পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

مواد প্রবাসী లిg& ভ্ৰমাত্মক চৈতন্য অনুভব করে। সেখানে আহবানের প্রয়োজন আছে । শশিশেখর বলিল-জ্ঞানযোগীর ধ্যান নিদ্রাও নয়, স্বপ্নও নয়। যদি স্বপ্ন হয় তবে সে জ্ঞানযোগী নয়, অন্যথায় আহবানকারীই ভ্রান্ত—সেই স্বপ্নাতুর চৈতন্যের প্রয়োজন তারই । মহামহোপাধ্যায় গষ্ঠীর মুখে বলিলেন—পণ্ডিত শশিশেখর, সভাপতি হিসাবে তোমাকে আমি নিবৃত্ত হ’তে আদেশ করছি । ন্যায়তীর্থ, আমি আপনাকে সবিনয়ে অতুরোধ করছি । উভয়েই নিরস্ত হইলেন ; কিছুক্ষণ পর ন্যায়ুতীর্থ বলিলেন—মহামহোপাধ্যায় যদি অনুমতি করেন তবে আমি উঠতে পারি। শরীর বড় অমুস্থ ব’লে মনে হচ্ছে আমার । মহামহোপাধ্যায় ব্যস্ত হইয়া উঠিলেন, ন্যায়তীর্থ তাহাকে নিরস্ত করিয়া সভাস্থল ত্যাগ করিলেন । কিছুক্ষণ পরই পণ্ডিত শশীশেখর যুগধৰ্ম্মকে স্বীকার করিয়া বৌদ্ধ দর্শন পাশ্চাত্য দর্শনের সহিত সমন্বয় করিয়া দর্শনের নূতন অধ্যায় রচনার প্রস্তাব উত্থাপন করিল। তীক্ষুব্যঙ্গে গণ্ডীবদ্ধ মনোভাবকে বিদ্ধ করিয়া অকাট্য যুক্তি দেথাইয়। সুললিত ভাষায় অনর্গল সে বলিয়া গেল । মহামহোপাধ্যায় তাহাকে স্বীকার করিয়া বলিলেন— তোমার প্রস্তাব সাধু। তোমাকে আমি সমর্থন করি । কিন্তু সে ভার নিতে হবে তোমাদেরই । আমরা প্রাচীন, আমাদের সে আর সাধ্যাতীত । 赛 豪 赛 বাসায় আসিয়া ন্যায়তীৰ্থ বসিয়া ছিলেন স্তস্তিতের মত । জর গ্রস্তের মত মাথার মধ্যে একটা প্রদাহ তিনি অনুভব করিতেছিলেন । পরিপূর্ণ জাগ্রত অবস্থাতেও পারিপাশ্বিককে তিনি স্পষ্ট প্রত্যক্ষরুপে উপলব্ধি কবিতে পারিতেছিলেন না । রাজপথে মাচুর্য গাড়ী ঘোড়া যাইতেছে আসিতেছে, কলরবের কথা কানে আসিতেছে, কিন্তু চিত্তের স্পশাচুভূতি যেন হারাইয়া গিয়াছে। মুখ দিয়া একটা নিশ্বাস ফেলিয়া, মাথা নাড়িয়া তিনি যেন জাগিয়া উঠিবার চেষ্টা করিলেন । হ্যা—তিনিই স্বপ্নাতুর, তারই চৈতন্তের প্রয়োজন। তাড়াতাড়ি বাহিরে আসিয়া তিনি বালতি হইতে জল লইয়া বার-বার মাথাটা ধুইয়া ফেলিলেন । মাথা ধুইয়া তিনি থানিকট সুস্থ বোধ করিলেন । নিজেই বিছানাট বিছাইয়া লইয়া শুইয়া পড়িলেন । প্রায় সমস্ত দিনটা আচ্ছন্নের মত পড়িয়া থাকিয় অপরাহ্লে তিনি অপেক্ষাকৃত সুস্থ হইয়া উঠিয়া বসিলেন। র্তাহার ছাত্র মণিভূষণ বলিল—শশীদাদা এসেছিলেন দু-বার। কিন্তু আপনি ঘুমুচ্ছেন দেখে ফিরে গেছেন। ন্যায়ুতীর্থ গলাট পরিষ্কার করিয়া লইলেন, সে-শন্ধের উচ্চতায় এবং অস্বাভাবিকতায় ছেলেটি চমকিয়া উঠিল । ন্যায়তীৰ্থ বলিলেন—এবার এলেও তাকে নিযেধ ক’রে দিয়ে, কোন প্রয়োজন নাই । ব’ল- চৈতন্য আমার হয়েছে, আহবানে প্রয়োজন নেই । খড়ম জোড়াটা পায়ে দিয়া তিনি ঘরের মধ্যেই পদচারণা আরম্ভ কবিলেন, উচ্চ কঠোর শব্দ– অস্বচ্ছন্দ ব অসমচ্ছন্দ নয়, অত্যন্ত দৃঢ় এবং কঠিন সে শব্দ । কিছুক্ষণ পর আবার ছাত্রটি আসিয়া শঙ্কিত ভাবে দাড়াইয়া ন্যায়তীর্থের মুখের দিকে চাহিল । স্বায়ুতীর্থ আবার তেমনি ভাবে গল| পরিষ্কার করিয়া লইয়া বলিলেন —কি ? —রায় বাহাদুর জ্ঞানরঞ্জন বাবু এসেছেন দেপ করবেন। ব্যস্ত হইয়া হায়তীৰ্থ বাহিরে আসিয়া সম্মভরেক্ট রায় বাহাদুরকে আহবান করিলেন—আসুন, আসুন । হে-হে-হে শব্দে এক বিচিত্র হাসি রায় বাহাদুর হাসিয়া থাকেন, সেই হাসি হাসিয়া বলিলেন—সায়েব পাঠালে আপনার কাছে । যেতে হবে আমার সঙ্গে বাপ রে বাপ—থাটিয়ে মেরে ফেললে মশায়, আর বলবেন না । আমার দফা রফা, সব তাতেই বেটার আমাকে না হ’লে চলবে না। চলুন, গাড়ী আছে আমার । ন্যায়তীৰ্থ বলিলেন -এখুনি ? হে-হে করিয়া আবার হাসিয়া রায় বাহাদুর বলিলেন, ই্য, হ্যা। খেতাব দেবে মশায়—আপনি তো নেবেন না, তাই আপনার ছেলেকে খেতাব দেবে মহামহোপাধ্যায়। তবু আপনাকে এক বার জিজ্ঞেস করা তো দরকার। চলুন, চলুন।