পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SoB স্বাধীন মতুয্য ও স্বাধীন জগতে বাস করিতে সমর্থ হইবে। ঐ ভবিষ্যৎটা কথন আসিবে আমরা তাহাই জানিতে চাই । এখন যাহারা স্বাধীন, তাহাদের অমুভূতি এখনই অনেকটা ঐ প্রকার। নিশ্চিত বর্তমান ও অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মধ্যে এই প্রভেদ বোধ হয় লর্ড স্নেল তুচ্ছ মনে করেন। ভারতসচিব লর্ড জেটল্যাণ্ড লর্ড সভায় ঐ দিন অন্যান্য কথার মধ্যে বলেন :– “লৰ্ড স্নেল বলিয়াছেন, ইহা স্বাভাবিক, যদিও ইহা সময়ের অমুপযোগী যে, কংগ্রেসের নেতারা, তাহার। বর্তমানে যে প্রকার স্বায়ত্তশাসনের অধিকারী, তাহা অপেক্ষা পূর্ণতরঙ্গ রূপের স্বশাসনের প্রতি লক্ষ্যের পুনর্ঘোযণা এই স্বযোগে করিয়াছেন । ইহা যে স্বাভাবিক, তাঙ্গ আমি পূর্ণ উপলব্ধি করি । কংগ্রেস প্রচেষ্টার অনেক নেতাকে আমি জানি । তাহারা জলস্তু দেশ-হিতৈষণা দ্বারা অনুপ্রাণিত মানুষ ; তবে, আমি মনে করি, র্তাহারা নক্ষত্রের দিকে চক্ষু উত্তোলন কবিয়া থাকিবার সময় কখন কখন তঁtহাদের পায়ের নীচের মাটির বtধtfবন্ধুের কথা কিঞ্চিং ভুলিয়া যান। কিন্তু যদিও আমি ইহা স্বীকার করিতে প্রস্তুত যে, তাহাদের দাবীগুলি জোর করিয়া বলিতে এই সংকট সময়ের সুযোগ গ্রহণ র্তাহাদের পক্ষে স্বাভাবিক হইতে পারে, তথাপি আমার মনের এই ভাব প্রকাশ না করিয়া থাকিতে পারিতেছি না যে, তাহারা যে তাহাদের দাবী পুনর্ব্যক্ত করিবার নিমিত্ত এই সময়টা নিৰ্বাচন করিয়াছেন, ইন্স দুর্ভাগোর বিষয় । একাধিক কারণে আমি ইহা বলিতেছি । আমি মনে করি, ত্রিটিশ জtfত কোন বিশেষ সময়ের উপযোগী ও সম্মানকর (“অনারেবল") ব্যবহারের গুণগ্রাহী।” তাহা গত যুদ্ধের পর ভারতের প্রতি ব্রিটেনের ব্যবহারে প্রমাণিত হইয়াছে। এখানে ভারতসচিব কি ইঙ্গিত করিয়াছেন যে, এখন পূর্ণ স্বায়ত্তশাসনের দাবী করা ভারতবর্ষের পক্ষে “ডিস্-অনারেবল” হইয়াছে ? লর্ড জেটল্যাণ্ড আরও বলেন :– "জীবন-মরণ সংগ্ৰামকালে যাছাতে ব্রিটিশ জাতি বিব্রত হয় সেরূপ দাবী উপস্থিত করায় তাহদের মন রুষ্ট ও অসন্তুষ্ট থাকিলে তাহার। যথাসময়ে ভারতবর্ষের দাবীতে ততটা কান দিবে না, যতটা বিপরীত অবস্থায় ( অর্থাৎ এখন দাবী উপস্থিত না করিলে ) দিবে।” লর্ড জেটল্যাণ্ড এইরূপ আরও অনেক কথা বলেন। যুদ্ধের অবসানে ভারত পূর্ণ স্বরাজ পাইবে, এইরূপ ঘোষণা প্রবাসী

  • কংগ্রেস-নেতার বর্তমান অপেক্ষা “পূর্ণতর” স্বায়ত্তশাসন চান না, "পূর্ণ স্বরাজ” বা স্বাধীনতা চান ।

აvb8\& করিতে ব্রিটেনকে কেন বিব্রত হইতে হইবে, তাহা আমাদের বুদ্ধির অগোচর । এইরূপ বক্তৃতা দ্বারা ভারতসচিব ভারতীয়দিগকে স্মরণ করাইয়া দিয়াছেন যে, ব্রিটিশ জাতি ভারতবর্ষের ভাগ্যবিধাতা, অতএব সেই জাতিকে চটান উচিত নয় ; তাহাদিগকে তুষ্ট রাখিতে পারিলে তাহারা অনুগ্রহ করিয়া ভারতবর্ষকে স্বায়ত্তশাসন দিতে পারেন । এই মুরের কথা ইহার আগেও অনেক ব্রিটিশ রাজনীতিক বলিয়াছেন । ইহাতে তাহদের স্বশক্তিবোধ প্রকাশ পায় বটে, কিন্তু ভারতীয়দের আস্তরিক সহযোগিতা লাভ করিতে হইলে এরূপ প্রভূজনস্থলভ ভাষার পরিহার কৰ্ত্তব্য । এরূপ ভাষা দ্বারা ভারতবাসীরা আপনাদিগকে সম্মানিত বোধ করে না । ভারত-সচিবের কথার মহাত্মা গান্ধীর জবাব সুতরাং ভারতবর্ষের আত্মসম্মানবোধের প্রতীক ও মুখপাত্ররূপে মহাত্মা গান্ধী যে বিন্দুমাত্রও বিলম্ব না করিয়া ভারতসচিবের কথার নিম্নলিখিত রূপ জবাব দিয়াছেন, তাহা মানব স্বাধীনতার প্রকৃত প্রেমিক ইংরেজরাও, আশা করি, স্বাভাবিকই মনে করিবেন :– “লৰ্ড সভায় ভাবতীয় ব্যাপারসমূহ সম্বন্ধীয় তর্ক-বিতর্কের রয়টার-প্রেরিত সংক্ষিপ্ত বৃত্তাস্ত আমাকে দেখান হইয়াছে। এ সময়ে আমি চুপ করিয়া থাকিলে হয়ত তাই দ্বারা ভারতবর্ষ ও ব্রিটেন উভয়েরই সেবার বিপরীত কাজ করা ( অর্থাৎ ক্ষতি করা ) হইবে । আমি এই মত পোষণ করি ষে, কংগ্রেস দেশের সব ধৰ্ম্মসম্প্রদায় জাতি ও শ্রেণীর প্রতিষ্ঠান । কাহাকেও বিরক্ত করিবার অভিপ্রায় না রাখিয়া, কংগ্রেস সম্বন্ধে ইহ। বলা যাইতে পারে যে, এই প্রতিষ্ঠান অৰ্দ্ধ শতাব্দীর অধিক কাল প্রতিদ্বন্দ্বীবিহীন ভাবে শ্রেণী ও ধৰ্ম্মসম্প্রদায়নির্বিশেষে ভারতবর্যের জনসাধারণের প্রতিনিধিত্ব করিয়াছে । মুসলমানদের অথবা দেশী রাজ্যের প্রজাদের স্বার্থের বিরোধী ইহার কোনই স্বার্থ নাই । সম্প্রতি কয়েক বৎসরের কার্য্য দ্বারা অভ্রান্তভাবে ইহা প্রমাণিত হইয়াছে যে, কংগ্রেস নিঃসন্দেহ দেশী রাজ্যের লোকদের স্বার্থরক্ষণশীল প্রতিনিধি । এই প্রতিষ্ঠানই ব্রিটিশ গবষ্মেণ্টের অভিপ্রায়ের স্ব-স্পষ্ট বর্ণনা চাহিয়াছে। যদি ব্রিটিশ জাতি বাস্তবিক সকলেরই স্বাধীনতার জন্ত লড়িতেছে, তাহা হইলে তাতাদের প্রতিনিধিদিগকে বত দূর সম্ভব স্পষ্ট ভাষায় ইহা বলিতে হইবে যে, ভারতবর্ষের স্বাধীনতা অবশ্বাস্তাবারুপে এই যুদ্ধের উদ্বেপ্তের অন্তর্গত। এই ভারতীয় স্বাধীনতার উপাদনভূত বস্তু কেবল ভারতীয়েরা এবং একমাত্র তাহারাই নিধর্ণরণ করিতে পারে। লর্ড জেটল্যাও যে অভিযোগ করিয়াছেন—যদিও মোলায়েম ভাষায় করিয়াছেন—যে, এই সঙ্কট