পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S8 প্রবাসী లి8ళి श, সেটাকে স্বীকার ক’রে নিলে শদের মধ্যে অর্থের ব্যাপকতা বাড়ে ; তাতে ভাষার গৌরব বৃদ্ধিই হয়। ঠিক এই সময়েই গলার সাড়া দিয়া দ্যায়তীৰ্থ বাহির হইয়া আসিলেন । আসনে বসিয়া খাতাখানি কোলের উপর রাখিলেন, তার পর বলিলেন, তুমি বিম্পষ্ট স্থলে 'স্বল্পষ্ট ব্যবহারের পক্ষপাতী শশী ? শশী বলিল— আঞ্জে ই । শব্দের ধ্বনি--- ন্যায়তীৰ্থ বলিলেন - তোমার যুক্তি শুনেছি আমি । তারপর ছাত্রটির দিকে চাহিয়া বলিলেন, ওটা তুমি এখন "বিম্পষ্ট'ষ্ট পড়ে যাও, পরে আমি বিচার ক’রে দেখব । ছাত্রটি চলিয়া গেল । হায়তীর্থ নীরব হইয়াই বসিয়া রছিলেন, খাতাথানি কোলের উপরেই পড়িয়া রহিল ; তিনিও শশীর হাতে তুলিয়া দিলেন না, শশীও নিজে হাত বাড়াইয়ু লইল না। কিছুক্ষণ চুপ করিয়া বসিয়া থাকিয়া শশী বলিল—ত হ’লে— হায়তীৰ্থ বলিলেন –ঠ্য, যেতে পার তুমি । মনে খানিকটা উত্তাপ জমা হইয়া উঠিয়াছিল, তা হাতে যেন তাহার কোন হাত ছিল না। ধীরে ধীরে সে উত্তাপ কমিয়া আসিলে মনে মনে তিনি শশীর যুক্তিকে স্বীকার করিয়া লইলেন । ছাত্রটিকে ডাকিয় এ কথা বলিবার পূৰ্ব্বে তিনি শশীকে কথাটা জানানে। প্রয়োজন মনে করিলেন। শশীর রচনার মধ্যেও তিনি প্রথমেই 'সুস্পষ্ট'কে কাটিয়া "বিম্পঃ’ করিয়াছেন । সেটি ও নিজে হাতে কাটিয়া দিবার সঙ্কল্প লইয়া শশীর ঘরের দুয়ারে আসিয়া ডাকিলেন- শশী ! ঘরের দুয়ার খুলিয়া দিল পুত্রবধু চারু। হায়তাৰ্থ ঘরে প্রবেশ করিয়া শশী মাঠ । চার ঘর পরিষ্কার করিতেছিল । ন্যায়তীৰ্থ বাহির হইতে গিয়া আবার ঘুরিলেন, শশীর কলমটি তুলিয়া লইয়া খাতাপানি খুলিলেন । দেখিয়া ও তিনি যেন বিশ্বাস করিতে পারিলেন না। তাহার লেখ। ‘বিষ্পষ্ট' শব্ব কাটিয়া আবার ‘সুস্পষ্ট’ লেখা হইরা গিয়াছে । কলমটি তিনি রাথিয় দিলেন। তারপর একে একে পাতা উণ্টাইয়া গেলেন । র্তাহার সমস্ত সংশোধন শশী কাটিয়া দিয়াছে ! ন্যায়তীর্থের হাত দেখিলেন, কাপিতেছিল, খাতার লেখা সেই কম্পনহেতু আর ੧ੀ যায় না ; তিনি খাতাথানি রাখিয়া দিয়া উঠিয়া পড়িলেন । দেওয়ালে হাত দিয়া দাড়াইয়া বলিলেন—বউমা, খড়ম জোড়াটা এগিয়ে দাও তো । চারু খড়ম জোড়াটি আনিয় একরূপ পায়ে পরাইয়া দিল । ন্যায়তীৰ্থ ঘর হইতে বাহির হইয়। গেলেন । চারু শঙ্কায় বিবর্ণ হইয়া গেল, নীচে রান্নাঘরে শিবরাণীর হাতের দ্রুত সঞ্চালিত খুস্তি স্তব্ধ হইয়া গেল। এ কেমন খড়মের শব্দ ! এত উচ্চ কঠিন অথচ অপটু পায়ের চালিত খড়মের শব্দের মত অস্বচ্ছন্দ অথব পায়ের অস্থিরতা হেতু অসমছন্দ । ন্যায়তীর্থ যেন অতিমাত্রায় শুদ্ধ হইয়া গিয়াছেন, অথচ সেই স্তব্ধতার মধ্যে র্তাহার নিকটে আসিবার অবসরও কেহ পায় না । পুথির সাগরে তিনি ডুব দিয়াছেন । যে সময়ট পড়েন না, সে সময় তিনি ঠিক স্তব্ধ হইয়া বসিয়া থাকেন । কথা বলিলে দুই-একটার উত্তর দেন ; বাকীগুলি নিরুত্তরই রহিয়া যায় । সেদিন তখন তিনি বসিয়াই ছিলেন, বন্ধু তরিশ চাটুক্তে একখানি কাগজ হাতে করিয়া আসিয়া উপস্থিত ন্যায়তীর্থ সংক্ষেপে আহবান করিলেন—এস । হরিশ স্কুল দেহখানি লইয়া ধপ করিয়া কথলের উপর বসিয়া পড়িয়া বলিলেন—হ্যাঃ, কাপ ধরে গেল, মোট শরীর নিয়ে ছোট কি সোজা কথা ! জিভ বেরিয়ে গেল । ক’টি মেয়ে দেখে যা হাসলে শিবশেখর, লজ্জায় আমি থেমে গেলাম । হক্টলেন । ন্যায়ুতীর্থ অল্প হাসিলেন, নিতা স্থ ভদ্রতা রক্ষার জন্তু শুষ্ক হাসি । হরিশ কাগজখানি ন্যায়তীর্থের দিকে বাড়াইয়ু দিয়া বলিলেন-নাও দেখ ! ---কি ? — সেই সায়েবের কাণ্ড । ‘ভারতে কি দেখিলাম’ তাই লিখেছে খবরের কাগজে ৷ এখানকার কথা তোমাদের পিতা-পুত্রের খুব প্রশংসা ক’রে সব লিখেছে। অমর আমাকে পত্র লিখেছে, কাগজও পাঠিয়ে দিয়েছে। অমর হরিশের বড় ছেলে—কলিকাতায় চাকরি করে ।