পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ృ98\ు নিকট হইতে এইটির খোজই সৰ্ব্বপ্রথম পাওয়া যায়। তখনও নিউ ব্রিটেনে শ্বেতজাতির আগমন হয় নাই। শ্বেতজাতির উপনিবেশ স্থাপনের কয়েক বৎসর পরে, ১৮৭৮ খ্ৰীষ্টাব্দে “মাটুপি" আগ্নেয়গিরি হইতে ভীষণ অগ্ন্যুৎপাত হয়। মার্টুপি উচ্চতায় ৭৫ ফুট। প্রায় সমান উচ্চ, প্রতিবেশী আগ্নেয়গিরি ভলুকা" হইতেও এই সময় কিছু কিছু অগ্নিস্রাব নির্গত হয়, কিন্তু মাটুপির তুলনায় তাহ কিছুই নহে। ১৮৭৮ হইতে ১৯৩৭ পর্য্যন্ত এই আগ্নেয়গিরিগুলির জীবনের কোন লক্ষণ দেখা যায় নাই। শুধু মাটুপি উপসাগরের পূর্ব উপকূল হইতে গরম জলীয় বাষ্প ও অষ্ঠাগু গ্যাস মধ্যে মধ্যে নির্গত হইতে থাকে। ভলকানের অগ্ন্যুৎপাতের শেষ চিহ্নও ধীরে ধীরে বিলুপ্ত হইয়া বায়, এবং কুড়ি বৎসরের মধ্যেই পার্শ্ববৰ্ত্তী স্থানসমূহ ঘন-সন্নিবিষ্ট সুউচ্চ ঝাউগাছে ভরিয়া যায়। ১৯৩৭ সালের অগ্নিস্রাবের কোন লক্ষণ পূৰ্ব্ব হইতে টের পাওয়া যায় নাই । অবশ্ব অভিজ্ঞ ব্যক্তি থাকিলে জলীয় বাষ্প ও গ্যাস নির্গমনের পবিবর্তন দেখিয়া হয়ত কিছু বুঝিতে পারিতেন, কিন্তু স্থানীয় অধিবাসীরা জয়াংপাতের পূর্ব মুহূর্ত পৰ্য্যস্ত কিছু সন্দেহ করে নাই। আসন্ন অগ্ন.ংপাতের প্রথম যে প্রমাণ পাওয়া গেল, তাহ ২৮শে মে তারিখের দ্বিপ্রহরের অৰ্দ্ধমিনিটব্যাপী ভূমিকম্প । ইহার ফলে কোকোপে উপকূলে ক্ৰমান্বয়ে কয়েকটি ধল নামে, এবং “ভল্কান’ দ্বীপের দক্ষিণ-পশ্চিম অংশের মাটি স্থানে স্থানে ফাটিয়া যায়। কিন্তু রাবাউল শহরের তখন পর্য্যস্ত কোন ক্ষতি হয় নাই । কিন্তু এই ভূমিকম্পের পরেই প্রকৃতির শাস্তভাব ফিরিয়া আসে। পরদিন শনিবারের প্রত্যুধে আবার ভূমিকম্প হয়, রাবাউলে ১৯৩৭ সালের অগ্ন্যুৎপাতে একটি জাহাজকে ডাঙায় জানিয়া ফেলিয়াছে। তাহাতে অধিবাসীদের নিদ্রার ব্যাঘাত হইয়াছিল, কিন্তু বিশেষ কোন ক্ষতি হয় নাই । তাহার পরে সারাদিন ধরিয়া থাকিয়া থাকিয় তীব্র ভূমিকম্প চলিতে থাকে। বেল দশটার সময়ে ইহার তীব্ৰত অত্যন্ত বৃদ্ধি পায়, ফলে স্থির হইয়া বসিয়া লেখা অসম্ভব হইয়া উঠে। পূৰ্ব্বদিন বৈকালে ভূমিকম্পের ফলে রাবাউল পোতাশ্রয়ের জলের স্থিরতার ব্যতিক্রম দেখা যায়। ভলকান দ্বীপে জল ধীরে ধীরে নামিয়া যায় এবং সহসা সাধারণ উচ্চতা অপেক্ষা দেড় শত ফুট উপরে উঠিয়া আসে। ফলে জল যখন আবার ফিরিয়া যায়, তখন স্থানটি মাছে পূর্ণ হইয়া যায়। আদিম নিযাসীদের অনেকে মাছ কুড়াইতে গিয়া অগ্ন্যুৎপাতের ফলে মারা পড়ে। আসল অয়,ংপাত আরম্ভ হয় ২৯শে মে তারিখে শনিবার বৈকাল ৪টার কিছু পরে । ৭৫০ ফুট উচ্চ আগ্নেয়গিরির মুখ হইতে উষ্ণ বাষ্প ও বড় বড় প্রস্তরখণ্ড প্রায় ২৫••• ফুট উচ্চ পর্য্যস্ত বিপুল বেগে উথিত হয়। বাতাসের গতির পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে রাবাউল নগর চূর্ণ প্রস্তরে আবৃত হইয়া যায়। ধূলিকণার সংঘধে বিদ্যুৎ উৎপন্ন হইয়া প্রচণ্ড বিদ্যুৎঝটিকার স্বষ্টি হয়, এবং ক্রমাগত বিদ্যুৎ চমকাইতে থাকে এবং সঙ্গে সঙ্গে বজ্রপাত হয় । - শনিবার সারারান্ত্রি অগ্নিস্রাব চলিল, এবং সঙ্গে সঙ্গে তীব্র বিদ্যুৎচমক ও বজ্রগর্জনও থামিল না। ক্রমান্বয়ে ২৭ ঘণ্টা ধরিয়া এই অবস্থার এতটুকু পরিবর্তন হইল না। রবিবার দ্বিপ্রহর হইতে নিকটস্থ “টাভুরভূর” ( অথবা মাটুপি) পৰ্ব্বত হইতে অগ্নিস্রাব আরম্ভ হইল। সেই সঙ্গে টাভুরভুরের হইতে ১,১•• গজ দক্ষিণ-পূৰ্ব্ব দিকে কতকগুলি ছোট ছোট আগ্নেয় মুখের স্বষ্টি হইল। এই গুলি হইতে ক্রমাগত বিষাক্ত গ্যাস বাহির হইরা বন্ধ পশুপক্ষীর মৃত্যু ঘটায়।