উঠিল’ ( ১৩১ পৃ: ) ; ‘হাপুস নয়ন’ (১৭২ পৃ: ) ; তুলাটুক তেনিয়া যায়’ ( ১৮৩ পূ: ) ; ‘খোন, খুস্তি, পোলে, থোলো’ ( ২১২ পৃ: ) ইত্যাদি। "কাঠরে’ বউ তো ভুকুরিয়া কাদিয়া উঠিল’ (২০৯ পৃ: )। ভারতচন্দ্র পাই, ভূকরিয়া ফুকরিয়া মেনকা কহিছে।” কিন্তু ডুকরিয়া কাদা কি কহা কি রকম, তাহ জানি না। পাৰীপাখালী আছে, কিন্তু তেমনই গাছ গাছালী ( ৯১ পৃ: ) না বলিয়া গাছ-গাছড়া বলা যায়। কোন কোন স্থানে গাছ-গাছালী আছে বটে, কিন্তু বোধ হয় গাছ-গাছড়া ভাল। পাখা আছে যার, তাহা পাথালী ; পার্থী-পাখালীপাখী এবং পাপীর ছায় প্রাণী বা পার্থী। এই হেতু পার্থীপাথালী বহুত্বজ্ঞাপক। ঝুলির লেখক পাখ (পাখা ), মাথে ( মাথায় ), ডট (ডাটা ), ইত্যাদি শব্দের শেষের আ লোপ করিয়াছেন। ‘পুরী নিৰ্ভাজ নিঝুম (৩০ পূ: )। নিঝ ঝুম কিংবা নিঝুম বুঝি, কিন্তু ভগশূন্ত পুরী অনুমান করিতে পারি না। “ডিমের খোলস’ ( ১০৭ পৃ: ), ‘লাউয়ের খোলস’ (২১৪ পূ: ), যদি বলিতে হয়, তাহা হইলে । খোলা শব্দ রাখিবার প্রয়োজন থাকে না। খোলার সদৃশ যাহা, তাহ খোলস। এক জায়গায় ‘প্রিদৗম’ প্রদীপ ) দেখিলাম। বোধ হয় লেখক পিদিম বা পিদিম শব্দকে শুদ্ধ করিয়া ফেলিয়াছেন। প্র উচ্চারণ করিতে পারিলে শেষের পতে আটকায় না। - লেখক মিঠা কবিতা ও ছড়া লিখিতে পারেন। উৎসর্গে