পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૨૨૦ শহরের প্রায় সীমাস্তে আসিয়া পৌছিয়াছি এমন সময় একখানা প্রকাণ্ড মোটর গাড়ী আমার পাশ দিয়া অগ্রসর হইয়া গেল এবং নারীকণ্ঠের “এই থাম, থাম” স্পষ্ট শুনিতে পাইলাম। সে কণ্ঠ অল্পক্ষণ মাত্র পরিচিত বটে, কিন্তু তাহা ভূল করিবার নয়। মোটরটি থামিয়া আমার নিকট পিছাইয়া আসিল । আমার বক্ষের মধ্যে রক্তস্রোত উত্তাল হইয়া উঠিল। নিজেকে সংযত ও সংহত করিয়া সহাস্তে প্রচুর অভিবাদন করিলাম। সেলিনা আজ একাকিনী । বলিল—কই, আপনি ত আজ সকালে আমাদের ওখানে গেলেন না ? আমি মনে মনে আপনার জন্য প্রতীক্ষা করিয়াছিলাম। কৃতার্থ হইয়া গেলাম । হাসিয়া পরিহাসছলেই বলিলাম—না, বারংবার গিয়া আপনাকে বিরক্ত করিতে সাহস করি নাই । অল্প একটু আবদারের স্বরে সেলিনা বলিল—ত হোক, যে কয় দিন এদেশে আছেন আপনার নিকট হইতে ভারতবর্ষের গল্প শুনিয়া লইব । গল্প শুনিবার আমার ভারী লোভ। আর, আমার বাগিচাও ত আপনাকে দেখানো হয় নাই। আসিবেন ত আগামী রবিবারে ? হাসিয়া বলিলাম-আপনি হুকুম করিলে না যাইবার সাধ্য কি ! —তাহা হইলে আমি হুকুম করিতেছি, আপনি আসিবেন। মনে মনে গলিয়া গেলাম। উন্মাদ না হইলে আমি নিশ্চয় বুঝিতাম যে ইহা বালিকাস্থলভ সবলতা এবং बिएननेत्र ८व-थाउिद्र शाउँौऊ जांद्र किङ्कड़े नग्न । किड़ মস্তিষ্ক নিশ্চয় তখন আমার বিকৃত হইতে আরম্ভ হইয়াছিল। কারণ মনে মনে এমন নিৰ্ব্বোধ আশাও বোধ হয় করিয়াছিলাম যে এতটা পখ যাইতে হইবে মনে করিয়া সেলিনা হয়ত ককতটা দূর আমাকে গাড়ীতে করিয়া আগাইয়া দিতে চাহিবে। কিন্তু তাহা সে চাহে নাই । আত্মাভিমানে একটু আঘাত লাগিয়াছিল বৈকি, কিন্তু রবিবার প্রাতে ঠিকমত হাজিরা দিতেও ক্রটি করি নাই। তাহার পর বহুদিন যাবৎ অনেক মিশিয়াছি ; বহু সমাদর ও ভদ্রতা লাভ করিয়াছি ; প্রবাঙ্গী 整 Yegw আজ বুঝিতেছি বরাবর একটা বিশিষ্ট বাবধান সে রাখিয়া চলিত। অথচ সেই ব্যবধানকে কখনও স্পষ্টতায় রূঢ় হইয়া উঠিতে দেয় নাই। কিন্তু তাহার প্রত্যেকটি ভদ্রত, প্রত্যেকটি সহজ হৃদ্যতা, সামান্ত একটু আতিথেয়তাকেও আমার বিরুত মস্তিষ্কের উত্তেজনায় অন্যরূপ করিয়া দেখিতাম । প্রত্যেকটি কথার হৃদয়ঘটিত অর্থ করিয়া লইতাম এবং তাহাই মনে মনে আলোচনা করিতে করিতে সৰ্ব্বপ্রকার সম্ভব অসম্ভব কল্পনাকে পাগলামির উনপঞ্চাশ পবনের পৃষ্ঠে সওয়ার করিয়া দিবারাত্র উদভ্ৰাপ্ত হইয়া থাকিতাম। কী ষে চাহিতাম তাহা আমার নিজের কাছেও স্পষ্ট ছিল না। শুধু উদভ্ৰান্ত প্রেমিকের বায়বীয় কল্পনা স্বপ্নে ও জাগরণে আমার বিমূঢ় মস্তিষ্ককে মথিত করিতে থাকিত। ইংরেজী বলিবার পক্ষে আমাদের জিহবার ষে স্বাভাবিক জড়তা তাহা দূর করিবার জন্য হযোগ খুজিয়া খুজিয়া টমিদের সহিত মিশিতে আরম্ভ করিলাম । ফল হইল এই যে ইংরেজী শিখিলাম কদৰ্য্য এবং পান করিতে শিখিলাম প্রচুর। কাজকৰ্ম্ম অবশু সামরিক শাসন অকুযায়ী না করিয়া কোন উপায় ছিল না। কিন্তু কাজের মধ্যে টিকিয়া থাকিতে যেন প্রাণ স্থাপাইয়া উঠিতেছিল । বসরার বিখ্যাত ধনী ওমরাহের ভগ্নীর প্রেমার্থী যে, সে একটা সামান্য দাসত্বের উপর নির্ভর করিয়া জীবিকা অর্জন করিতেছে ইহা যেন একটা স্বপ্নের পরিহাস। অথচ এই বিসদৃশ ব্যাপারের আসল হাস্যকর দিকটা আমার নিকট স্পষ্ট ছিল না। আমার মনে হইত এ যেন আমার ছদ্মবেশ। ভারতবর্ষের স্বপ্রাচীন বংশের কোন রাজপুত্র আমি যেন দিগ্বিজয়ে বাহির হইয়াছি। সমস্ত পৃথিবী ভ্রমণ করিয়া অবশেষে এই মরূদ্যানের মধ্যে আসিয়া গোপনে আবিষ্কার করিয়াছি আমার জন্য প্রতীক্ষমানা সৰ্ব্বভুবনের শ্রেষ্ঠ স্বন্দরীকে । ছদ্মবেশেই জয় করিয়াছি তাহার অনাস্ত্ৰাত পুষ্পকোমল হৃদয়। প্রতীক্ষা করিয়া আছি যেদিন আত্মপ্রকাশ করিয়া সগৌরবে সেলিনাকে রাণীর আসনে প্রতিষ্ঠিত করিব এবং চন্দ্রস্থৰ্য্যতারা ও নিখিল ভুবন পুলকিত নিৰ্ব্বাক হইয়া আমাদের দিকে চাহিয়া দেখিবে । ایه