পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অগ্রহায়ণ বিবিধ প্রসঙ্গ—গান্ধীজীর কুৎসার প্রভিবাদ । ২৭৫ থামাইবার বা বাধাইবার নিমিত্ত তৃতীয় পক্ষ নাই। ভারতবর্ষ স্বরাজ পাইলে সকল সম্প্রদায়ের ভারতীয়েরাও পারস্পরিক ঝগড়া বিবাদ অপেক্ষ দেশহিতের নিমিত্ত সম্মিলিত চেষ্টা অধিক করিবে, তাহাতে সন্দেহ নাই। উচ্চতম পদস্থ ব্রিটিশ রাজপুরুষের প্রাদেশিক মন্ত্রীদের কাৰ্য্যের প্রশংসা করিয়াছেন। তঁাহাদের অধিকাংশ সমগ্রভারতীয় সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দু সম্প্রদায়ের লোক। এই প্রশংসা দ্বারা প্রমাণিত হইতেছে যে, হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠর সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার বা তাহাদের স্বার্থের ক্ষতি করে নাই । কংগ্রেস প্রধানত: সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দু সভ্য লইয়া গঠিত। ইহা পঞ্চাশের অধিক বৎসরের ইতিহাসে এমন একটি প্রস্তাবও ধাৰ্য্য করে নাই, এমন কোন কাজই করে নাই, যাহা কেবল সংখ্যাগরিষ্ঠদের স্বার্থসিদ্ধির উপায় এবং সংখ্যালঘুদের পক্ষে অনিষ্টকর। অতএব, সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার ও তাহাদের স্বার্থহানি নিবারণের নিমিত্ত ইংরেজের ভারতবর্ষে প্রভু হইয়া থাকা আবশ্বক, এরূপ -दर्जेj भाँग्रे न ! অন্য দিকে ইংরেজের প্রভুত্ব থাকা সত্ত্বেও সংথ্যালঘুদের উপর যে অত্যাচার হইতেছে তাহার প্রমাণের অভাব নাই । একটি মাত্র দৃষ্টান্ত লউন। উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশে হিন্দু ও শিখরা সংখ্যালঘু। তাহাদের মধ্য হইতে নারী ও পুরুষ হরণ ও হত্যা এবং তাঙ্গাদের সম্পত্তি দলবদ্ধভাবে লুটপাট লাগিয়াই আছে। সংখ্যালঘুদের স্বার্থরক্ষা এবং তাহাদের উপর অত্যাচার নিবারণ গবর্ণরের একটি বিশেষ দায়িত্ব । উত্তর-পশ্চিম সীমাস্ত প্রদেশের ইংরেজ গবর্ণরের দ্বারা এই দায়িত্ব পালিত হইতেছে না । সমূলক-অভিযোগ-বিশারদ মৌলবী ফজলল হক সাহেব একাধিক বার বলিয়াছেন বটে যে, বিহারে ও যুক্ত প্রদেশে সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দু মন্ত্রীদের শাসনকালে মুসলমানদের উপর বহু অত্যাচার হইয়াছে। কিন্তু তিনি একটি অত্যাচারও প্রমাণ করিতে পারেন নাই । জাতিভেদ বিনাশ এবং অস্পৃশ্বতা দূরীকরণ প্রভৃতি স্বারা মানুষে মাচুষে সামাজিক অসাম্য লোপ ও ঐক্য বৃদ্ধির চেষ্টা ইংরেজ সরকার করেন নাই, ভারতবর্ষের লোকেরাই করিয়াছে এবং এখনও করিতেছে। ইংরেজ প্রভূত্বের অবসানের পরও এই কাজ, যত দিন আবশ্যক, চলিতে থাকিবে । গান্ধীজীর কুৎসার প্রতিবাদ গান্ধীজীর ব্যক্তিগত চরিত্রের নিন্দ কিছুকাল ধরিয়া বোম্বাই অঞ্চলের কতকগুলা কাগজ করিয়া আসিতেছিল । তাহাতে এক জন অত্যুচ্চপদস্থ ইংরেজও যোগ দেয়। তিনি তাহার কোন প্রতিবাদ ইতিপূর্বে করেন নাই। সম্প্রতি ব্রিটিশ জাতির অন্যতম গোয়েন্দা এডোআর্ড টমসন,গান্ধীজীর চরিত্রের বিরুদ্ধে পালেমেণ্টের সভ্যদের মধ্যে কানাধুবা চলিতেছে, এই কথা লক্ষ্ণৌতে ও ওআধর্ণয় বলায়, গান্ধীজী *হরিজন” পত্রিকায় লিখিয়াছেন তাহার কুংসাসূচক সমুদয় কথা সবৈব মিথ্য । তিনি যদি ইহা না বলিতেন, তাহ হইলেও আমরা একটুও বিশ্বাস করিতাম না যে, র্তাহার কুৎসাগুলাতে সত্যের লেশমাত্রও আছে। র্তাহার এই প্রতিবাদ আবশ্যক ও র্তাহার আত্মসন্ত্রম-সঙ্গত (consistent with his dignity ) rêvft* f* না, তাহার আলোচনা করিব না । কিন্তু এই প্রতিবাদের একটি সার্থকতা স্বীকার্ষ্য । তিনি প্রতিবাদ না করিলে তাহার মৃত্যুর পর তাহার কুংসাকারীরা বলিতে পারিত, “তিনি র্তাহার অন্য সব নিন্দার বা সমালোচনার জবাব দিয়াছিলেন, কিন্তু এই কুৎসাটার জবাব দেন নাই, অতএব এটা সত্য” ; তিনি প্রতিবাদ করায় সেরূপ কুতর্ক করিবার পথ রুদ্ধ হইল। আমাদের এই মস্তব্যের কারণ আছে । রাজা রামমোহন রায় তাহার কুৎসার প্রতিবাদ করেন নাই অতএব তাহা সত্য, এরূপ কথা এখনও শুনা যায়। অথচ তিনি যে কেন তাহা করেন নাই তাহ তিনি নিজেই লিখিয়া গিয়াছেন। যথা, তাহার “পথপ্রদান” পুস্তিকার ভূমিকায় লিখিত আছে— “কিন্তু আমরা স্বয়ং তিন কারণে দুর্বাক্যের বিনিময় হইতে ক্ষাপ্ত রহিলাম। প্রথমত, যে কেহু উত্তরে কট ক্তি শুনিবার আশঙ্কা না করিয়া আপন অধীন ভিন্ন অন্য ব্যক্তির প্রতি গহিত বচন প্রয়োগ করিতে সমর্থ হয়, তাহার প্রতি উত্তরে কটুক্তি কখনের প্রয়োজন ৰে তাহার ক্ষোভ ও লজ্জা ও মনঃপীড়া এ সকল না হইয়া কেবল তত্ত্ব ল্য নীচত্ব সেই উত্তর প্রদাতার স্বীকার মাত্র হয়, সুতরাং (নীচস্যোচ্চৈর্ভাষাঃ