পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Sషి প্রবাসী రిg& মোড়লের দ্বারা প্রেরিত। একটি এ শহরের প্রধান পুরোহিত-পরিবারের ও অপরটি জনসাধারণ থেকে বেছে পাঠান হয়েছে। এরা সকলে এ রাজ্যের নানা অংশের অধিবাসীদের পক্ষ থেকে নাচের অর্ঘ্য নিবেদন করতে এসেছে। এবং সঙ্গে আছে আরও কয়েকটি মেয়ে যারা এই দেবতার কাছে কোন অম্বথে বা বিপদে মানত করেছিল যে, এই উংসবের দিনে তারা দেবতার কাছে তাদের নাচের অর্ঘ্য নিবেদন করবে। বালক-নৰ্ত্তক, লেগ নাচে দাড়কাকের ভঙ্গীতে অল্লক্ষণ পরে সারি বেঁধে এক দল মেয়ে নানা প্রকার অৰ্ঘ্য মাথায় ক’রে এসে উপস্থিত, পিছনে তাদের বাজনার দল। একে একে, তাদের মাথার অর্ঘ্য মন্দিরের সামনে সাজানো হ’ল। অল্প দূরে অপর একটি মঞ্চে প্রধান পুরোহিত তার পূজার সামগ্ৰী নিয়ে বসলেন। স্থানটি নান। প্রকার অর্ঘ্যের দ্বারা পূর্ণ। পুরোহিত এক মনে, আমাদের দেশের পূজারীদের মত ফুল, ঘণ্টা পবিত্র জল প্রভৃতি দ্বারা পূজার কাজ আরম্ভ করলেন। শৈব পূজারীদের মত আঙ লের নান৷ প্রকার ভঙ্গী। ইতিমধ্যে অপর পূজারী, এক হাতে ঘণ্ট। অপর হাতে ধূপ ও নাচিয়ে মেয়ে কয়টিকে নিয়ে প্রধান দেবতার মন্দিরের চারি দিকে প্রদক্ষিণ সুরু করলেন। শাস্তমূৰ্ত্তি পূজারী আপন মনে ধ্যানস্থ চিত্তে ধীর পদক্ষেপে এগিয়ে চলেছেন, পিছনে চলেছে নাচের ভঙ্গীতে মেয়ে কয়টি। নাচটি ছিল অতি সহজ অথচ স্বন্দর। ਾਣੀ মেয়ের মুখ দেখে মনে হচ্ছিল যেন তারা সকলেই অত্যন্ত চিন্তিত, যেন তাদের নাচে কোন বিঘ্ন না আসে এই রকম শঙ্কিত মনোভাব । এই ভাবটিই এই নাচের দর্শনীয় বা উপলব্ধি করার বিবয়। পাশেই এই নাচের সঙ্গে মিল রেখে অতি সহজ সুরের একটি বাজনা বাজছিল কয়েকটি গামেলান-যন্ত্রে, তার মধ্যে দুটি কাসার পাতের ও বাকীগুলি বাশের । তিন বার প্রদক্ষিণের পর বালিকার সকলে মন্দিরের সামনে দেবতার দিকে মুখ রেখে হাতজোড় করে প্রণাম করল। পূজারী মঙ্গলঘটের পবিত্র জল তাদের মাথায় প্রথমে ছিটিয়ে দিলেন, সঙ্গে সঙ্গে অপর জনতার দিকে ছিটিয়ে দিতে লাগলেন । এই দুটি ঘটনা আরম্ভেই উল্লেখ করবার উদ্দেশ্য হচ্ছে যে, এখানে নাচগানকে এরা যে কতখানি একান্ত আবশ্যক ব’লে গ্রহণ করেছে এদের জীবনে, তা দেখানো। ছবি আঁকায়, মূৰ্ত্তি গড়ায়, মন্দির-রচনায় সৰ্ব্বত্রই দেখা যায় সেই আদর্শ। প্রত্যেকটি শিল্প এখনও এদেশে জীবন্ত । হয়ত অনেকে বলবেন, আজকাল শিল্পধারার অনেক অবনতি হয়েছে। তাহলেও এই দরিদ্র পল্লীবাসীদের চিত্তে যে সরসতা আছে, অন্য কোন দেশের দরিদ্র অধিবাসীদের ভিতর তা আছে কিনা জানি না । নাচ বাজনা এদেশের সকলেরই আনন্দের বস্তু—এ কথা আরম্ভেই বলেছি। প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে আরম্ভ ক’রে মাঝরাত পৰ্য্যন্ত প্রায় প্রত্যেক গ্রামেই শুনতে পাওয়া যাবে গামেলান-সঙ্গীত। বিদেশীরা শুনে হয়ত ভাববে, বোধ হয় কোথাও কোন বিশেষ উংসবের আয়োজনে গানবাজনা বা নাচ হচ্ছে । কিন্তু সব ক্ষেত্রে তা নয় ; হয়ত দেখা যাবে গ্রামের মৃত্যশালায় বা সাধারণের কোনো সম্মিলন-স্থলে আমাদের দেশের চণ্ডী-মণ্ডপের মত গ্রামের বালক ও যুবকেরা আপন মনে গামেলান-সঙ্গীত অভ্যাস করছে, না-হয় নাচ অভ্যাস চলেছে । এখানে বলা প্রয়োজন প্রত্যেক গ্রামেই একটি একত্র হবার স্থান গ্রামবাসীরা সকলে মিলে তৈরি করে। এটি