পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অগ্রহায়ণ পাখীর বাসার গঠন-বৈচিত্র) ২৩৫ इझेलझे স্ত্রী-পুরুষ উভয়ে মিলিয়া স্থান নির্বাচন করিতে জঙ্গলের একটা স্থান নিৰ্ব্বাচন করিয়া অনেকে মিলিয়া বাহির হয়। উচু গাছের বেশ ফাকা জায়গায় এমন একটি শক্ত অথচ সরু ডাল নিৰ্ব্বাচন করে যাহার একটি গাট হইতে দুইটি সরু ডাল প্রায় পাশাপাশি ভাবে বাহির হইয়া গিয়াছে। নারিকেল, সুপারি প্রভৃতি বৃক্ষপত্রের স্বৰ্ম্ম সুহ্ম ফালি সংগ্ৰহ করিয়া দুইটি ডালে দুই প্রান্ত বাধিয়া দোলনার মত বাসা নিৰ্ম্মাণ করে। দুইটি ডালের সঙ্গে এমন শক্ত বাধুনি দেয় যে, সহজে খুলিয়া লওয়া দুষ্কর। বাসা নিৰ্ম্মাণ শেষ হইলে দোলনার ধারগুলি বেশ করিয়া বুনিয়া মুড়িয়া দেয়। পার্থীর পরিত্যক্ত ছোট ছোট পালক বা তুলার মত কোন জিনিষ সংগ্ৰহ করিয়া এমন ভাবে কোমল গদী তৈয়ারী করে যেন ডিম বা বাচ্চার গায়ে কোন আঘাত না লাগে । কলিকাতার বিভিন্ন অঞ্চলে মাঝারি গোছের ফিঙ্গে জাতীয় কালে রঙের এক প্রকার পার্থী দেখিতে পাওয়া যায়। ইহার ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পালক সংগ্ৰহ করিয়া প্রায়ই চওড়া কাৰ্ণিসের নীচে বাসা তৈয়ারী করিয়া থাকে। খুৰ্থ অথবা অন্য কোন আঠালো পদার্থের সাহায্যে পালকগুলি আঁটিয়া ভিতরে ঠিক পকেটের মত রাখিয়া তাহার মধ্যে বাস করে। দলবদ্ধ ভাবে এক স্থানে বাস করাই ইহাদের স্বভাব । বাসাগুলি একট। আর একটার গায়ে লাগাইয়া তৈয়ারী করিয়া থাকে । হঠাৎ দেখিয়া পার্থীর বাসা বলিয়া মনেই হয় না। যেন কতগুলি পালক এলোমেলো ভাবে এক স্থানে স্ত পাকার করিয়া রাখা হইয়াছে। পূৰ্ব্বেই বলিয়াছি, সাধারণতঃ পাখীরা ডিম ও বাচ্চাদের রক্ষণাবেক্ষণের জন্যই বাসা নিৰ্ম্মাণ করে, কিন্তু এমন কতকগুলি পার্থী দেখিতে পাওয়া যায় যাহারা বাস করিবার উদ্দেশ্যেই বাসা বাধিয়া থাকে এবং এরূপ স্থায়ী বাসস্থান নিৰ্ম্মাণে তাহারা যথেষ্ট শিল্পনৈপুণ্যের পরিচয় দিয়া থাকে। ইহাদের মধ্যে কাহারও কাহারও আবার যথেষ্ট সৌন্দৰ্য্যবোধের পরিচয় পাওয়া যায়। দৃষ্টান্ত স্বরূপ অষ্ট্রেলিয়া ও নিউগিনির কুঞ্চপার্থীর নাম উল্লেখ করা যাইতে পারে। কোন কোন জাতীয় কুঞ্জপার্থী তাহার চতুর্দিক ঘিরিয়া বাসা নিৰ্ম্মাণ করে। মধ্যস্থানে সাধারণ আঙ্গিনার মত একটি স্থান রাখিয়া দেয়। অবসর মত সকলে মিলিয়া সে-স্থানে খেলা করে এবং পুরুষ-পার্থীরা কুটুম পাখীর বাসা স্ত্রী-পার্থীদের মনোরঞ্জনার্থ সে-স্থানে আসিয়া মৃত্য করে। কোন কোন জাতীয় কুঞ্জপার্থী আবার মধ্যস্থলে প্রশস্ত আঙ্গিনা ঘেরিয়া গ্যালারীর মত করিয়া গায়ে গায়ে বাস বাধিয়া থাকে। নানা প্রকার স্বদুখ পাখীর পালক, উজ্জল কাচের টুকুর, ছোট ছোট সুদৃশ্ব শামুক বা ঝিনুকের খোলা সংগ্ৰহ করিয়া তাহারা বাসার চতুৰ্দ্দিকে সাজাইয়া রাখে। অন্ত আর এক জাতীয় কুঞ্জপার্থী তাহাদের বাসগৃহের সৌন্দয্য বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে নানা জাতীয় রঙীন ফুল, ছোট ছোট স্বদুখ ফল এবং রং-বেরঙের পোকামাকড় সংগ্ৰহ করিয়া আনে। শুষ্ক হইয়া গেলে সেগুলি ফেলিয়া দিয়া