পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কাৰ্ত্তিক প্রবাসীর পাঠকদিগের মনে থাকিতে পারে, আমরা কয়েক মাস পূৰ্ব্বে একাধিক বার, কলিকাতার যে সকল নাগরিকের মফঃসলে, বিশেষতঃ গ্রামে ঘরবাড়ী আছে, তাহাদিগকে তাহ বাসোপযোগী করিয়া রাখিতে অনুরোধ করিয়াছি। কারণ, কলিকাতা আকাশ হইতে আক্রান্ত হইতে পারে, এই আশঙ্কা ইয়োরোপীয় যুদ্ধ আরম্ভ হইবার পূৰ্ব্বেও, চীন-জাপান যুদ্ধের জন্য ছিল, এখনও আছে। বিঠলভাই পটেলের উইল স্বগীয় বিঠলভাই পটেল জেনিভায় দেহত্যাগ করেন। তাহার পূৰ্ব্বে তিনি তাহার সমস্ত সম্পত্তি সম্বন্ধে উইল করিয়া যান । তিনি নিঃসন্ ন ছিলেন। উইলে যাহাকে যাহা দিবার তাহ দিয়া বাকী লক্ষাধিক টাকা শ্ৰযুক্ত স্বভাষচন্দ্র বস্তুকে দিতে বলিয়া যান। এইরূপ ইচ্ছা প্রকাশ করেন যে, স্বভাষবাবু ঐ টাকা ভারতবর্ষেব রাষ্ট্রনৈতিক উন্নয়নের, বিশেষত: বিদেশে তদৰ্থ প্রচারের, নিমিত্ত ব্যয় করিবেন। উইলের ট্রষ্টগণ এই আপত্তি তুলেন যে, তাহার স্বভাৰ্যবাবুকে টাকা দিবার অংশটা আইনসংগত নহে । স্বভাষবাবু টাকাটা পাইবার নিমিত্ত বোম্বাই হাইকোর্টে মালিশ করেন। জঙ্গ তাহার বিরুদ্ধে রায় দেন। তিনি আপীল করেন। তাহার ফলও পূর্ববং হইয়াছে। আইনের কূটব্যাখ্যা অনুসারে হাইকোর্টের দুটা রায় ঠিক হইয়াছে কিনা বলিতে পারি না । কিন্তু সোজা বুদ্ধিতে মনে হয়, ঠিক হয় নাই। জজের পোলিটিক্যাল আপলিফটের (রাষ্ট্রনৈতিক উন্নয়নের ) ঠিক মানে নাকি বুঝিতে পারেন নাই । ব্রিটিশ পালেমেণ্টও, বৰ্ত্তমান ভারতশাসন-আইনের খসড়ার আলোচনার সময়ে, অনেক নামজাদ সদস্য ডোমীনিয়ন স্টেটস কথা দুটির স্পষ্ট সংজ্ঞা হয় না বলিয়াই নাকি ঐ জিনিষটি ভারতবর্ষকে দিবার অঙ্গীকার আইনটার অন্তভূক্ত করিতে পারেন নাই ! ইংরেজী যাহাদের মাতৃভাষা, ইংরেজী কথার মানে লইয়া তাহাদের সহিত তর্ক করা যে একেবারেই চলে না, এমন নয় ; কিন্তু তর্ক যাহাদের সঙ্গে করিব, শেষ সিদ্ধান্ত করিবার ভারও যদি র্তাহাদেরই উপর থাকে, তাঙ্গ হইলে তর্ক করিতে উৎসাহ বিবিধ প্রসঙ্গ—বিহারের বাঙালী-সমিতির গঠনমুলক কাৰ্য্যতালিকা S}} না হইবারই কথা। আমেরিকার যুক্তরাষ্ট্রের ভাষাও ইংরেজী, এবং তাহার লোকসংখ্যা ব্রিটেনের প্রায় তিনগুণ। সকলের চেয়ে বিখ্যাত ইংরেজী আভিধানিক ওএবস্টার আমেরিকান। ইংরেজী ভাষার শব্দাবলীর অর্থ সম্বন্ধে বিশেষজ্ঞ কোন অরাজনৈতিক আমেরিকানকে মধ্যস্থ মানিয়া তর্কের ব্যবস্থা হইলে বরং তর্ক করিতে প্রবৃত্তি হয়। যাহা হউক, এ সব অবস্তির কথা। কাজের কথায় আসা যাক । বিঠলভাই পটেল মহাশয়ের উইলে যে স্বভাষবাবুকে টাকা দিবার কথা আছে, মানিয়া লওয়া যাক যে, আইনের তর্কে তাহার কোন মূল্য নাই। কিন্তু ইহা কি কেহ অস্বীকার করিতে পারেন যে, পটেল মহাশয় তাহার সম্পত্তির লক্ষাধিক টাকা ভারতবর্ষের রাষ্ট্রনৈতিক কল্যাণের নিমিত্ত ব্যয়িত হউক এবং ভারতের কল্যাণার্থ ভারতবর্ষের বাহিরে প্রচার-কাৰ্য্য হউক, এই ইচ্ছা তিনি প্রকাশ করিয়া গিয়াছিলেন ? মৃভাষবাবুর দ্বারা এই কাৰ্য্য হইবে বলিয়া তিনি বিশ্বাস করিতেন । কিন্তু যদি অন্য কোন ব্যক্তি বা ব্যক্তিসমষ্টির দ্বারা এই কাজ হয়, তাহা হইলেও তাহার ইচ্ছার সার অংশ অসুস্থত হইবে । অতএব, স্বভাষবাবু যদি প্রিভি কৌন্সিলে আপীল না করেন, কিম্বা আপীল করিলেও যদি তিনি হারিয়া যান, তাহ হইলে বিঠলভাই পটেল মহাশয়ের উত্তরাধিকারীদিগের তাহার ইচ্ছ। অনুসারে কাজের ব্যবস্থা করা একান্ত কৰ্ত্তব্য । র্তাহার ভাই সর্দার বল্লভভাই পটেল ত সুপ্রসিদ্ধ কংগ্রেসনেতা। তিনি টাকাটার স্বব্যয়ের ব্যবস্থা না করিলে প্রত্যবায়গ্ৰস্ত ও অপযশের ভাগ হইবেন । বিহারের বাঙালী-সমিতির “গঠনমূলক কার্য্যতালিকা” গত ৮ই এপ্রিল জামসেদপুরে বিহারের বাঙালীসমিতির যে অধিবেশন হয়, তাহাতে যে-সকল সিদ্ধান্ত হয় তাহার মধ্যে একটি অনুসারে ঐযুক্ত নগেন্দ্রনাথ রক্ষিত ও রায় বাহাদুর হরিপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায়কে, বিহারে বাঙালীরা যাহাতে সম্মামের সহিত জীবিক নির্বাহ করিতে পারে, এইরূপ একটি কাৰ্য্যতালিকা বা পরিকল্পনা প্রস্তুত