পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

తిఙ్ఞ যোগেশ নিখিলকে কি সঙ্কেত করল । নিখিল অমনি বাইরে যাবার দরজাটি বন্ধ করে দিলে । মাষ্টারমশায়ের জন্য কোন দুর্ভাবনা ছিল না ; কারণ বেলা দশটার আগে তিনি কোনদিন কোন কারণেই ঘুম থেকে উঠতেন न1 ।। -- তার পর সকলে মিলে ছুটাছুটি ক’রে নস্তুকে পাকড়াও করা হ’ল । দেখা গেল, সত্যিই তার কাছার খুটে পয়সা বাধা—একটা আধুলি - সেদিন আমি বিস্মিত হয়েছিলাম, যোগেশ কি ক’রে জানলে যে নস্তু পয়সা এনেছে । এই জন্যই বলছিলাম, তার উকিল হ’লে ভাল হ’ত । মক্কেল ঠেঙিয়ে পয়সা আদায় করতে পারত। কিন্তু ঐ রকমই ছিল নস্তুর স্বভাব । পয়সা কড়ি হাতে এলে আমাদের কিছু না খাইয়ে সে পারত না । আর একটি বন্ধু ছিল আমাদের বিমলেন্দু। বিমলেন্দু এখন কোনও কলেজে প্রোফেসারি করছে শুনেছি। আমাদের দু-বেলা নিয়মিত আহার না জুটলেও বাংলা ও ইংরেজী কয়েকখানি নামকরা মাসিক, সাপ্তাহিক এবং দৈনিক কাগজ আমরা নিয়মিত কিনতাম। আমরা কিনতাম বললে সত্যের কতকটা অপলাপ হবে— বিমলেন্দুই আমাদের অনেক সময় কিনে দিত। এই আশ্রমে আমাদের এক কুষ্টি-সংঘ ছিল । এখানে সাহিত্য, ইতিহাস, সমাজ, রাজনীতি এবং আরও অনেক বিষয়ের আলোচনা হ’ত । দুরের গ্রামে নদীর ধারে যে মুচি ও বাগী পাড়া ছিল—প্রতি শনি রবি বারে গিয়ে সেখানকার অশথতলায় আমরা অবৈতনিক পাঠশালা বসাতাম । ૨ স্বপ্ন ? গরমের ছুটিতে কলেজ বন্ধ হয়ে গেছে । মাষ্টারমশায় সপরিবারে চলে গেছেন। উপরের ঘরগুলি তালা বন্ধ । আলুবাবু, নিখিল, ভবানী এরাও নেই। কেউ আই. এ. পরীক্ষা দিয়ে, কেউ বা কলেজ বন্ধ হওয়ায় বার্ষিক পরীক্ষার পরই বাড়ী চ'লে গেছে । সেবার এপ্রিলের মাঝামাঝি ●बांग्रेौ Nesov, 蠟 বি. এ. পরীক্ষা হচ্ছিল । সুতরাং আমর-দুই তিনটি পরগাছা তখনও আশ্রমটি অঁাকড়ে পড়ে আছি । আমাদের তিন জনের আবার পাঠ্য বিষয় এক ছিল না । কারও দর্শনশাস্ত্র, কারও অর্থশাস্ত্র, কারও বা ছিল ইতিহাস । যে-রাত্রের কথা বলছি তার পরদিন মিতু বা যোগেশের কোন পরীক্ষা ছিল না। ছিল কেবল আমার একার। যোগেশ গেল বিমলেন্দুর বাড়ী একসঙ্গে অর্থশাস্ত্র পড়বে ব’লে, আর মিতু গেল নম্বর বাড়ী নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে। তারা আর সে-রাত্রে ফিরবে না ব’লে গেল । কাউকে বাধা দিলাম না এবং অত বড় বাড়ীতে একা থাকবার জন্তে কোন আপত্তিও মনে হ’ল না । পরদিনই আমার দর্শনশাস্ত্রের পরীক্ষণ । বাহির সকল দিকের দরজা বেশ ক'রে বন্ধ ক’রে স্টিফেন, স্টাউট এবং সালি খুলে বসলাম। বৈশাখ মাস। দুরপ্ত গরম । তার উপর মশার অত্যাচার । ঘরে টিকতে পারলাম না। বাইরে উচু রোয়াকের উপর মাদুর বিছিয়ে পড়তে বসলাম । দেখা গেছে, ঠিক পরীক্ষার সময় চোখের পাতায় ঘুম যেমন জড়িয়ে আসে আর কোন সময়ে তেমন আসে না ! রাত্রি তখন দুটাে হবে । ঘুমে চোখের পাতা বুজে আসছে—জোর ক’রে কতক্ষণ চোখ মেলে থাকা যায় ? অগত্য আলো কমিয়ে দিয়ে সেইখানেই শুয়ে পড়লাম । ইচ্ছ, একটু ঘুমিয়ে নিয়ে আবার উঠে পড়তে বসব। বেশ একটু তন্ত্রা এসেছে। মনে হ’ল রোয়াকের পাশ দিয়ে কে যেন চলে গেল ! পরক্ষণেই চুড়ির ঝুনঝুন শব্দে ঘুম ভেঙে গেল । তাড়াতাড়ি উঠে বসলাম । যেন পরিষ্কার দেখলাম, উচু রোয়াকের নীচে দিয়ে তাতের ডুরে শাড়ী-পরা একটি স্বকেশ তরুণী চলে যাচ্ছে। তখনই আলোটি বাড়িয়ে দিয়ে কৌতুহলভরে তার পেছন পেছন গেলাম—কিন্তু কোথায় তরুণী ? বাগানের শিউলি গাছটির ছায়ায় এসে আর তাকে খুঁজে পেলাম না! আলো হাতে নিয়ে সমস্ত বাড়ী তন্ন তন্ন ক’রে খুঁজলাম। সদর দরজা ঠিক তেমনি বন্ধ আছে, খিড়কির দরজাও কেউ খোলে নি । ভিতর এবং