পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১৪৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কাৰ্ত্তিক হইয়া থাকে । ১৯৩১ সালে শেষ সেন্সস হইয়াছিল । ১৯৪১-এ আবার গণনা হইবে । তাহার ব্যবস্থা করিবার নিমিত্ত ভারতীয় ব্যবস্থাপক সভায় একটি আইন পাস হইয়া গিয়াছে। সভ্য দেশসকলে সেন্সস রিপোর্টে শুধু যে দেশের প্রদেশের জেলার শহরের ও গ্রামের মানুষের ংখ্যা লেখা থাকে, তাহা নহে ; অন্য নানাবিধ তথ্যও তাহাতে থাকে । সেন্সস রিপোর্টে যে-সকল তথ্য লিখিতে থাকে, তাহ প্রামাণিক ও নিভূল বলিয়া সভ্য দেশসমূহে বিবেচিত হইয়া থাকে। এই সকল তথ্য সাধারণতঃ বিশেষ যত্বপূর্বক সংগৃহীত হইয়৷ থাকে। কিন্তু দুঃপের বিষয় ভারতবর্ষে সকল স্থলে তাত৷ না-হওয়ায় এদেশের অন্ততঃ কোন কোন রিপোর্টে অদ্ভূত ভুল থাকে । ১৯৪১ সালের সেন্সস সম্বন্ধীয় আইনের খসড়া যখন ভারতবর্ষীয় ব্যবস্থাপক সভায় আলোচিত হইতেছিল, তখন ডক্টর প্রমথনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ইণ্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল জনালে শ্রযুক্ত যতীন্দ্রমোহন দত্ত কর্তৃক উল্লিখিত বাংলা দেশের ১৯৩১ সালের সেন্সস রিপোর্টের এইরূপ একটি অদ্ভূত ভুলের কথা বলেন। তাহাতে আছে যে, কিশোরগঞ্জ মহকুমায় ইংরেজী লিখনপঠনক্ষম মাস্থ্য একটিও নাই ! অথচ সেখানে দুটি উচ্চ ইংরেজী বিদ্যালয় আছে, এক জন সব-ডিবিজন্তাল ম্যাজিষ্ট্রেট আছেন, বিচার ও শাসন বিভাগের একাধিক হাকিম আছেন, মিউনিসিপালিটির চেয়ারম্যান আছেন। সেন্সস রিপোর্টটি অনুসারে r,লে ইহার কেহই ইংরেজী লিখিতে পড়িতে জানিতেন না ! ও সভ্যের ᎼᎽᏬᎩ বাংলা দেশে হিন্দুদের মধ্যে সাধারণতঃ এই ধ: , প্রবল যে, ১৯৩১ সালের সেন্সসে বঙ্গে হিন্দুদের যে সংখ্যা দেখান হইয়াছে তাহ প্রকৃত সংখ্যা অপেক্ষা অনেক কম । এইরূপ, ষিহার প্রদেশে বাঙালীদের সংখ্যা কম দেখান হইয়াছে বলিয়াও বাঙালীদের ধারণা । এবম্বিধ নানা কারণে ১৯৪১ সালের সেন্সসে যাহাতে কোন ভুল না থাকে, তাহার ব্যবস্থা আগে হইতেই হওয়া আবশ্যক। তজ্জন্য ডক্টর প্রমথনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রস্তাব করেন যে, সেন্সস বিলটি সিলেক্ট কৰ্মীটিতে প্রেরণ করা বিবিধ প্রসঙ্গ—১৯৪১ সালের লোকসংখ্যা গণনার আইন ১২৩ হউক। কিন্তু গবন্মেণ্ট তাহা না করিয়া বিলটিকে আইনে পরিণত করিয়াছেন । তাহাতে উঠার মধ্যে খুং থাকিয়া গিয়াছে। কোন কোন প্রাদেশিক মন্ত্রিমণ্ডল আগামী সেন্সসের কোন কোন সংখ্যা তাহাদের মনের মতন হইলে খুনী হইবেন মনে করিবার কারণ আছে। যেমন, বঙ্গদেশে গত সেন্সসে হিন্দুদের চেয়ে মুসলমানদের সংখ্যা যত বেশী ছিল দেখান হইয়াছে, আগামী সেন্সসে তার চেয়েও বেশী পার্থক্য—অন্ততঃ তাহার সমান পার্থক্য—প্রদর্শিত হইলে বঙ্গের মুসলমানপ্রধান মন্ত্রিমণ্ডল খুশী হইতে পারেন। কেননা, তস্থার বঙ্গে মুসলমানদিগের বাবস্থাপক সভায় বৰ্ত্তমান-সংখ্যক বা তদপেক্ষা ও অধিকসংখ্যক প্রতিনিধি প্রাপ্তির দাবী সমর্থিত হইতে পরিবে । সেইরূপ, বিহার প্রদেশে যদি বাংলাভাষীর সংখ্যা আগেকার চেয়ে কম প্রদর্শিত হয়, তাহা তইলে বিহারী মন্ত্রীরা আহলাদিত হইতে পারেন । কারণ, বিহারপ্রদেশে বাঙালীদের সংখ্যা যত কম দৃষ্ট হইবে, তাহার কোন কোন অঞ্চল বঙ্গের ফিরিয়া পাইবার সম্ভাবনা তত কমিবে । সেই জন্য সেন্সসের নিয়ন্ত্রক সমুদয় কৰ্ম্মচারীর নিয়োগ ভারত-গবন্মেন্টের দ্বারা হওয়া বাঞ্ছনীয় এবং সেন্সস-ঘটিত সব ব্যাপারে প্রাদেশিক গবন্মেণ্টের ক্ষমতা যত কম থাকে ততই ভাল। কিন্তু ডক্টর প্রমথনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় তাহার বক্তৃতায় বলিয়াছিলেন এবং আমরাও ইণ্ডিয়া গেজেটে প্রকাশিত আইনটিতেও দেখিলাম যে, উহার দ্বিতীয় ধারায় েসসে ভারত-গবন্মেটি ও প্রাদেশিক গবন্মেণ্টের মধ্যে খৈwiজ্য, অর্থাৎ যেন ক্ষমতার ভাগাভাগি, করা হইয়াছে। ইহাতে ফল ভাল হইবে না। ডক্টর শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় একাধিক বক্তৃতায় বলিয়াছেন যে, বঙ্গে সৰ্ব্বত্র এক এক জন হিন্দু ও এক এক জন মুসলমান গণনাকারী একত্র কাজ করিবে, এইরূপ ব্যবস্থা হওয়া আবশ্যক । ইহাতে কিছু খরচ বাড়িবে। কিন্তু গণনার বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়াইবার ও সন্দেহের কারণ কমাইবার অন্ত উপায় দেখা যাইতেছে না | পেশা সম্বন্ধীয় তথ্য নিতুল ও অধিকতর বিস্তারিত ভাবে