পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১৬৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ঐরবীন্দ্রনাথ ঠাকুর હૈ সঙ্গে আসেনিক চাই। এই আসেনিক প্রয়োগের ভাক্তার ত্রযুক্ত অমিয়চক্স চক্রবর্তী মারাত্মক আয়োজন আজ বিশ্ব জুড়ে এমন পরিব্যাপ্ত যে, কল্যাণীয়েযু আমার কাছে মাঝে মাঝে অনুরোধ আসছে আমাদের বতর্মান অবস্থা সম্বন্ধে কিছু লিখতে হবে। অর্থাৎ একটা পথ দেখাতে হবে অসাধ্য জটিলতার মধ্য দিয়ে । আমি তো কিছুই ভেবে পাই নে। আমাদের অবস্থাটা এই – শাসনশক্তি এক দিকে মারণ-উচাটনের সমস্ত তোড়জোড় নিয়ে কড়া আইন আর লাল পাগড়ির বেড়া তুলে কেল্লা ফেদে বসে আছে। দেশকে বশীকরণের এই একমাত্র উপায়ের প্রতিই তার চরম বিশ্বাস । আর এক দিকে আছে রিক্ত হাতে নিঃস্ব পকেটে নিঃসহায়ের দল। তারা অহিংস্ৰ শক্তিকেই পরম পরিত্রাণ ব’লে আশ্রয় করবার উপদেশ পায় কিন্তু তার উপরে সম্পূর্ণ বিশ্বাস রাখতে পারছে না। কেননা এই বিশ্বাসমতে সমস্ত জগতে কাজ কিম্বা অকাজ কিছুই চলছে না। হিংস্রতার জোরেই মানুষের মতো পরমহিংস্র জীবের হাত থেকে মানুষকে বাচতে হবে এই শিক্ষার উদ্যোগ বিচিত্র উপকরণ সমেত প্রবলভাবে চার দিকে ব্যাপ্ত হয়ে পড়েছে। সকল শিক্ষা হ’তেই যারা বঞ্চিত এ শিক্ষার আয়োজনও তাদের ঘরে নেই। তারা শ্বাপদ মানুষের শিকারের দলে চিরকালের মতে গণ্য । হরিণের মতো পালাবার অধিকারও তাদের নেই, চার দিকে বেড়া দেওয়া । তারা মৃগয়াজীবী রাজন্যের রিজার্ভ ফরেস্টে বাস করে। মনে পড়ছে একটা গল্প শুনেছিলুম কোনো এক জন বিশ্বাসপরায়ণ ভলটেয়রকে জিজ্ঞাসা করেছিল, পালকেপাল ভেড়ার দলকে মন্ত্র পড়ে কি মারা যায় ? তিনি জবাব দিয়েছিলেন, মাডাম, নিশ্চয়ই যায়, কিন্তু তার সঙ্গে যারা মরছে আর যারা মারছে এই দুই পক্ষের কারো চোখে আর কোনো রাস্তাই পড়ছে না। বলিদানের রক্তে দেবতাকে তৃপ্ত করবার হিংস্র পূজাবিধি মানুষের বর্বর অবস্থা থেকে আজ পর্যন্ত চলে আসছে। মাঝে মাঝে কোনো কোনো উপদেষ্ট : বলেছেন একমাত্র প্রেমের দ্বারাই এই পূজা সার্থক হতে পারে। শুনে মামুষের মনে হয়েছে কথাটা পারমার্থিক ভাবে সত্য, ব্যাবহারিক ভাবে নয়। অর্থাৎ জীবনের যে বিভাগে আণ্ড ফললাভকে উপেক্ষা করা যেতে পারে সেই বিভাগেই তার মূল্য আছে কিন্তু ফললাভ যেখানে লক্ষ্য সেখানে দেবতার প্রসন্নতা পাবার জন্য চাই বলির রক্ত। এর মূল মনস্তত্ব হচ্ছে এই যে তীব্র কটুম্বাদ ওষুধের পরেই রোগীর বিশ্বাস সম্পূর্ণ নির্ভর করবার জোর পায়, সন্দেহ থাকে না এটা ওষুধের মতো ওষুধ বটে। তাই আজ বিশ্বব্যাপী রাষ্ট্রীয় দাওয়াইখানায় ঝাঝালো ওষুধের আমদানি বেড়েই চলেছে। শক্তিলাভের টনিক রক্তবর্ণ শক্তির উৎকট রঞ্জনে প্রকটিত । কথায় বলে সহস্ৰমারী চিকিৎসক, বিস্তর মরতে মরতে তবে চিকিৎসাবিধিতে বিশ্বাসের বদল হয়। সেই মরণের শিক্ষালর খুলে গেছে সর্বত্র। এই মরণ-শিক্ষালয়ে কোটি কোটি ছাত্রদের মারতে মারতে শিক্ষার শেষ পরিণামেমানুষ কবে ও কোথায় পৌছবে বলতে পারি নে। দেখতে পাই ক্লাস চলেইছে কিন্তু শিক্ষার শেষে গিয়ে ঠেকছে না। পুনরাবতনই হচ্চে উত্তরোত্তর বেশি জোরে । এই অবস্থায় আমাকে যখন কেউ জিজ্ঞাসা করে কোন পথে চলব, কোনো উত্তর ভেবে না পেয়ে, চুপ করে থাকি। আমরা যে সনাতন বড়ো রাস্তার ধারে জীর্ণ