পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>>8 প্রবাসী SNO89 বৰ্ত্তমান কংগ্রেস গবর্ণমেণ্টকে । এই গবর্ণমেণ্ট না হয় আজ বছর খানেক হল হয়েছে, হয়ত কংগ্রেস থেকে হিন্দুস্থানী প্রচলন প্রচেষ্টা বা শিক্ষার বাহনরূপে হিন্দুস্থানী ভাষাকে গ্রহণ করা এই অবস্থার বড় ফুটি কারণ। কিন্তু তাই বলে কি এর জন্ত আমাদের বিন্দুমাত্রও দোষ নেই বলতে হবে বা বলতে পারা যায় ? আমার তো মনে হয় যে বেহারে বাংলা ভাষার যদি স্থরবস্থা হয়ে থাকে, তবে তার জন্য দায়ী আমরাই । আমাদের দায়িত্ব নানান রকম । প্রথমতঃ আমরা বেহারে বাংলা ভাষার প্রচারের কোনও চেষ্টা করি নি। খাস বেহারের কথা ছেড়ে দি—পূর্ণিয় অঞ্চল, ভাগলপুরের রাঢ়ীদের মধ্যে বা মানভূম প্রভৃতি স্থানে আমরা বাংলা ভাষার প্রচারের কি ব্যবস্থা করেছি ? অথচ এই সব অঞ্চল যে বাঙালীপ্রধান অঞ্চল, এই নিয়ে আমরা বড়াই করি । তবুও এদিককার নিরক্ষর বাঙালীদের আমরা সাক্ষর ক’রে তুলতে চেষ্টা করি নি । আবার খাস বেহারের মধ্যে বাংলা ভাষার প্রচারচেষ্টা হয়ত অপরাধ বলে গণ্য হ’তে পারে, কিন্তু পাটনা বিশ্ববিদ্যালয়ে যাতে বাংলা ভাষা বজায় থাকে, বা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাঙালী ছেলেরাও যাতে ভাল করে বাংলা পড়ে, তারই বা কি চেষ্ট। আমরা করেছি ! দ্বিতীয়তঃ, প্রচার তো দূরের কথা, আমরা যা আছে তাই বজায় রাখবার কোনই চেষ্টা কবি নি বলতে হয় । সেনসাসের মারপ্যাচে যে বাঙালীদের ব{ বাংলাভাষাভাষীদের সংখ্যা কত কমিয়ে ফেলা হচ্ছে তার কোনও প্রতিবাদ আমরা করেছি কি ? বা ভবিষ্যতে তার প্রতিরোধ করার ব্যবস্থা আমরা করছি কি ? বাংলার জায়গায় যে বাঙালী ছেলেদের হিনী শিখতে হচ্ছে বা ভবিষ্যতেও হবে, সে সম্বন্ধে আমরা কি ব্যবস্থা করছি ? মানভূমে হিন্দী প্রচলনের বিরাট আন্দোলন চলছে। চলুক তাতে ক্ষতি নাই । কারণ বাংলা ভাষার যদি নিজস্ব কোন ও জোর থাকে, তবে ত টিকে থাকবেই । কিন্তু আমি এই কথাটিই জিজ্ঞাসা করতে চাই যে, হিন্দী প্রচলনকে বাধা দেবার চেষ্টা না করেও আমরা বাংলা প্রচলন ( এবং সেটা বাঙালীদের মধ্যে ! ) করতে পারি তো ? কিন্তু সেটা করছি কি ? প্রয়াগ বঙ্গসাহিত্য সম্মেলনে গৃহীত কয়েকটি প্রস্তাব শ্ৰীযুক্ত উপেন্দ্রনাথ গঙ্গোপাধ্যায়ের সভাপতিত্বে সম্প্রতি প্রয়াগ বঙ্গসাহিত্য সম্মেলনের অধিবেশন সমারোহ ও সাফল্যের সহিত হইয়াছিল । ইহাতে বহু জনসমাগম হইয়াছিল । উদ্বোধক, সভাপতি, ও অভ্যর্থনা-সমিতির সভাপতির অভিভাষণগুলি ব্যতীত কয়েকটি প্রবন্ধ ও কবিতা পঠিত হয়, ম্যাজিক লণ্ঠন সহযোগে বৈজ্ঞানিক বক্তৃত হয়, এবং তদ্ভিন্ন নৃত্যগীতাদি দ্বারা সমাগত পুরুষ ও মহিলাদিগের চিত্তবিনোদন করা হয় । সভায় সৰ্ব্বসম্মতিক্রমে নিম্নলিখিত প্রস্তাবগুলি গৃহীত হইয়াছিল। “যুক্ত প্রদেশের গবর্ণমেণ্ট সম্প্রতি সিদ্ধান্ত করিয়াছেন যে, স্কুলের ছাত্র এবং ছাত্ৰাদিগকে উর্দ, এবং হিন্দী ভাষার সাহায্যে প্রশ্নপত্রের উত্তর লিখিতে হইবে ; স্থান এবং অবস্থা বিশেষে অবশ্য ইংরাজী ভাষার সাহায্যে প্রশ্নপত্রের উত্তর লিখিবার অমুমতি দেওয়া হইবে । যুক্তপ্রদেশে বাঙ্গালীর সংখ্যালঘিষ্ঠ । সংখ্যালঘিষ্ঠের ভাষা এবং সংস্কৃতির উপর হস্তক্ষেপ না হয় ইহা কংগ্রেসের নীতি । তদনুসারে এই সম্মেলন দাবী করিতেছে যে, যুক্তপ্রদেশের স্কুলসমূহের বাঙ্গালী ছাত্র এবং ছাত্রীদিগের পক্ষে তাহাদের মাতৃভাষা বাঙ্গলা অবশ্যশিক্ষণীয় বিষয় করা হউক এবং সেই ভাষার সাহায্যে তাতাদের পরীক্ষা গৃহীত হউক এবং যুক্ত প্রদেশের গবর্ণমেণ্ট যদি কোন শাসন-সংক্রাস্ত কারণবশতঃ ইহা প্রতিপালনে অক্ষম হন, তাহা হইলে বাঙ্গালী ছাত্র এবং ছাত্রীদিগকে হিমী, উর্দু অথবা ইংরাজী---এই তিন ভাসার মধ্যে যে-কোন ভাষার সাহায্যে উত্তর লিখিবার অনুমতি দেওয়া হউক ৷” “এলাহাষাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলার পণ্ডিত আমর মাথ বা মহাশয় এলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গল ভাষা শিক্ষা দিবার ব্যবস্থা করায় এই সম্মেলন ঠাহার কাৰ্য্যের প্রশংসা করিতেছে এবং তঁহাকে ধষ্ঠ্যবাদ জ্ঞাপন করিতেছে।” “এলাহাবাদ বহু বিশিষ্ট্র ও স্বনামধন্ত বাঙ্গালীর জননী ও কৰ্ম্মক্ষেত্র । শুধু এই দেশে নয়—দেশদেশাস্তবে তাদের অনেকেরই নাম পরিচিত –ষ্টহীদেরই উদাম ও পরিশ্রমে এলাহাবাদ নব রূপ প্রাপ্ত হইয়াছে ; কিন্তু দুঃখের বিষয়ু এলাহাবাদ মিউনিসিপ্যালিটি ইতাদের নাম স্থায়ী করিবার কোন চেষ্টা করেন নাই । এই সম্মেলন প্রস্তাব করিতেছে যে উক্ত মিউনিসিপ্যালিটি কয়েকটি রাস্ত বা পার্কের নাম ষ্টাঙ্গাদের নামানুসারে করিয়া ঠাঙ্গাদের স্মৃতি জাগরিত রাখুন। যথা – মেজর বামনদাস বসু, স্যার প্রমদাচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়, মহামহোপাধ্যায় আদিত্যরাম ভট্টাচার্য্য, ডাঃ সতীশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যার, তুর্গাচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়, বিদ্যার্ণব শ্রীশচন্দ্র বসু প্রভৃতি । উপরের নামগুলির পরে ‘প্রভৃতি’ আছে । এই ‘প্রভৃতি’ দ্বারা কাহার কাহার নাম স্বচিত হইয়াছে, বলা যায় না। আমরা এমন তিন জন পরলোকগত বাঙালীর নাম উল্লেখ করিতেছি, যাহাঁদের নাম অতুসারে এলাহাদের কোন কোন রাস্ত বা পার্কের নাম রাখা যাইতে পারে। এলাহাবাদের মিওর সেণ্ট অ্যাল কলেজ যুক্তপ্রদেশের অন্যতম প্রধান কলেজ । উহা যদিও সরকারী কলেজ,