পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১০৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

br8 ●धंबांजौ yegy এই সকল কারণে, দেশের লোকের পক্ষে চেষ্টা ও উৎসাহের অভাব ঘটিয়াছে। দ্বিতীয় কারণ, সমবায়ু-প্রণালীতে সাধারণের অজ্ঞতা ও অবিশ্বাস। অবস্থাভেদে বিভিন্ন আকার ধারণ করিয়া সমবায়-নীতি পৃথিবীর অর্থনৈতিক জগতে যুগান্তর জানয়ন করিয়াছে। কিন্তু ভারতবর্ষের দুর্ভাগ্য যে, আমাদের অধিকাংশ সমিতি ঋণগ্রহণের উদ্দেশ্বে গঠিত হইয়াছে। সমবায়ু-আইনের বিধান অনুসারে পল্লীবাসীos-R 4448-Affs (Rural Credit Societies) পরম্পরের অসীম দায়িত্বমূলে (joint unlimited liability ) গঠিত, সমিতির এক জনের দেনার জন্য অপর সকলে সম্পূর্ণভাবে দায়ী। গত দশ বৎসর ধরিয়া যে অর্থনৈতিক বিপ্লব চলিয়াছে, তাহার ফলে অনেক ঋণদান-সমিতির অত্যন্ত অবনতি ঘটিয়াছে, অনেক সমিতির অস্তিত্ব লোপ পাইয়াছে, এবং পূর্বোক্ত বিধানমত এই সকল সমিতিতে একের দেনা অপরের নিকট আদায়ের ব্যবস্থা হইয়াছে । জলসেচন-সমিতি সসীমদায়িত্বমূলক ( limited liability ), সুতরাং এই সকল সমিতিতে এক জলকে অপরের দেনার দায়িত্ব বহন করিতে হয় না। সাধারণ লোকের পক্ষে, এই তারতম্য বুঝা কঠিন । সমবায় ঋণদান-সমিতির সংশ্রবে আসিয়া এক বার যাহারা ঠকিয়াছে, তাহারা ও তাহাদের পরিচিত লোকেরা আর কোনও প্রকার সমিতির সম্পর্কে থাকিতে চাঙ্গে না।* কিন্তু আরও অন্তরায় আছে। কোনও জলাশয়ের সংস্কারের জন্য সমবায়ু-সমিতি গঠন করিতে হইলে সেই জলাশয় হইতে যে-সব কুমিক্ষেত্রে সেচন হয়, তাহার সকল কৃষককে একত্র করিতে হইবে । কিন্তু তাহাদের মধ্যে নানা মতের নানা প্রকৃতির লোক আছে, সুতরাং অনেক স্থলে তাতাদের সকলকে একত্র করা সম্ভব হয় না। সমবায়-নীতির মধ্যে বাধ্যতার স্থান নাট এবং একের অসম্মতির জন্য বহুর স্বার্থসিদ্ধির ব্যাঘাত ঘটিয়াছে, এমন দৃষ্টান্ত বিরল নহে। (world trade depression)

  • “For some time, }o-operation stnrik in their nostrils.”—M. L. Darling : Punjab Peasantry in Prosperity dé Debt, p. 262.

বাকুড়া-বীরভূমে অনেক বার দুর্ভিক্ষ হইয়াছে । প্রতি বারেই গবর্ণমেণ্টের সনাতন রীতি অনুসারে কুকি ঋণের ব্যবস্থা হইয়াছে, **to "footo (test relief works) who হইয়াছে। কিন্তু কখনও শস্যহানির মূল কারণ নির্ধারণ করিয়া, তাহার প্রতিবিধানের ব্যবস্থা হয় নাই । গত বারে ১৯৩৫-৩৬ সালের দুর্ভিক্ষে, আত ত্রাণের ভার ভারতীয় সিভিল সার্ভিসের মিঃ মার্টিনের (Mr. O. M. Martin, i. C. ম. ) উপর ন্যস্ত ছিল। তিনি ইহার প্রতিকারের উপায় অনুসন্ধান করিয়াছিলেন। বাঁকুড়, বীরভূমে শস্যক্ষেত্রে জলসেচনের যে ব্যবস্থা প্রাচীনকালে প্রচলিত ছিল, তাঙ্গর সংস্কার দ্বারাই সেচনকার্য সহজে ও স্বল্পায়াসে সম্পন্ন হইতে পারে, এই বিশ্বাসে তিনি দুই বংসর পূর্বে জলাশয়-সংস্কার ব্যবস্থার একটি আইনের পাণ্ডুলিপি প্রস্তুত করিয়াছিলেন। বৰ্ত্তমানে তাহার প্রণীত পাণ্ডুলিপি বঙ্গীয় আইন পরিষদ ও আইন সভায় গৃহীত হইয়াছে। এই আইন বাধ্যতামূলক । সংক্ষেপত: ইতার বিধান এই যে, সেচনের উপযোগী কোনও জলাশয় নষ্ট হইয়া থাকিলে, জেলার কালেক্টর তাহার সংস্কারের নিমিত্ত মালিককে নির্দেশ করিবেন । জলাশয়ের মালিক সেই নির্দেশমত কায্যে অবহেলা করিলে, কালেক্টর জলাশয়ের দখল লইবেন এবং হয় নিজের অধীনস্থ কমচারীর দ্বারা তাহা সংস্কার করাইবেন, নতুবা তাহার বিশ্বস্ত অন্য কোনও ব্যক্তি বা সমিতির হাতে সংস্কারের ভার অর্পণ করিবেন। পরে যাহাদের জমিতে জলসেচন হইবে, তাহাদের নিকট নির্দিষ্ট হারে ব্যয়ের টাকা আদায় হইবে । এই আইন প্রয়োগ করিবার উপযোগী নিয়মাবলী ও কার্যপদ্ধতি এখনও প্রণীত হয় নাই। সুতরাং কার্যক্ষেত্রে ইহার ফল কি হইবে, তাহা বলা কঠিন। প্রায় ১৫ বৎসর পূৰ্ব্বে বঙ্গের ক্ষয়িষ্ণু জেলা শীর্ষক প্রবন্ধে বাকুড়া ও বীরভূমের অবনতির বিবরণ প্রবাসী পত্রিকায় প্রকাশিত হইয়াছিল । জলসেচনের অভাবই এই অবনতির প্রধান ও মূল কারণ। এই অঞ্চলের অধিবাসিগণের আগ্রহ, উদযোগ ও সংঘবদ্ধ প্রচেষ্টা, ব্যতীত এই অভাব দূর হইবে না। (agricultural loan)