পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১৯০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

$39 কহিলেন-বদমাইসট-কয় বোলে পোলাউ-মাংস ফ্যালানি মায়! যায় তো হেতে তোর কি রে ছ্যামরা ! বলিয়া টানিয়া টানিয়া হাসিতে লাগিলেন। নিভা ও স্বজিত কাঠ হইয়া দাড়াইয়া রহিল। হরিচরণ উঠিয়া কাথা-কাপড় কুড়াইয়া লইল । চাউলগুলা কুড়াইয়া লণ্ডয়া সম্ভব ছিল না, সে চেষ্টাও সে করিল না, ধীরে ধীরে বাহির হইয়া গেল। স্বাভাবিক কথাই সে না-কাদিয়া বলিতে পারিত না । অথচ এইটাই আশ্চৰ্য্য, মার খাইয়া সে কাদিল না, চক্ষু মুছিল না, এক বার পিছন ফিরিয়া ইহাদের দিকে চাহিলও না, নি:শৰে চলিয়া গেল । আর সে আসে নাই , শুনিয়া আমি কহিলাম—মামুজানেরে কিছু কইলি না ? নিভা কহিল—কমু কি। আমি কহিলাম-আমাগো ইচ্ছা আমরা খাওয়ামু হে মাৰ্বতে কেডা ? নিভা কহিল—সোমান তোমরা বেবাকটি। নিজে কি কম যাও । চুপ করিয়া রহিলাম। সেই দিনই কিন্তু আবার হরিচরণের সাক্ষাৎ পাইলাম। নদীতে স্বান করিতে গিয়াছি, দোখ, যেখানটায় নামিয়া আমরা স্বান করি তাহার কাছেই চড়ায় উনান খুড়িয়া হরিচরণ রান্না চাপাইয়াছে। অপটু হস্তে গৰ্ত্ত খুড়িয়া উনান বানাইয়াছে, কোথা হইতে ভিজা আধকাচ ডালপালা কুড়াইয়া আনিয়াছে, পাশে একটা কাণাভাঙা মালসায় করিয়া রান্নার আয়োজন করিয়া লইয়াছে—চাউল আর পচা পচা কয়েক টুকরা আলু, সম্ভবত: হাটের পরে সেগুলা কুড়াইয়া পাওয়া । ভিজা বালির উনান, কাচা কাঠ আগুন জলে না, প্রবাঙ্গী Yeo o কেবলই নিবিয়া যায় ধোয় উঠে, আর হরিচরণ উৰুড় হইয়া পড়িয়া স্কু দেয়। বারো বছরের শিশুর সেই ক্ষীণ নিঃশ্বাসে এত দাহিকাশক্তি নাই যে কাচা কাঠে আগুন ধরাইবে ; তাহা না হইলে শুধু উনানে নয় সমস্ত পৃথিবীর সভ্যতাতেই বহু কাল পূৰ্ব্বে আগুন ধরিয়া বাইত। কিন্তু বেলা তখন সাড়ে বারোট, এই জাগুন জালিয়া চাউল সিদ্ধ হইলে তবেই সে খাইতে পাইবে । তাই দুই চক্ষু জলে ভাসাইয়া হরিচরণ প্রাণপণে কেবলই ফু দিতে লাগিল । আমি একটা কাঠের গাদার আড়ালে লুকাইয়া দাড়াইয়া দাড়াইয়া তাহার এই যুদ্ধ দেখিলাম। তার পর ঘুরিয়া অনেক খানি দূরের এক আঘাটায় গিয়া স্নান করিয়া বাসায় ফিরিলাম । 泰 赛 琼 পরদিন বাড়ী গেলাম। দিন-দশেকের পরে ফিরিলাম। ফিরিতেই নিভা খবর দিল-দাদা সুসংবাদ । হরিচরণড , यद्रूझ । কহিলাম—স্বসংবাদ ঠিকই। মৰ্বল ক্যামনে । সুজিত ইতিহাসটা জানাইল । আমাদেরই পাড়ায় এক ভদ্রলোকের মাতৃশ্ৰাদ্ধ ছিল । সেই উপলক্ষে তিনি উপস্থিত ভিক্ষুকদের যথেচ্ছ-বিতরণ করিয়া খাওইয়াছেন । হরিচরণও খুব ঠাসিয়া খাইয়াছে। উপবাস-শুষ্ক পেটে গুরুভোজন সহে নাই ; কলেরা হইয়া পরদিনই মরিয়া গিয়াছে । শুনিয়া অকারণে মনটা হৃষ্ট হইয়া উঠিল । 葆 寧 譽 রাত্রে শুইয়া স্বজিতকে জিজ্ঞাসা করিলাম—তুষ্ট খাষ্টতে, গেছিলি ? সে কহিল—গেছিলাম। —কি রকম খাওয়াইছিল রে ? সে মুখ তুলিয়া আমার দিকে একটুক্ষণ চাহিয়া রহিল। তার পর কহিল—খুব ভাল ।