পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩৮১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পৌষ , তবে কি জানিস—এই মামলা-মোকদ্দমায় পড়ে আমি নিজে কিছু দেখতে পারলাম না । ছেলেগুলা সব বোকা— ছেলেমানুষ তো ! বছর বছর হিসেব ক’রে যদি ব’লে দিত যে মাঝি, এই এই তোদের সব বাকী থাকল—তবে তো এই গোলটি হ’ত না ! আমি এবার খাতা খুলে দেখে একবারে অবাক ! কমল খানিকট খইনি ঠোটের ফঁাকে পুরিয়া বলিল— হু—আমরাও তো তাই হলম গো ! শ্ৰীবাস ক্রুদ্ধ ভঙ্গিতে বলিয়া উঠিল—তার জন্যে ছেলেগুলোকে আমি মারতে শুধু বাকী রেখেছি। আবার ক্ষণিক নীরবতার পর সে বলিল—এবার থেকে স্থ—ক্ষ্ম হিসেব ক’রে আমি নিজে ব’সে তোদের ঝঞ্চাট মেরে দোব । কিছু ভাবিস না তোরা । কমল বলিল—ছ, সেইটি তু ক'রে দিবি মোড়ল । —নিশ্চয় ! এখন এক কাজ কর, তোরা বাপু খাতাতে যে বাকী আছে সেই বাকীর হিসেবে একটি ক’রে টিপছাপ দে । আর কার কি ধান চাই বল, আমি জুড়ে দেখি কত ধান লাগবে মোটমাট । তার পর লে কেনে ধান কালই । কমল টিপছাপের নামে আবার চুপ করিয়া গেল। টিপসহিকে উহাদের বড় ভয় । ঐ অজানা কালো কালে দাগের মধ্যে যেন নিয়তির দুৰ্ব্বার শক্তি তাহারা অনুভব করে। খত শোধ করিতে না পারিলে শুধু তো এখানেই শাস্তি হইয়া শেষ হইবে না, মরণের পর ‘ভগোয়ানে'র নিকট সাজা লইতে হইবে যে ! আরও, খত কেমন করিয়া সৰ্ব্বস্ব গ্রাস করে সে তো সে এই বয়সে কত বার দেখিয়াছে ! কালে দাগগুলো যেন কালো ঘোড়ার মত ছুটিয়া চলে ! শ্ৰীবাস বলিল—তোদের তো আবার পুজো-আচ আছে, ধান পোতার আগে সেই সব পূজোটুজে না ক’রে তে| চাষে লাগতে পাবি না ! আবার একটা দীর্ঘনিশ্বাস ফেলিয়া কমল বলিল—স্থ । —কি পরব বলে রে একে-নাম কি পরবের ? —নাম বেটে ‘বাতুলী’ পরব। আবার ‘কালেতা' পরবও বুলছে ৷ ‘রোওয়া’ পরবও বুলে। যারা যেমন মন করে বুলে । به اندا ---- 3 কালিন্দী לרפא —পরবে কি হবে তুদের ? কমল এবার খানিকটা উৎসাহিত হইয়া উঠিল, বলিল— ‘জাহর সারনে?—আমাদের দেবতার থানে গো-পূজো হবে, ‘এডিয়াসিম’—আমাদের মোরগাকে বলে 'এডিয়াসিম’— ঐ মোরগ কাট হবে, পচুষ্ট মদ দিব দেবতাকে, শাক দিব দু-তিন রকম। তার পরে তুর রাধা-বাড়া হবে উই দেবতা-থানে, লিয়ে থেয়ে দেয়ে সব নাচগান করব । —তবে তো অনেক ব্যাপার রে! তা আমাদিকে নেমস্তয় করবি না ? কমল বড় বড় দfত মেলিয়া হাসিতে আরম্ভ করিল, কৌতুক করিয়া বলিল-আপুনি আমাদের হাড়ি মদ খাবি মোড়ল ? শ্ৰীবাস বলিল—তা আমাকে না হয় দোকান থেকে “পাকি মদ’ এনে দিবি । কমল পশ্চাৎপদ হইল না, বলিল—ছ তা দিবো ! হা-হা করিয়া হাসিয়া শ্ৰীবাস বলিল—ন না, ও আমি তোকে ঠাট্টা করছিলাম । কমল মাথা নাড়িয়া বলিল—উ টু সি হবে না । আমি যখুন নেওতা দিলাম, তখুন তুকে উটি লিতে হবে। —বেশ তা দিস । —জল তো হয়েই গেল গো । এই বানটি কম্লেই পূজো করব । তার পরে চাষে লেগে যাব। তা আপুনি ধান দিবি তবে তো হবে । o সে হবে কবে তোদের ? —বেশ । কাল সবাইকে নিয়ে আয় এসে টিপছাপ দিয়ে দে, পরশু নিয়ে নে ধান । ধান তো আমার এই থানেক্ট আছে । কমল স্থান মুখে বলিল—তাই দিবে সব কাল । গণেশ বলিল—মোড়ল, দোকান নিতে সব সকালে সকালে পাঠিয়ে দিস একটু । আজ তো আবার তোদের অনেক কিছু চাই রে । ইদুর খরগোস খেকশিয়াল মারলি, মসলাপাতি চাই তো । কমল হাসিয়া বলিল-স্থ । বলিতে বলিতে অকস্মাং যেন একটা অতিপ্রয়োজনীয় কথা তাহার মনে পড়িয়া গেল, বলিল—‘ডিবরী সুমুম' এনেছিস গো ? করঞ্জা স্বমুম জলছে না ভাল বাতাসে |