পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

§ \va নাম বতর্মানে অল্প লোকেই জানে। বিষ্ণুপুরের পূর্বদিকে নিবিড় অরণ্যে 'কোড়ামুর গড়’ নামে একটা স্থান আছে। এখানে যে পূর্বকালে এক রাজার গড় ছিল বাঁকুড়াবাসী কেহ জানেন কি না সন্দেহ । কয়েক বৎসর পূর্বে আমাকে অনুসন্ধান করিতে হইয়াছিল। তখন জানিয়াছি লোকে ‘কোটেশ্বর’ ( অর্থাৎ দুৰ্গেশ্বর ) শব্দের অপভ্রংশে ‘কোড়াস্থর করিয়াছে। কেহ কেহ ডুমনীর গড় বলে, কিন্তু দেথে নাই । চ-চরিতে এই স্থানের উল্লেখ দুইবার আছে । আমরা জানি, চন্দননগর ভাগীরথীর পশ্চিম পার্থে ; এক কালে যে উগ পূব পাশ্বে ছিল, তাহা বোধ হয় অল্প লোকেই জানে। চ-চরিতে চন্দননগর পূর্বপাশ্বে। চ-চরিতে আছে, চণ্ডীদাস রঙ্গনাথপুর নামক গ্রামে কয়েক দিন ছিলেন। গ্রামের নিকটে গঙ্গা, গঙ্গায় এক চর, কাশতৃণে আচ্ছাদিত । লোকে চরটিকে সর্পদ্বীপ বলিত। এখন রঙ্গনাথপুর নামে কোন গ্রাম মাই। কিন্তু অনুসন্ধান দ্বারা জানা যায়, বত মান রঙ্গপাড়া নামক গ্রামের নিকটবর্তী গঙ্গার গতি পরিবর্তিত হইয়াছে। চ-চরিতে আছে দিল্লীরাজ ফিরাজ খ ও পাণ্ডুরাজ শমমুদি ( ৪০১ পৃ ) মল্লভূম আক্রমণ করিয়াছিলেন। দিল্লীরাজ মহমদি ( ৪৪১ পূ ) অত্যাচারী ছিলেন। পাণ্ডুআর সিকন্দর-শাহ ইসলাম ধৰ্ম্ম প্রচারে মোল্লা নিযুক্ত করিয়াছিলেন । তাহার সহিত শাহজাদার কলহ হইয়াছিল, ইত্যাদি একটিও মিথ্য প্রমাণিত হয় নাই। এ সকল ইতবৃত্ত আধুনিক সাধারণ কবির অজ্ঞাত। হজরত আলী চোরাঘাতে নিহত হইয়াছিলেন ( ১৩৪১ পূ)। অমুসন্ধান দ্বারা আধুনিক হিন্দু কবি জানিতে পারেন। অজরের পূর্ণ। দীর্ঘ ৭ জানিতে পারেন ( ১২৪২ পূ)। কিন্তু কোন হিন্দুর লিখিত পুস্তকে পাওয়া যায় না। কবি অবলীলায় অনিয়াছেন । আমার মনে হয়, উদয়-সেন ফাসী কেতাব পড়িতেন । বিশেষ দ্রষ্টব্য, চ-চরিতে বাসলী দেবী ও দেবীর অনুচর ভৈরব যখন তখন আবিভূত হইয়াছেন। বাসলী দেবী কোথাও মেঘের সহিত মিশিয়া কথা কহিতেছেন, প্রবাসী | ১৩৪৬ কোথাও রণরঙ্গিণী হইয়াছেন। বিষ্ণুপুরের ঠাকুর মদনমোহন অন্নপাক করিতেছেন, মাথায় মোট বহিতেছেন, চণ্ডীদাসের নিক্ষিপ্ত বাণে র্তাহার বক্ষে ক্ষতচিহ্ন হইয়াছে । সিকন্দর-শাহ সৈন্ত দ্বারা চণ্ডীদাসকে পাণ্ডুআয় ধরিয়৷ আনিয়াছেন, কাফের চণ্ডীদাসকে বধ করা শাহের উদ্ধেশ্ব ছিল । চণ্ডীদাসকে রক্ষার নিমিত্ত বাসলী দেবী বালিকাবেশে লছমনী নামে শাহের পালিত কন্যা হইয়াছেন । এক কুলবধু যোগিনী সাজিয়া পাণ্ডুআয় উপস্থিত, ভৈরবীবেশে যুদ্ধ করিতেছেন। কোথায় কোন আধুনিক কবির কল্পনা দেবদেবীর সাক্ষাং পাইয়াছে ? যে দিন হইতে দেবদেবীর প্রতিমা মিউজিয়মে প্রদশিত হইতেছে, ফটো তোলা হইতেছে, সে দিন হইতে তাইরিা অন্তহিত হইয়াছেন। এখন চ-চরিতের কাহিনী আজগুবি মনে হইবে । কিন্তু শতচেষ্টাতেও আষাঢ়্যে গল্পেও প্রবেশ করিবে না । কবির সংস্কৃত শব্দজ্ঞান ও শাস্ত্রজ্ঞান অসাধারণ । এমন সব সংস্কৃত শব্দ কল্যাণী-উপাখ্যানে প্রয়োগ করিয়াছেন যে বুঝিতে হইলে সংস্কৃত কোষ ও ব্যাকরণ পুনঃ পুনঃ খুলিতে হয়। আমি এই ক্লাস্তিকর কম। শ্ৰীযুত মহেন্দ্রনাথ-সেনের হাতে দিয়াছিলাম। তাই।র বংশের পুর্থীতে তাহার নাম যুক্ত রাখাও কৰ্ত্তব্য । তিনি পাণ্ডিত্যে কবির যোগ্য প্রপৌত্র, টাকা পড়িলেই বুঝিতে পারা যায়। এ কালের কবি রামায়ণ, মহাভারত ও দুই চারিটা পৌরাণিক উপাথ্যান অবগত আছেন, কিন্তু বোধ হয় দণ্ডীকাব্য, তুলসী-দাসী রামায়ণ, সারল-দাস-কুত ওড়িয়া বিরাট-পর্ব হইতে দৃষ্টাস্ত তুলিবেন না। কবি একখানা পুরাণ হইতে ভূগোলবৰ্ণন লইয়াছেন । সে পুরাণ আমার অজ্ঞাত। এক কর্ণাটেশ্বরের উপাখ্যান দিয়াছেন, তাহারও মূল আমার অজ্ঞাত। গ্রীকবীর আলেকজাণ্ডার দেশ-ভাষায় ‘অলিক সুন্দর, অলোক সুন্দর’ হইয়াছিলেন, কিন্তু তাইার সহিত নাগকন্যার উদ্বেশ পাই নাই (১২৭২ পৃ)। গজনীর মামুদ ও পেচকের কথোপকথন, জটিলের দধিভাণ্ড যে কতকাল হইতে প্রচলিত আছে, কে জানে। আমার বিশ্বাস গত শতবর্ষের মধ্যে রচিত একটা উপাখ্যানও