পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩৯৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

లtు * প্রবাঙ্গী or Yego —তোমার একটি ছেলে আছে বুঝি ? পতিতপাবন বিনীত হয়ে বলে—আঞ্জে হ্যা বাৰু। ওই ছেলেটারে নিয়েই তো মুশকিলে পড়েছি। বার মাস অম্লখ লেগেই আছে। ওষুধে-পত্তরে-ডাক্তারে একেবারে নাজেহাল । একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে পতিতপাবন আবার বলতে লাগল—গেল সন ঠিক এই রকম দিনে খোকার ভারি অমৃথ হ’ল। ডাক্তার বাবু দেখে বললেন—ম্যালেরিয়ায় ভূগে ভুগে এনিমি’ হয়েছে। রোজ এক সের ক’রে দুধ খাওয়াতেই হবে। কি করব, স্বামী-স্ত্রীতে ডাক্তার বাবুর পা জড়িয়ে ধরলাম-দোহাই আপনার, একটা বিষ্ঠিত করতেই হবে। র্তার দয়ার শরীর। সেই থেকেই ভিজিটট। মাফ ক’রে দিলেন। আর ‘রক্তারি মলমে’ আমার চাকরির ব্যবস্থা করলেন । এতে অবশ্য র্তারও লাভ হ’ল । সাত বছর ধরে ক্যানভাসারি করি বাৰু। পতিত ক্যানভাসারকে সকল কোম্পানীই চেনে। তবে এখানে কমিশনটা-অভ্যাসটা অাছে, মাইনেটাও ভাল, তাই আছি ঝুলে মা-কালী ব’লে । আবার বাধা দিলাম--কিন্তু এ যে বড় শক্ত কাজ— মুখের কথা লুফে নিল পতিতপাবন—শক্ত ব’লে শক্ত । বুকের রক্ত বেচে খাওয়া । এই দেখুন বাৰু। পতিতপাবন বা-হাত ও ডান হাতের অস্তিন বগল পৰ্য্যন্ত গুটিয়ে দেখাল ; এডক্ষণ লক্ষ্য করি নি। এখন দেখে চমকে উঠলাম। দুই হাতের সবখানি জায়গা জুড়ে অজস্র কাটার দাগ । কালো কালো সংক্ষিপ্ত সরল রেখায় আত্মহত্যার অলিখিত ইতিহাস । অনুরোধের স্বরে বললাম—এ কাজ তুমি ছেড়ে দাও পতিতপাবন । —ছেড়ে দিলে সংসার চালাব কেমন ক’রে বাৰু ? আমার খোকার দুধের বাবদ মাস গেলে গোয়ালাকেই যে দিতে হয় নগদ ছ-ছটি টাকা। তার পর ঘরভাড়া, মূদির দেন, জামাকাপড়, তৈ-তৈজস, কত কি ! বুঝি পতিতপাবন অন্য অনেকের মতই নিরুপায়। তবু বললাম—কিন্তু তাই ব’লে এমন ক’রে নিজেকে মেরে ফেলবে ? পতিতপাবনের ঠোঁটে মান হাসি-আশীৰ্ব্বাদ করুন: বাৰু, আমার থোকা বেঁচে থাক, মানুষ হোক। তখন আর আমার ভাবনা কি থাকবে ? পায়ের উপর পা তুলে ব’সে ব’সে খাব আর রক্ত জমাব• •• মুখ-দুঃখ, আশা-আশঙ্কার অনেক কথাই পতিতপাবন বলতে লাগল । হায় রে কথার ফাকুষ ! নিজের ভাবের বাতাসে কোন আনন্দেই যে ভেসে বেড়াও ! নীচে তোমার আতঙ্ক সাগর, উপরে অসীম শূন্য!-- 歌 學 净 বছর দুই পরে । হাসপাতাল-ডিউটি শেষ ক’রে একটু তাড়াতাড়ি সেদিন হোষ্টেলে ফিরছি। —ও বাৰু শুনছেন—ও বাবু— অপরিচিত কণ্ঠের ডাক শুনে এগিয়ে গেলাম। হয়ত কোন অভিযোগ । সন্ধ্যার সময় খাবার আসে নি, কোন নাস খিটখিট করেছে, পাশের রোগীর চীৎকারে সারারাত্ত ঘুমান অসম্ভব, এমনি কত কি । কাছে গিয়ে দাড়াতেই চিনতে পারেন বাৰু? ভাল ক'রে চাইলাম লোকটার দিকে । জীবনের করুণ প্রহসন। মুখখানি ফ্যাকাসে, একেবারে ছাইয়ের মত সাদা। চোয়াল ও গালের হাড় কুৎসিত ভাবে ফুটে বেরিয়েছে। গাল দুটি গৰ্ত্ত হয়ে ভিতরে ঢুকেছে । চোখও কোটরগত। কিন্তু অস্বাভাবিক তীক্ষতা তারা চাউনিতে । সারা মুখে মৃত্যুর ছায়া । সহানুভূতির স্বরে বললাম—মনে পড়ছে না তো । কোথায় দেখেছি বল তো তোমায় ? একটু হাসবার চেষ্টা ক’রে রোগী বললে—আজ্ঞে আমি পতিত ক্যানভাসার—পতিতপাবন দে। সেই যে বাৰু, শিলং মেলে দেখা হয়েছিল আপনার সঙ্গে । ‘রক্তারি মলম” ক্যানভাস করছিলাম আঞ্জে । পতিত ক্যানভাসারকে চিনলাম। বন্ধুর বিবাহযাত্রায় ট্রেনে দেখা সেই লোকটার কথা মনে পড়ল । মিলিয়ে দেখলাম, ছুটি চেহারার মধ্যে মূল ঐক্য আছে লোকটা শুধাল—আমায়