পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩৮৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পোষ জীবজন্তুর বিশ্রাম ডাল হইতে পড়িয়া যাইবার কোনই আশঙ্কা থাকে না। কোন কোন পার্থী মুরক্ষিত স্থানে বাস করে বলিয়া ঘুমন্ত অবস্থায় তাহদের শত্রুভীতি কম। কিন্তু যাহাদের নিদ্রার গভীরতা বেশী এবং অপেক্ষাকৃত উন্মুক্ত স্থানে অবস্থান করিতে হয়, তাহাদিগকে শত্রুর কথা বিশেষভাবে চিন্তা করিতে হয়। এই জন্য পেচারা বিশ্রামের সময় এমন স্থান একিডনা, সাধারণ অবস্থায় নিৰ্ব্বাচন করে যেখানে সহজে শক্রর চোখ পড়ে না । ইহার বৃক্ষের কোটরে, দেওয়ালের ফাটলেই প্রায় আত্মগোপন করিয়া থাকে, কিন্তু বড় বড় হুতোম পেচারা এমন গাছের ডালের উপর বসে যে সেখানকার রং ও পাখীর গায়ের রং প্রায় একই রকম দেখিতে হয়। অষ্ট্রেলিয়ার ফ্রগ-মাউথ নামক পার্থীরাও এইরূপ ডালের সঙ্গে শরীরের রং মিলাইয়া বিশ্রামস্থখ উপভোগ করে। সারস, বক প্রভৃতি পার্থীরা সাধারণতঃ এক পায়ের উপর দাড়াইয়া বিশ্রাম গ্রহণ করে ; অপর পাটি পেটের নীচে গুটাইয়া রাখে। কথন কথন হাট মুড়িয়া ঠোঁট পিঠের উপর পালকের মধ্যে গুজিয়াও অবস্থান করে। আমাদের দেশীয় গৃহপালিত হাসেরও এরূপ স্বভাব দেখিতে পাওয়া যায় । ঘুমন্ত অবস্থায় শত্রু সহজে আক্রমণ করিতে পারে এই ভয়েই অনেক প্রাণী অদ্ভুত ভঙ্গীতে নিদ্রার আশ্রয় গ্রহণ করে যাহাতে শক্র প্রতারিত হয় অথবা তাহাদের অতর্কিত আক্রমণের প্রথম ধাক্কাটাও অস্তত: সামলানো যাইতে পারে। সৰ্ব্বশরীর শক্ত আশে আবৃত ম্যানিস্ নামে বাদামী রঙের এক জাতীয় স্তন্যপায়ী প্রাণী আছে। তাহারা বিশ্রাম করিবার সময় পিছনের পায়ে গাছের গুড়ি একিডনীর বিশ্রাম আঁকড়াইয়া ধরিয়া সমস্ত শরীরটাকে ডালের মত পাশের দিকে প্রসারিত করিয়া রাখে। হঠাৎ দেখিয়া একটা গাছের ডাল বলিয়াই মনে হয় । প্যাঙ্গোলিন নামে এই ধরণের এক জাতীয় প্রাণী ডালের গায়ে শরীর কুণ্ডলী পাকাইয়া নিদ্রা যায়। অষ্ট্রেলিয়ায় একিডনা নামক এক অদ্ভুত পিপীলিকাভূক প্রাণী দেখিতে পাওয়া যায়। ইহাদের সর্বশরীর সজারুর কাটার মত কাটায় আবৃত । মুখটা পাখীর ঠোটের মত লম্বা ও স্বচালো । ঘুমস্ত অবস্থায় শত্রুর অতকিত আক্রমণ হইতে আত্মরক্ষার জন্য ইহারা শরীর গুটাইয়া পিণ্ডাকার ধারণ করে । শরীর গুটাইবার কালে কাটাগুলি কদমফুলের শুয়ার মত চতুদিকে খাড়া হইয়া থাকে। এ অবস্থায় শত্ৰু সহজে ইহাকে আক্রমণ করিতে পারে না । কোয়ালা নামক অষ্ট্রেলিয়ার ভালুক জাতীয় এক প্রকার প্রাণী গাছের উপরে উঠিয়া নখের সাহায্যে ডাল আঁকড়াইয়া ধরিয়া বসিয়া বসিয়া নিদ্রা যায়। কুকুরেরা শীতের সময় কুণ্ডলী পাকাইয়া নিদ্রা যায়, কিন্তু গ্রীষ্মকালে শরীর প্রসারিত করিয়া ঘুমাইতেও দেখা যায়। সাধারণ বিশ্রামের সময় শরীরটা ঈষৎ বক্রভাবে রাখিয়া সম্মুখের দুই পা প্রসারিত করিয়া দেয়। ছাগল, গরু প্রভৃতি জন্তুরা