পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১২ প্রবাসী Sఠిgు দ্যায়তীর্থ চিস্তা-বিভোর অবস্থাতেই বলিলেন-দেব । স্বামীর একটি পা টানিয়া লইয়া শিবরাণী বলিলেন— কি এত ভাবছ বল তো ? মৃদু হাসিয়া এবার যেন কতকটা সচেতন ভাবে স্থায়তীৰ্থ বলিলেন,—বড় কঠিন চিন্তা করছিলাম শিবরাণী । ফলভোগের আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে দ্বন্দ্ব উপস্থিত হয়েছে মনে । শিবরাণী রহস্তোর স্বরেই হাসিয়া বলিলেন—আমার এক মুস্কিল হয়েছে বাপু, স্বামী পণ্ডিত, ছেলে পণ্ডিত, কে যে কি বলছে মুখ মানুষ আমি বুঝতেই পারি না! আবার ওই চাদট, সেও এক পণ্ডিত হবে আর কি ! গম্ভীর মুখে হয়িতীৰ্থ বলিলেন—এইবার সংসার ত্যাগ ক’রে ভগবানের শরণ নেওয়া উচিত হয়েছে শিবরাণী । কিন্তু প্রলোভনও হচ্ছে এমন ছেলে নিয়ে ঘর করি । বাপ-বেটায় মিলে আগেকার কালের মত পাণ্ডিত্যে দিগ্বিজয় ক’রে আসি । কিন্তু বৰ্ত্তমানের সুখের মধ্যেই নাকি ভবিষ্যতের দুঃখ লুকিয়ে থাকে, সেই হেতু ফলভোগের অধিকার গীতায় নিষিদ্ধ। চল, এইবার আমরা কোনও তীর্থে গিয়ে বাস করব । শিবরাণী অবাক তহঁয়া গেলেন । ন্যায়তীর্থের এমন সঙ্কল্পের কথা তাহার কাছে একেবারে অপ্রত্যাশিত, ইহার পূৰ্ব্বে কোনও দিন ঘুণাক্ষরেও ন্যায়ুতীর্থ প্রকাশ করেন নাই, শিবরাণীও আভাসে পৰ্য্যস্ত অকুমান করিতে পারেন নাই । কিছুক্ষণ পর বিস্ময়ের ঘোরটা কাটাইয়া উঠিয়া তিনি বলিলেন—তোমার যত উদ্ভট কল্পনা ! স্বথের মধ্যে দুঃখ লুকিয়ে থাকে! আবার কিছুক্ষণ নীরব থাকিয়া কথাটা যেন ভাবিয়া বুঝিয়া দেখিলেন, তার পর বলিলেন, থাকে তো থাক। এই যদি বিধানই হয় তবে মাথা পেতে নিতেও হবে তা । হায়রত্ন চুপ করিয়া রহিলেন । ৫মনই ধারার উদ্ভট চিস্তায় মম তাঙ্গর উদাসীন হইয়া উঠিয়াছে। 碟 豪 豪 প্রগাঢ় বত্বের সহিত সমস্ত থাতখিনি পড়িয়া অনেক চিস্ত করিয়া শশিশেখরের রচনার কয়েকটি স্থান ন্যায়তীর্থ সংশোধন করিয়া দিলেন । শশিশেথর থােতাখানি লইয়া ঘরে আসিয়া সংশোধন করা জায়গাগুলি দেখিতে जैवड করিল। প্রথম সংশোধন শশী দেখিল—“সুস্পষ্ট’ শব্দটিকে কাটিয়া ন্যায়তীর্থ লিথিয়াছেন ‘বিষ্পষ্ট । আবার সে পাতা উন্টাইল । বেলা অনেক হইয়াছিল, শশিশেখরের বধু চারু আসিয়া বলিল—ম স্নান করতে বললেন। বেলা কত হয়েছে দেখ তো ! শশী একটি দীর্ঘনিশ্বাস ফেলিয়া খাতাটির সংশোধিত পাতাগুলিতে কাগজ দিয়া চিহ্নিত করিয়া রাখিয়া উঠিয়া পড়িল । শিবরাণী নিজেই ততক্ষণে আসিয়া হাজির হইলেন, বলিলেন—বাবা, তোমাদের বাপ-বেটার বিদ্যের অঁাচে আমাদের শাশুড়ী-বউয়ের হাড়ে কালি পড়ল । গরম ভাত যে কেমন, তা ভুলেই গেলাম । শশিশেখর অপরাধ বোধ করিল—তাড়াতাড়ি ঘর হইতে বাহির হইয়া আসিয়া বলিল—কই, এর আগে তো ডাক নি তুমি ! শিবরাণী হাসিয়া বলিলেন—দোষ হয়েছে বাবা । তোমাদের ক্ষিদে পেয়েছে, সেটা আমার মনে ক’রে দেওয়া উচিত ছিল ! ক্ষিদে-তেষ্টা বুঝতে না-পার পণ্ডিতদেব একটা লক্ষণ, ওটা আমি জানতাম না । ব’স আমি পিঠে তেলট দিয়ে দিই । ছেলের পিঠে তেল দিতে দিতে শিবরাণী বলিলেন—হঁ্যারে, কৰ্ত্ত তোর খাতা দেথে কেটেকুটে ঠিক ক’রে দিলেন ? শশিশেখর চিস্তান্বিত হইয়াই তেল মথিতেছিল, মায়ের কথা তাতার কানে ঢুকিলেও মনকে যেন স্পর্শ করিতে পারিতেছিল না, সে চিন্তা-বিভোর ভাবেই উত্তর দিল— হঁ্যা, দিয়েছেন । শিবরাণী বিরক্ত হইয়া বলিলেন—কি ভাবছিস এত ? শশী উত্তর দিল—ভাবি নি। এমনি আর কি ! রাত্রেও শশী এমনি চিস্তান্বিত ভাবে খাতাখানি খুলিয়া বসিয়াছিল। চারু আসিয়া ছেলেকে বিছানায় শোয়াইয়া দিয়া স্বামীর পাশে আসিয়া দাড়াইল । স্বামীকে এমনি ভাবে বসিয়া থাকিতে দেখিয়া বলিল—হঁ্যা গো, তুমি সারাদিন এমন ক’রে কি ভাবছ বল তো ? একটা দীর্ঘনিশ্বাস ফেলিয়া শশী বলিঙ্গ-বড় সমস্যায়