পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২০৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

•》 দল্পগ্রহায়ণ fৱৰ্লোক দিকেই বেশী লক্ষ্য রাখিতে হয়। পশার জমাইবার ইহাই বাৰুর বাড়ী হইতে বাহির হইয়া বিমল হাসপাতালের মূলমন্ত্র। দিকে গেল। হাসপাতালে আরও দুই-তিনটি নূতন ভূধরবাৰু নাড়ীটা টিপিয়া বেশ খানিকক্ষণ চোখ ৰুজিয়া বসিয়া রছিলেন। তাহার পর বিমলকে বলিলেন— আপনি দেখুন তো এক বার পালস্ট । বিমলও দেখিল, সকালে যেমন দেখিয়া গিয়াছিল সেই রকমই আছে, বিশেষ কিছু ইতরবিশেষ হইয়াছে বলিয়া মনে হইল না। জর একটু বাড়িয়াছে, সন্ধ্যার দিকে রোজই বাড়ে, তাই একটু বেশী দ্রুত। ভূধরবাবু বলিলেন—মকরধ্বজ দেওয়া যাকৃ, কি বলেন ! মেডিকেল কলেজে পড়িবার সময় মকরধ্বজের বিষয় কিছুই পড়িতে হয় নাই, মকরধ্বজ সম্বন্ধে সে বিশেষ কিছুই জানে না। তবে মকরধ্বজের কথা বাল্যকাল হইতে সে শুনিয়াছে, নিশ্চয় ভাল ঔষধ হইবে । এই যে রোজ এত পেটেণ্ট ঔষধের প্রেস্রুপ শন লিখিতেছে, ইহাদের সম্বন্ধেই বা কি এমন বিশেষ জ্ঞান আছে তাহার। তবু লিখিতেছে, অনেক সময় ফলও হইতেছে ! —কি বলেন বিমলবাবু, মকরধ্বজটা দেওয়া যাক । —বেশ তে, দিন । —তাহলে দেখুন, খানিকট আলোচাল শল দিয়ে ভিজিয়ে রেখে দিন, তার পর সকাল বেলা সেই জলট ছেকে তার সঙ্গে মকরধ্বজটা বেশ ক’রে মেড়ে, অনেকক্ষণ ধরে মাড়বেন, মাড়াটাই আসল, বেশ ক’রে মেড়ে তার পর চাটিয়ে চাটিয়ে থাইয়ে দেবেন। রোগীর পিতা শ্ৰীহৰ্ষবাবু শঙ্কিত কণ্ঠে প্রশ্ন করিলেন— কোন ভয়ের কারণ দেখছেন কি ? —টাইফয়েড রুগীর ভয়ের কারণ সৰ্ব্বদাই, আটঘাট বেঁধে রাখছি আমরা, কি বলেন বিমলবাবু ? – তা তো বটেই। ভূধরবাবু উঠিয়া পড়িলেন এবং পকেট হইতে র্তাহার কলের ফাঁদ বাহির করিয়া বলিলেন—এখনও তিন জায়গায় বাকী, আর পেরে উঠছি না মশায় । শ্ৰীহৰ্ষবাৰু ভূধরবাবুর দক্ষিণ আনিয়া দিলেন। ঠিক পাশের বাড়ী বলিয়া বিমল কিছু লইতেছিল না। শ্ৰীহৰ্ষ وئـــسه وئR রোগী ভৰ্ত্তি হইয়াছে । পুরাতন সেই কালাজর রোগীটি অনেক ভাল অাছে,—তাহার পেটে কৃমি ছিল, ‘হক ওয়ামর্শ । কুমির চিকিৎসা করাতে তাহার পেটের ব্যথাটা কমিয়াছে। বিমল রোজ রাত্রে হাসপাতালের রোগীগুলিকে একবার দেখিয়া তবে শুইতে যায়। পরেশ-দা’র পরামর্শ অনুযায়ী সে গুপিবাবুর পাশা খেলাটা একেবারে বন্ধ করে নাই—চৌধুরী মহাশয়কে বেশী চটাইয়া ক্ষতি ছাড়া লাভ নাই। যতক্ষণ গুপিবাৰু চৌধুরী মহাশয়ের বাসা হইতে না ফিরিয়া আসেন ততক্ষণ দুলু, সেই অ্যাপ্রেটিস ড্রেসার ছোকরাটি, ইনডোর রোগীদের রক্ষণাবেক্ষণ করিবার ভার লইয়াছে। এ ব্যবস্থায় বিমল আপত্তি করে নাই, রোগীদের দেখিবার এক জন কেহ থাকিলেই হইল । বিমল হাসপাতালে গিয়া দেখিল দুলু বসিয়া পড়িতেছে। তাহাকে ড্রেসারি পরীক্ষা দিতে হইবে, তাহারই পড়া পড়িতেছে। এ সময়ে বিমল তাহার পড়ার একটু সাহায্যও করে আজকাল, যে-জায়গাটা বুঝিতে পারে না, বুঝাইয়া দেয়। দুলু এজন্য খুব কৃতজ্ঞ । বিমল আসিতেই দুলু উঠিয়া দাড়াইল ও বিমলের সঙ্গে সঙ্গে ঘুরিয়া রোগীগুলির অার এক বার খবর লইল । সেই বাউরি-বউটি ভাল হইয়াছে। বিমলকে দেখিয়া সে মাথায় ঘোমটা টানিয়া উঠিয়া বসিল । বিমল বলিল--তোমার আর এখানে থাকার দরকার নেই, তুমি কাল বাড়ী চলে যাও। আবার যেন জাপিংটাপিং খেও না ! দুখীয়াকে ডেকে আমি ধমকে দিয়েছি, সে তোমাকে কালই শাড়ী কিনে দেবে। বধুটি ফিক করিয়া হাদিয়া লজ্জায় মাথা নত করিল। শাড়ী কিনিবার দামটা যে বিমলই দুখীয়াকে দিয়াছে সে কথাটা সে আর বলিল না। দুখীয়াকেও সে মানা করিয়া দিয়াছিল, কথাটা যেন প্রকাশ না পায় । এই গরিব বস্তুটির তুচ্ছ একটা শাড়ীর সখ মিটাইয়া সে মনে মনে বেশ একটা প্রসন্নতা অনুভব করিতেছিল। অন্যান্য রোগীদের দেখিয়া বিমল যখন হাসপাতাল