পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

* 'वंशं শিবায়ন دده দয়া করিয়া গরীবের বাড়ীৰ এই সামান্ত খুদকুঁড়াটুকু গ্রহণ তারপর আতিথ্যের জন্য উভয়কে বহু বহু ধম্ভবাদ দিয়া করিয়া আমাদিগকে সম্মানিত করুন। বিদায় হইলাম। র্তাহারাও দলিলটির জন্তু অনেক একে জাহার গ্রহণ করিবার আদবকায়দা কিছুই জানি ন-তারপর কোনটা আগে খাইব কোনটা পরে, কোনটা কিরূপে খাইব—এই সব চিন্তা আমার বিপন্ন মস্তিষ্কের মধ্যে গোলমাল বাধাইয়া দিল। কি বলিতাম জানি না, কিন্তু লজ্জিত আপত্তির ভঙ্গীতে কি একটা বলিতে যাইতেই সেলিন সঙ্কুচিত ভাবে বলিল—ও, আপনি বুঝি ব্র্যাহমিন ? অন্তের ছোয়া খাইলে আপনাদের ধৰ্ম্মহানি হইবে ? বলিতে বলিতে প্রত্যাখ্যাত আতিথ্যের বোধেই বোধ করি একেবারে লাল হইয়া উঠিল। আমি বুঝিয়া তাড়াতাড়ি বাধা দিয়া বলিলাম—ন, না, সেরূপ কুসংস্কারে আমি বিশ্বাস করি না । এই দেখুন থাইতেছি। বলিয়া কয়েকটি আঞ্জুর তুলিয়া মুখে দিলাম। সেই মুহূর্তেই দেখিলাম সেলিনার মুখ হাসিতে উজ্জল হইয়া উঠিল ; দেখিয়। মনে মনে অত্যন্ত আরাম অনুভব করিলাম । বলিলাম-আমি ব্রাহ্মণ বটে ; কিন্তু পুরাতন কালের কুসংস্কার এখন আর মানি না। কিন্তু আমি বলিতে ছিলাম যে, কোনও পুস্তকে কি বাঙালী ব্রাহ্মণকে দানব বলিয়া চিত্রিত করিয়াছে যে এক ডজন লোকের আহার্য্য আমার সম্মুখে আনিয়া উপস্থিত করিয়াছেন ? হাস্তে আলাপে কৌতুকে আমাদের পরিচয়টা অনেকখানি অগ্রসর হইয়া গেল। বিদায়কালে ভদ্রলোক অবসরমত আমাকে আবার আসিবার জন্য নিমন্ত্রণ করিলেন । সেলিন অগ্রসর হইয়া আসিয়া বলিল—নিশ্চয় আসিবেন দয়া করিয়। নদীর ধারে আমার বাগিচা আছে, আপনাকে দেখানো হইল না। আচ্ছা, এক মিনিট অনুগ্রহ করিয়া দাড়ান। বলিয়া অতি লঘুগতিতে চলিয়া গেল । ভদ্রলোক আমাকে আমাদের ক্যাম্পের কথা সব জিজ্ঞাসা করিতে লাগিলেন। সেলিন ফিরিয়া আসিল ছুটি বড় বড় ব্ল্যাকপ্রিন্স গোলাপ হাতে করিয়া। বলিল— শীতকাল পৰ্য্যন্ত থাকিলে এর দ্বিগুণ আকৃতির গোলাপ আপনাকে দিতে পারিব ৷ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করিলেন। মুগ্ধ হইয়াছিলাম ৰই কি-- অভিজাতের অপরূপ সৌজন্য । তাছাড়া. সেলিনা, সেলিন, সেলিনা । সমস্ত আকাশ বাতাস ধ্বনিত করিয়া ঐ নাম আমার চিত্তকুহরে গুঞ্জন করিয়া ফিরিতে লাগিল । সমস্ত রাস্তাটা আসিলাম যেন বাতাসে ভর করিয়া। ক্যাম্পে আসিয়া কাহাকেও কিছু বলিলাম না। কিন্তু সপ্তাহের বাকী কয়টা দিন আমার নিকট মিথ্যা হইয়া গেল। রবিবারের প্রতীক্ষায় আমি চকিত্ত হইয়া রহিলাম। কিন্তু আশ্চর্য্য এই যে, রবিবার আসিলে আমার সমস্ত উৎসাহ কেমন এক প্রকার ভয়ে নিস্তেজ হইয়া পড়িল । ভাবিলাম ভদ্রতার খাতিরেই যাইতে অমুরোধ করিয়াছে মাত্র। উপরি-উপরি এমন উপযাচক হইয়া গেলে মনে করিবে কি ? নিজেকে অনেক করিয়া বুঝাইয় যাওয়া বন্ধ করিলাম। কিন্তু সেলিনার কথায়ু আমার অন্ত:করণ পূর্ণ হইয়া রহিল এবং এইবার প্রভাতের নবারুণদীপ্তিতে আমার চিত্ত-গগনের শুকতারাটি অস্ত গেল । দুলালীকে একেবারে প্রায় তুলিয়া গেলাম । সমস্তটা দিন একপ্রকার ছটফট করিয়া কাটাইয়া বৈকালের দিকে বসরা শহর অভিমুখে রওনা হইলাম। কোন কিছুই কিনিবার আবশ্বক ছিল না। তবু সেই স্টোরে চীনা সিস্কের রুমাল কিনিবার অজুহাতে গিয়া উপস্থিত হইলাম। অযথা কতকগুলা অর্থক্ষয় করিতে হইল, কাহারো দর্শন মিলিল না। অবশু দেখা যে হইবে এমন কোন সম্ভাবনা ছিল না। তবু কিসের আশায় যে এই সাত-আট মাইল পথ পর্য্যটনের ক্লেশ স্বীকার করিতে প্রস্তুত হইয়াছিলাম আজও তাহ বলিতে পারি नः । শহরে সেদিন একটা উৎসব ছিল। দলে দলে লোক সুদীর্ঘ মহার্ঘ পরিচ্ছদে সজ্জিত হইয়া চলিয়াছে। অপেক্ষাকৃত নির্জন একটা পথ ধরিয়া চলিলাম। ফিরিবার পথ অধিকতর দীর্ঘ ও ক্লাস্তিকর বলিয়া মনে হইতে লাগিল ।