পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কীৰ্ত্তিক A কর্তৃপক্ষ অবগত থাকা সত্ত্বেও সে ব্যক্তির বিরুদ্ধে সরকারপক্ষ হইতে কোন মোকদ্দমা বা অন্য ব্যবস্থা হয় নাই, আমাদিগকে প্রদত্ত কাগজগুলিতে ইহা লিখিত আছে । তাহাতে নানাবিধ ভয়প্রদর্শনের ও তদনুরূপ অত্যাচারের বর্ণনাও আছে। ব্যবস্থাপক সভার উল্লিখিত মুসলমান সদস্য প্রকাগু বক্তৃতায় ইহা বলিয়াছে বলিয়া কাগজগুলিতে দেখিলাম যে, তাহার প্রভাবে নোয়াখালির এক জন হিন্দু জেল-ম্যাজিষ্টেটুকে বদলী হইয়া রাইটাস বিল্ডিঙে কেরানী ( অর্থাৎ সেক্রেটরী ) হইতে হইয়াছে ! ইহা কি সত্য ? এই সমুদ্রয়ের সত্যাসত্য নিৰ্দ্ধারণের নিমিত্ত প্রকাশ জন্য কমিশন নিযুক্ত হওয়া একাস্ত আবশ্যক । দৈনিক কাগজে দেখিলাম ৬াঃ শামা প্রসাদ মুখার্জি প্রমুখ হিন্দু নেতাদের কুমিল্লা সফর কালে তথায় যে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে-যাহার মধ্যে কতিপযু মুসলমান ছাত্রও জড়িত আছে, ঐ সম্পর্কে তদস্তের জন্য বাঙ্গলার প্রধান মগ্নী মিঃ ফজলুল হক ২রা অক্টোবর রাত্রিতে কুমিল্লা রওন। হইয়। গিয়াছেন । তদন্তের -의, f어 ইহা সত্য হইলে, বঙ্গের প্রধান মন্ত্রী কিসের তদন্ত করিতে গিয়াছেন ? হিন্দু নেতাদের এক জন সঙ্গী যে আহত হইয়াছিলেন, সেই বিষয়ের ? না, শাস্থি ভঙ্গকারী মুসলমান জনতাতে যে পুলিস তাড়া করিয়াছিল, তাহার } নোয়াখালির সব ব্যাপার কুমিল্লার ঘটনাটার চেয়ে সহস্ৰগুণ অধিক সঙ্গীন ও গুরুতর ; অতএব তাহার তদন্ত অবিলম্বে হওয়া আবখ্যক । অন্যান্ত মন্ত্রীরাও এই বিষয়টিতে মনোযোগ করিলে ভাল হয় । অবশু কুমিল্লার ঘটনাটার জন্য দোষী ব্যক্তিদের সম্বন্ধেও সমুচিত ব্যবস্থা হওয়া আবখাক । গান্ধী জয়ন্তী গত ২রা অক্টোবর মহাত্মা গান্ধীর বয়স ৭০ বৎসর পূর্ণ হইয়াছে এবং তিনি একাত্তরে পা দিয়াছেন। তিনি স্বস্থ দেহমনে আরও দীর্ঘজীবী হউন, এই কামনা করিতেছি । র্তাহার সপ্ততিপূৰ্ত্তি উপলক্ষ্যে তাহার সম্বন্ধে লিখিত একখালি ইংরেজী বহি তাহাকে উপহার দেওয়া হইয়াছে । বিবিধ প্রসঙ্গ—গান্ধী জয়ন্তী సి ইহার সম্পাদক সৰ্ব সৰ্ব্বপল্লী রাধাকৃষ্ণন এবং প্রকাশক লগুনের য়্যালেন এণ্ড আমুইন ; মূল্য সাড়ে সাত শিলিং। ইহাতে পৃথিবীর বহু বিখ্যাত এবং অপেক্ষাকৃত অবিখ্যাত পুরুষ ও মহিলার তাহার সম্বন্ধে বড় ও ছোট অনেক রচনা একত্র করা হইয়াছে। তাহাকে কত মানুষ কত দিক হইতে দেখিয়াছেন, এই বহিখানি পড়িলে বুঝা যায়ু । মহাত্মা গান্ধী বৰ্ত্তমান সময়ে পুথিবীর অন্যতম অসাধারণ পুরুষ, তাহাতে সন্দেহ নাই। বাক্তিগতভাবে অহিংস আচরণ করিতে উপদেশ দিয়াছেন এবং স্বয়ং তদনুযায়ী আচরণ করিয়াছেন অতীতের মহাবীর বুদ্ধ শ্রীচৈতন্য প্রভৃতি কতিপয় মহাপুরুধ । কিন্তু রাষ্ট্রনীতিক্ষেত্রে সমষ্টিগত ভাবে সমুদয় জাতিকে অহিংস থাকিতে বর্তমানে মহাত্মা গান্ধী উপদেশ দিয়াছেন । তিনি দেশের স্বাধীনতা রক্ষা কিংবা উদ্ধারের জন্য ও যুদ্ধের সমর্থন করেন না ; মনে করেন, উভয়ই অহিংস সত্যা গ্রহ দ্বারা সাধিত হইতে পারে । সাধিত যদি না হয়, তাহা হইলেও তিনি স্বাধীনতা অপেক্ষ অহিংসতাকে অধিকতর মূল্যবান মনে করেন । ইহা র্তাহার উপদেশের বিশেষত্ব। অহিংস উপায়ে কোন দেশের স্বাধীনতার রক্ষা কিম্বা উদ্ধার হইতে পারে, ইহা এখনও বাস্তব দৃষ্টান্ত দ্বারা প্রমাণিত হয় নাই । সুতরাং মহাত্মাজীর উপদিষ্ট অহিংস সত্যা গ্রহ থিওরিতে দার্শনিক উইলিয়ম জেমসের বাঞ্ছিত যুদ্ধের পরিবর্কে অবলম্বনীয় নৈতিক উপায় হক্টলেও, বাস্তবিক সেরূপ উপায় বটে কিনা, এখনও বলা যায় না। কিন্তু মহাত্মাজীর বিশ্বাসের তাহাতে কিছু ক্ষীণত হয় না ; কারণ, যদি হিংসার দ্বারা স্বাধীনতা রাথিতে বা পুনরুদ্ধার করিতে হয়, তাহা হইলে তিনি বরং স্বাধীনতাহীন থাকিবেন, তথাপি অহিংসা ত্যাগ করিবেন ন। তিনি অহিংসাকে এত বড় মনে করেন যে, নারীর সতীত্ব রক্ষণকল্পেও আততায়ীর প্রতি সশস্ত্র বা অন্যবিধ বলপ্রয়োগ তিনি বৈধ মনে করেন না। তিনি ব্যক্তিগত ব্যবহারে এবং সমষ্টিগত সমুদয় বাপারে সত্য ভাষণ ও সত্য আচরণ একান্ত আবখ্যক মনে করেন । স্ত্রী-পুরুষের সম্বন্ধকে গান্ধীজী অপকৃষ্ট মনে করেন, তাহার মধ্যে সাত্ত্বিক বা শ্রেষ্ঠ তিনি কিছু দেখেন না ।