পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

उमधकृझण त्रिबांग्लझ 4% বেঙ্গল প্রভৃতি রঙ্গমঞ্চালনার নবনব রহস্ত সে নিতান্ত ঘরোয়া ব্যাপারের মত করিয়া প্রকাশ করিতে লাগিল। আমরা সানন্দে দীনেশের শিষ্যত্ব গ্রহণ করিলাম। এই স্বত্রে বহুদিন পরে আবার সিগারেট ধরিলাম। ক্রমে দীনেশের সহিত অধিকাংশ সময় যাপন করা আমার একটা রোগের মধ্যে দাড়াইয়া গেল। রোজ গঙ্গার ধারে বেড়াইতে বেড়াইতে সে তাশর জীবনের অত্যাশ্চৰ্য্য অভিজ্ঞতা সকল আমার নিকট বিবৃত করিতে থাকিত আর আমি অবাক হইয়া শুনিতাম। নিঃশ্বাস বন্ধ করিয়া তাহার কথা শুনিতে শুনিতে তন্ময় হইয়া যাইতাম । এখন ভাবিলে আশ্চর্য হই যে সেই সকল অসম্ভব গল্প তখন বেদবাক্যের মত বিশ্বাস করিতাম । তবে শিশুকাল হইতেই রহস্য সহ করিবার মত ধৈর্য্য শিক্ষা জীবনে হয় নাই । আমার চরিত্রের এই বিশেষত্ব দীনেশ নিশ্চয়ই লক্ষ্য করিয়া থাকিবে । কারণ লোক চরাইবার বিদ্যায় সে ছিল পাক চালিয়াং । ফোর্থ ইয়ার ক্লাস শেষ হইয়া আসিতেছে। পূজার ছুটিও ফুরাইল। কলেজে পড়ার চাপ পড়িয়াছে মন্দ নয়। পরীক্ষার হুমকি থাইয়া, কেঁদো-বাঘ-বাঘ-সব ছেলে একেবারে মেনি-বেরাল হইয়া পড়িয়াছে । হাজির বহিতে ‘p’এরা পিপীলিকা শ্রেণীর মত নিরবচ্ছিন্ন। এ হেন অবস্থায় এক দিন সে কলেজে আসিল দু-পরিয়ড দেরি করিয়া-প্রশ্নের উত্তরে প্রফেসরকে বলিল কোন আত্মীয়ের অস্থখ, রাত জাগিতে হইয়াছে। সন্ধ্যাকালে যথাসময়ে তাহার আস্তানায় উপস্থিত হইয়া জানিলাম পূৰ্ব্বদিন রাত্রিতেও নাকি সে বাড়ী ছিল না। আগের দিন সন্ধ্যাবেলাও তাহার সহিত বেড়াইয়াছি। কোথাও যাইবার কথা তো শুনি নাই । আত্মীয়ের অস্বখের কথা জিজ্ঞাসা করায় খানিকটা চুপ করিয়া থাকিয়া বলিয়াছিল—সে অনেক ব্যাপার। কি ব্যাপার তাহা বলিল না—একটু যেন এড়াইয়া গেল। আমিও অভিমান করিয়া জিজ্ঞাসা করি নাই। তাহার পরদিন সে আসিলই না। বুঝিলাম ব্যাপারটা নিশ্চয়ই গুরুতর এবং তাহাই তাহার অনুপস্থিতির কারণ। মনটা খারাপ হইয়া রহিল—অভিমান-টভিমান উড়িয়া গেল এবং কি কবিয়া দীনেশের একটু কাজে লাগিব তাহাই চিন্তা করিতে লাগিলাম । iro . নিত্য গঙ্গার ধারে বেড়াইবার সময় সে সৰ্ব্বদাই সামাজিক এবং লৌকিক সংস্কার লইয়া কথা উঠাইত। ব্যক্তিগত স্বাধীনতার মূল্য, স্ত্রীপুরুষের সম্পর্ক, সতীত্ব প্রভৃতি গুরুতর বিষয়ের আলোচনা এবং মেরুদণ্ডহীন সমাজের দুর্বলতার কথা অত্যস্ত নিঃসঙ্কোচ প্রবলতার সহিত আলোচনা করিয়া যাইত এবং আমার স্বভাববিদ্রোহী তাজ মনটা সমাজের অত্যাচারের বিরুদ্ধে একটা বৈপ্লবিক কিছু করিয়া ফেলিবার জন্য লড়াইয়ে মেড়ার মত বুকের ভিতরটায় শিং বাগাইতে থাকিত । ... " জমি প্রস্তুত হইয়াছিল মন্দ নয়। এমন সময় এক দিন দীনেশ সকাল বেলা আমার পড়িবার ঘরের জানালার নীচে দেখা দিল। দীনেশ আসিলে যে পৃথিবীর আর সমস্তকে দেউড়ির দরজায় অপেক্ষা করিয়া থাকিতে হইবে এ সম্বন্ধে আমার বা দীনেশের কাহারও সন্দেহ মাত্র ছিল না। পড়া ছাড়িয়া তৎক্ষণাং উঠিয়া গেলাম। দেখিলাম দীনেশ বেশ একটু উদ্বিগ্ন—একটু চকিত। তাহার মুখের উপর দুশ্চিন্তার ছায়া সুস্পষ্ট। আমি গেলে, কিছু ক্ষণ সে কোন কথা বলিল না ; আমার কাধে একটা হাত রাখিয়া আমার চোখের দিকে গভীর ভাবে তাকাইয়া রহিল—যেন আমার হৃদয়ের মধ্যে শক্তির সঞ্চয় কতখানি তাহারই পরিমাপ করিতেছে, বিপদে আমার মত বালকের উপর ভর দেওয়া চলে কিনা তাহাই বিবেচনা করিতেছে । নিজেকে অত্যন্ত ইম্পট্যান্ট বলিয়| অমুভব করিলাম—এবং যে কোন রকম বিপদই হউক না কেন দীনেশকে শেষ পর্য্যন্ত সাহায্য করিব মনে মনে এই প্রতিজ্ঞ করিয়া সোজা হইয়া দাড়াইয় তাহার দিকে তাকাইলাম--মানুষ যাচাই করিতে সে যে ভুল জায়গায় আসে নাই তাহাই যেন নীরবে স্পষ্ট ভঙ্গীতে তাহাকে জানাইয়া দিলাম । দীনেশ বলিল—শিবু, বড় সমস্যায় পড়েছি। অামার মনে হয় আমাদের জীবনের আজ এক গুরুতর পরীক্ষার দিন। কিন্তু তোমার মত এক জন অল্পবয়স্ক অনভিজ্ঞ