পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পৌষ মায়া vate পাশের আবগারী ইনস্পেক্টরের বাসা থেকে আমাদের বাবুর লক্ষ্য রাখবার অবকাশ মাত্র ছিল না। কিন্তু এক ফুলবাগানে অনেক আবর্জনা এবং ছেড়া কাগজপত্র দিন তার সে অবকাশ এসে পড়ল। ফেলা হ’ত—এই নিয়ে ওদের সঙ্গে একটু মনোমালিন্ত হয়। গৃহিণী পূজা-আহ্নিক এবং ছুংমার্গ নিয়ে সৰ্ব্বদা ব্যস্ত ভাবলাম, এ কি তবে ঐ আবগারী ইনস্পেক্টরের বাড়ীর থাকেন ; কাজেই সেদিন রাধুনি-ঠাকরুণের অমুখ হওয়ায় কেউ ? রাধুনি-ঠাকরুণের মেয়ে মায় ভাতের থালা নিয়ে শরৎ কিন্তু আমরা ত ওদের শক্রপক্ষীয়। আর, প্রেমের বাবুর সম্মুখে উপস্থিত হ’লে শরৎবাৰু চশমার ভিতর BBB BBS BB BBBBB BB BBB BSBBB BS BBB BB BBBB BBBBB BB BBBB BBB বাড়ীর সকলেই জানেন। বুঝতে পারলাম না—মেয়েটি নেত্রে তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “তুমি কে ?” কে, কেন এল, কি ক’রে এল এবং গেলই বা কোথায় ! মায়া কি উত্তর দেবে ভেবে পেলে না ; ভাতের থালাএ স্বপ্ন ? মায়া ? না মতিভ্ৰম ? খানি তার সম্মুখে রেখে দরজার পাশে গিয়ে উত্তর করল, পরীক্ষার পড়া পড়তে গিয়ে ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে নিশ্চয় “আমি মায়া । মার অস্থখ করেছে তাই—” প্রেমের স্বপ্ন দেখি নি। চোখের উপর একটি এলায়িত- শরৎবাবু গম্ভীর হয়ে বললেন, "হু ” কেশ তরুণী তার চুড়ির শক ক’রে চলে গেল এটাই বা মায় দশ বৎসর বয়সের সময় বিধবা হয়েছে। মিথ্যা বলি কি ক’রে । তার পর সে তার মায়ের কাছে এই সংসারে আরও পাচটা সাইকলজির বইয়ের পৃষ্ঠা উলটে ‘ইলুগুন ‘হ্যালুসিনেশুন' বছর কাটিয়ে দিয়েছে । আজি সুদীর্ঘ পাঁচ বৎসর পরে এমন কি সোমনাম্রলিজম-এরও আগাগোড়া পড়ে শরৎ বাৰু তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “তুমি কে ?” ফেললাম, কিন্তু আকস্মিক এই তরুণী-দর্শনের কোন রাত্রি সাড়ে বারটার সময় গৃহিণীর ডাক পড়ল । যুক্তিই সেখানে খুজে পেলাম না । গৃহিণী স্বপাকে এবং এক বার মাত্র নিরামিষ বিশুদ্ধান্ন গ্রহণ করেন। তখনও তার রান্না হয় নি। এক ঘটি গঙ্গাজল ছিটোতে ছিটোতে তিনি শরৎবাবুর ঘরের দরজা C) পৰ্য্যস্ত এসে বললেন, “কি ?” মায়া অনেক দিন পরে আজ হঠাৎ শরৎবাবুর মনে হ’ল,— পরদিন সকালে সনৎ-দা এলেন। সনং-দা অকৃতদার অসম্ভব ! এই তার স্ত্রী ! বৈষ্ণব, বহু দেশ ভ্রমণ ক’রেছেন এবং খুব ভাল কীৰ্ত্তন বুঝলেন, তাকে কোন কথা বলে লাভ নেই। বললেন, গাইতে পারেন। কাছেই তাদের বাড়ী। সনৎ-দার “কিছু না, যাও ” বয়স আমাদের চেয়ে ঢের বেশী হ’লেও আমাদের সঙ্গে শরৎবাবু তার পুত্র শিবেন্দ্রকে ডাকলেন । শিবেন্দ্র ঠিক বন্ধুর মতই ব্যবহার করেন। তখন হয়ত বিদ্যাপতি, চণ্ডীদাস, শেলী, কীটস্ কিংবা সমস্ত শুনে সনৎ-দা বললেন, “এই বাড়ীতে কখনও একা শরৎচন্দ্রের ইন্দ্রনাথ পড়ছিল । অথবা সে কিছুই পড়ছিল থাকতে আছে । ধন্যি সাহস তোর যা হোক ৷” না, বালিশের উপর ভর দিয়ে কবিতা লিখছিল । হয়ত বা বিস্মিত হয়ে জিজ্ঞাসা করলাম, "কেন ?” , সে কবিতাও লিখছিল না—শুয়ে শুয়ে কি ভাবছিল। সনৎ-দা বললেন, “এ-বাড়ী এখন গিডউীরাম আগর- মোট কথা শরৎবাবুর ডাক সে শুনতে পায় নি । ওয়ালা কিনে নিয়েছে। আসলে এ-বাড়ী ছিল শরৎ মায়া ছুটতে ছুটতে এসে তাকে ডেকে দিল । “শিব-দা, বাড়ুৰ্য্যে উকিলের। শরৎবাবু ছিলেন একটা ডাকসাইটে শুনছ ? শিগগীর উপরে যাও—বাবা ডাকছেন।” উকিল । তার বাইরের ঘর সর্বদা মক্কেলে গিস গিস এত রাত্রে পিতৃদেবের এরূপ আকস্মিক ভাবে ডাকবার করত। এই জন্ত সংসারের কোনও কিছুতে শরৎ কারণ কি বুঝতে না পেরে শিবেন্দ্র ত্রস্তপদে শরৎবাবুর