পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২০০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

#

—একটু ব্র্যাত্তি মিশিয়ে দেব তার সঙ্গে ? – ব্র্যাণ্ডি আছে বাড়ীতে ? সতীশবাবু ও বদিবাবুর একটা দৃষ্টিবিনিময় হইয়া গেল । সতীশবাবু বলিলেন—আছে। –দিন তাহলে এক চামচে । এ ব্যাপার চুকিয়া গেলে বিমল পোস্টমর্টেম রিপোর্টখান আদ্যোপান্ত পড়িল এবং কি ভাবে জেরা করিলে বদিবাবুর সুবিধা হইবে তাহা বলিয়া দিল । সব চুকিয়া গেলে সতীশবাবুর আগ্রহাতিশয্যে বিমলকে আহারটাও তাতারই বাড়ীতে সমাধা করিতে হইল । সতীশবাবু কিছুতেই ছাড়িলেন না, বদিবাবুও অনুরোধ করিতে লাগিলেন । আহার শেষ করিয়া ফিরিতে বিমলের বেশ দেরি হইয়া গেল। বিমল যখন বাড়ী ফিরিল, তখন রাত্রি প্রায় বারোটা বাজে। এত রাত্রে বাড়ী আসিয়াও কিন্তু বেচারা ঘুমাইতে পাইল না। আসিয়াই শুনিল হাসপাতালে শক্ত একটা রোগী আসিয়াছে। তৃত্য যোগেন খবরটি দিল । বিমলকে তখনই আবার হাসপাতালে ছুটিতে হইল । বাউরিদের একটি বউ আপিং খাইয়াছে। অল্পবয়সী এই মেয়েটির মনে কি এমন গভীর ধিক্কার হইল যে সে আত্মহত্যা করিতে উদ্যত হইয়াছে ! বিমল যথারীতি সমস্ত ব্যবস্থাই করিল, গলার ভিতর দিয়া রবারের নল চালাইয়া ঔষধ দিয়া সমস্ত পেটটা বেশ ভাল করিয়া ধুইয়া দিল, একটি ইনজেকশন দিল এবং গুপি বাবুকে জিজ্ঞাসা করিল—এখানে কফি কোথাও পাওয়া যাবে ? —কফি ? আঞ্জে, না। —কারও বাড়ীতে নেই ? ঠিক ঠিক, পরেশ-জার কাছে আছে । এই জানকী, যা তো নিয়ে আয় চেয়ে আমার নাম করে ! জানকী চলিয়া গেল । বিমল তখন বাউরি-বউয়ের আত্মীয়স্বজনকে (অনেকেই আসিয়াছিল) আত্মহত্যার কারণ জিজ্ঞাসা করিল। প্রথমে কেহই কিছু বলিতে চায় না। অনেক জিজ্ঞাসা করার পর अकोलो א9סע একটি বৃদ্ধ চুপি চুপি বলিল যে, দুর্থীরাম অর্থাৎ s মেয়েটির স্বামীই ইহার জন্য দায়ী। বিবাহ হইবার পর হইতে সে হনরিকে অর্থাৎ ঐ বউটিকে কিছু তো কিনিয়া দেয়ই নাই, উপরন্তু উহার গহনাগুলি সব বিক্রয় করিয়া সেদিন জমিদারের খাজনা এবং কাবুলিওলার ধার শোধ করিয়াছে। বেচারি স্বনরি লুকাইয়া লুকাইয়া সংসার খরচের টাকা হইতে জমাইয়া দুইটি টাকা অতিকষ্টে সংগ্ৰহ করিয়াছিল, ইচ্ছা ছিল একটি রঙীন শাড়ী কিনিবে, কিন্তু আজ সন্ধ্যায় দুর্থীয় তাহাও ছিনাইয়। লইয়া গিয়া তাড়ি-মদে সে টাকা দুইটি নিঃশেষ করিয়াছে। সুতরাং স্থনরি আপিং ন খাইয়া করিবে কি ? সত্যই তো, শাড়ী কেনার টাকা দিয়া তাড়ি কেনা ভয়ানক অন্যায় কাৰ্য্য। বিমল সহানুভূতি প্রকাশ করিল এবং বলিল যে, কাল দুর্থীরামকে ডাকাইয়া সে উহার প্রতিবিধান করিবার চেষ্টা করিবে । জানকী কফি আনিয়া হাজির করিল। মুনরিকে খানিকটা কড়া কফি পান করাইয়া এবং তাহাকে জাগাইয়া রাখিবার আদেশ দিয়া বিমল বাসায় ফিরিয়া গেল । বাসায় গিয়া দেখিল পরেশ-দা বসিয়া আছেন। হাসিমুখে বলিলেন,—তোমার জালায় তো অস্থির দেখছি, সখ ক’রে এক টিন কফি কিনে রেখেছিলাম, লব শেষ করে দিলে তো ? --না, আছে এখনো খানিকটা । –এই নাও আজ সন্ধ্যার ডাকে এসেছে—সম্ভবত ‘হার ম্যাজেষ্টিজ চিঠি—ভাবলাম দিয়ে যাই । বিমল দেখিল সত্যই মণিমালার চিঠি । —সন্ধ্যাবেলা কোথায় গিছলে ? সারস্বত মন্দিরের ফেরত এসেছিলাম এক বার । —একটা কলে গেছলাম, ওপারে। —জমিয়েছ বল! উঠি এবার, ঘুমোও তুমি । পরেশ-দা চলিয়া গেলে বিমল মণির চিঠিখান খুলিয়া পড়িল । অন্যান্য নানা কথার পর মণি লিখিয়াছে, “তুমি আমন একটা বিচ্ছিরি কাগজে চিঠি লিখেছ কেন ? ভাল দেখে প্যাড কিনো একটা । সবাই আমাকে ঠাট্টা করছিল এমন " বিমল একটু