পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৮৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

R অগ্রহণয়ণ এই প্রসঙ্গে গত কয়েক বৎসরের মধ্যে বাংলাদেশে ৰন্ধশিল্পের যে উন্নতি হইয়াছে বক্ত। তাহার তথ্য-তালিক উদ্ভূত করি। বর্তমানে বাংলার কাপড়ের কলগুলি যে সমস্ত অসুবিধার মধ্যে কাজ -করিতেছে তাহ বিশদভাবে আলোচনা করেন । তিনি বলেন যে, বাংলা দেশে কাপড়ের কলগুলি উপযুক্ত মূলধন পাইতেছে না । এ জন্ত গত পাঁচ ছয় বৎসরের মধ্যে বাংলায় দেড় শতাধিক কাপড়ের কল রেজেক্টরীকৃত হইলেও উদ্ধার মধ্যে খুব সামান্তসংখ্যক কলই কাৰ্য্যক্ষেত্রে অগ্রসর হইতে সমর্থ হইতেছে। এই কারণে বাংলায় বৰ্ত্তমানে যে ২৮টি কল চলিতেছে, তাহাও আশানুরূপভাবে উন্নতি করিতে পারিতেছে না । দ্বিতীয়তঃ, বাংলা দেশে মিল-জাত সাব্য বিক্রয়ের কোন স্বৰ্যবস্থা নাই। বাংলায় যাহারা কাপড় বিক্রয় করিয়া থাকে, তাহাদের অধিকাংশের স্বাৰ্থ বাংলার বস্ত্রশিল্পের স্বার্থের বিরোধী ৷ অথচ বাংলার কাপড়ের কলগুলিরও এরূপ অর্থ-সঙ্গতি নাই যে, তাহারা নিজেরা নিজেদের প্রস্তুত বস্ত্র বিক্রয়ের ব্যবস্থা করিতে পারে । তৃতীয়তঃ, বস্ত্র-শিল্পের সম্বন্ধে নিয়মিতভাবে গবেষণা করিবারও বাংলায় কোন ব্যবস্থা নাই। চতুর্থত: বাংলার কাপড়ের কলগুলি দেশের লোকের বিভিন্ন শ্রেণীর রুচি ও প্রয়োজন নির্ণয় করিতে সচেষ্ট নহে । উহার ফলে সকলেই প্রায় এক শ্রেণীর জিনিষ প্রস্তুত করিয়া নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা তীব্র করিয়া তুলিতেছে। এই প্রসঙ্গে বক্তা শ্রমিকদের বিক্ষোভের ফলে বৰ্ত্তমানে বাংলায় কাপড়ের কলগুলির যে বিপদ উপস্থিত হইয়াছে তাহার বিষয়ও উল্লেখ করেন। প্রসঙ্গত তিনি বাংলায় তুলার চাষের প্রয়োজনীয়তা বিশেষভাবে বর্ণনা করেন । ক্টtহার মত এই যে, বাংলায় কাপড়ের কল স্থাপন করিবার সময় স্থান-নির্বাচন, কলের পরিকল্পন, যানবাহনেয় সুবিধা, আবহাওয়ার অবস্থ৷ স্বাস্থ্য ইত্যাদি সম্পর্কে পূর্ববত্তীগণের ভুলত্রুটি অতিক্রম করিয়া কার্য্যে অগ্রসর হইতে হইবে । অধিকন্তু কলের খরচা অত্যধিক বৃদ্ধি ন রয় কলে যাহাতে উপযুক্ত, দক্ষ ও অভিজ্ঞ ব্যক্তির সাহায্য লাভ করা যায় তাহার ব্যবস্থা করিতে হইবে । এই ভাবে কাজ করিলে এবং প্রয়োজনীয় মূলধন পাইলে বাংলায় বস্ত্রশিল্পের দ্রুত উন্নতি সাধিত হুইবে উহাই বক্তার অভিমত । সভাপতি শ্ৰীযুক্ত নলিনীরঞ্জন সরকার তাহার বক্তৃতায় ংলার শিল্প সম্পর্কে সাধারণভাবে কিছু বলেন। তিনি বলেল, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতির উপর রাষ্ট্রনৈতিক স্বাধীনত অনেকখানি নির্ভর করিতেছে। বাংলা দেশে শিল্পসম্পদ যথেষ্ট আছে-- যেমন পাট, কয়লা ও চা ; কিন্তু বঙালী ব্যবসাবিমুখ ; সহজে তাহার কোন শিল্পপ্রতিষ্ঠানের কাজে হাত দিতে চাহে না এবং যাহাদের টকা আছে তাহার বাবসায়ে টকা খাটাইতে সহজে রাজী হয় না । অনেকে মনে করেন যে বাঙালী ব্যবসা করিতে জানে না এবং টাক নষ্ট করে । কিন্তু তাহী সম্পূর্ণ সত্য নহে । এমন অনেক বাঙালী আছেন যাহার। বাবসায়ে বিপুল সফলতা অর্জন করিয়াছেন, এবং যাহার ব খ হইয়াছেন ঠাহাধের ব্যর্থ হওয়ার একমাত্র কারণ স্বপরিচালনা ও কৰ্ম্মদক্ষতার অভাব ! শিল্পবিষয়ে বাঙালীরা যাহাতে সজাগ হয় তাহার উপর বিশেয দৃষ্ট দিতে সকলকে অনুরোধ করিয়া প্রযুত নলিনীরঞ্জন সরকার খ্ৰীযুত জ্ঞানাঞ্জন নিয়োগী যে এই বিষয়ে ধারাবাহিক বস্তৃতার আয়োজন করিয়াছেন, তজ্জন্ত ঠাহাকে ধন্যবাদ দেন । جاك هة مساسع فف وهو বিবিধ প্রসঙ্গ—ইংরেজের প্রভুত্ব রক্ষার কৈফিয়ৎ ২৭৩ ইংরেজের প্রভুত্ব রক্ষার কৈফিয়ৎ ভারতবর্ষকে পূর্ণস্বরাজ বা অন্ততঃ আভ্যস্তরীণ সকল বিষয়ে পূর্ণ আত্মকর্তৃত্ব দিতে ব্রিটেন এখন কেন নারাজ, তাহার একটা কারণ কর্তৃপক্ষ এই বলেন যে, ভারতবর্ষে অনেক সংখ্যালঘু সম্প্রদায় আছে, তাহাদের স্বার্থ রক্ষা করিবার নিমিত্ত এবং তাহাদিগকে সংখ্যায় বৃহত্তম সম্প্রদায়ের বাস্তব বা সম্ভাবিত অগুণয় আচরণ, অবিচার বা অত্যাচার হইতে রক্ষা করিবার নিমিত্ত ইংরেজদের ভারতবর্ষে থাকা আবশ্বক ; নানা সম্প্রদায়ের মধ্যে অমিল, ঈর্ষ্যান্বেষ, বিরোধ যখন থাকিবে না, তখন ইংরেজরা এই দেশের প্রভুত্ব ছাড়িয়া দিবেন। এই কৈফিয়ৎটা পরীক্ষণ করা আবশুক । ব্রিটিশ জাতি যে এখনও ভারতবর্ষের প্রভু, তাহা র্তাহারা বা অন্য কেহ অস্বীকার করিতে পারেন না। এই প্রভুত্ব থাকা সত্বেও ষে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর বিধিবদ্ধ অবিচার বিদ্যমান, তাহার একাধিক দৃষ্টান্ত দেওয়া যায়। কিন্তু কেবল একটি দেওয়াই যথেষ্ট। বাংলা দেশে হিন্দুরা ংখ্যালঘু। ব্যবস্থাপক সভায়, তাহাদের শুধু সংখ্যার অনুপাতেই যত প্রতিনিধি প্রাপ্য হয়, তাহা হইতে তাহাদিগকে আইনের জোরে বঞ্চিত রাখা হইয়াছে ; অথচ মুসলমানের যে-যে প্রদেশে সংখ্যালঘু তাহাদিগকে তথায় তাহাদের সংখ্যানুসারে প্রাপ্য অপেক্ষ বেশী প্রতিনিধি আইন দ্বারা দেওয়া হইয়াছে। ইহা অবিচার ও অন্যায় আচরণ । সুতরাং ইংরেজের প্রভুত্ব থাকিলেই সংখ্যালঘুদের সম্বন্ধে অন্যায় হয় না বা ভবিষ্যতে হইবে না, কিংবা তাই নিবারণ করিবার নিমিত্তই ইংরেজ এদেশে প্রভু হইয়া আছেন ও থাকিবেন, ইহা স্বীকার্য্য নহে | যাহারা সংখ্যায় কম, তাহাদের সম্বন্ধেই অদ্যায় ব্যবস্থা যে অনুচিত তাহা নহে। যাহারা সংখ্যায় অধিকতম, তাঙ্গদের প্রতি অবিচার ও অন্যায় নিবারণ করাও শাসক জাতির কৰ্ত্তব্য । কিন্তু ব্রিটিশ ভারতবর্ষের ও সমগ্র ভারতবর্ষের বৃহত্তম সম্প্রদায় হিন্দুদিগকে সমগ্রভারতীয় ব্যবস্থাপক সভায় তাহাদের সংথ্যা অনুসারে প্রাপ্য যথেষ্টংখ্যক প্রতিনিধি না দিয়া অনেক কম প্রতিনিধি দেওয়!