পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২৮ কিন্তু ইহা ভারতীয়ের চোখে কখনও ভাল ঠেকে নাই এবং কেন ভারতীয়েরা বুদ্ধকে ঐরুপভাবে কল্পনা করে নাই তাহা হাভেল অশ্বঘোষের বুদ্ধচরিত হইতে পদ উদ্ধার করিয়া মুন্দরভাবে বুঝাইয়াছেন। এই প্রসঙ্গে মনে পড়ে জাপানী কানো শৈলীর শিল্পী ঝেন অর্থাং ধ্যান সম্প্রদায়ের ধারণা অনুযায়ী যে বুদ্ধের চিত্র অঙ্কিত করিয়াছেন তাহার কথা । এই চিত্রে উদাসীনের মত অযত্নবিন্যস্ত চুল, মাথার মাঝখানে টাক, গোফ দাড়ি এবং খোচা খোচা পায়ের নখ দেখানো হইয়াছে । এই ধারণা অনুযায়ী কতকগুলি জাপানী মূৰ্ত্তি আছে তাহাতে তপ:ক্লিষ্ট কঙ্কালসার বুদ্ধ বসিয়া উত্তোলিত ডান বা বাম হাটুর উপর দুই হাত রাখিয়াছেন। মাথায় টাক আছে, কপালে রেখা আছে। কোন কোনটিতে গোফদাড়ি আছে। কোন কোন মূৰ্ত্তিতে বুদ্ধ যেন সংসারের দুঃখরাশির জন্য অভিভূত হওয়াতে বিমর্ষ হইয়া গিয়াছেন এইরূপ ভাব ফুটানো হইয়াছে। ইহাকে ইংরেজীতে নাম দেওয়া of& “The Sorrowing Buddha.” ঠিক ইহার উন্ট রকম মূৰ্ত্তিও আছে। বুদ্ধের মূৰ্ত্তিতে গাম্ভীয্যের স্থান আছে, কিন্তু তিনি হাস্ত করিতেছেন এরূপ কল্পনাও খুব স্বাভাবিক নয় । বুদ্ধকে আমরা বিমর্ষ মনে করি না, কিন্তু তাহার এ রকম হাসি ও কল্পনা করি না। এইরূপ হাস্তবদন বুদ্ধমূৰ্ত্তি আমরা ইণ্ডো-চীনে দেখিতে পাই । কুযাণ-যুগে এবং মধ্য-এশিয়ায়ও এরূপ মূৰ্ত্তি দেখিতে পাওয়া যায় । পরিনিৰ্ব্বাণ মুর্টির মত এক রকম মূৰ্ত্তি চীনদেশে দেখা গিয়াছে। ইহা নিদ্রিত বুদ্ধের মূৰ্ত্তি। উয়ে ফুস্থ মন্দিরে জমকালো পোষাক পরিচিত এইরূপ নিদ্রিত বুদ্ধমূৰ্ত্তি আছে। সেথানকার ভক্তেরা তাহার খালি পায়ের জন্য জুতা দান করে } কোবিয়ায় কয়েক রকম অদ্ভূত বুদ্ধমূৰ্ত্তি দেখা যায়। একটি মূৰ্ত্তিতে বুদ্ধের মুখ চেপ্টা, সমগ্র মূৰ্ত্তিটি দেথিতে মিশরীয় মামীর মত এবং আড়ষ্ট। আর এক ধরণের মূৰ্ত্তি কোরিয়ার পথের ধারে দেখা যায়। উহা দণ্ডায়মান প্রকাণ্ড প্রবাসী ్సల8ు বুদ্ধমূৰ্ত্তি। ইহার মাথায় ছাতা দেওয়া থাকে। পর্য্যটকেরা বলিয়াছেন যে দূর হইতে এইরূপ মূৰ্ত্তিকে আলোকস্তম্ভ বলিয়া ভুল হয়। ভারতীয় শিল্পে আমরা শিশুবুদ্ধের মূৰ্ত্তি দেখি না। কিন্তু চীনদেশে এইরূপ মূৰ্ত্তি আছে। জন্মের পরই বুদ্ধ নাকি সপ্তপদ গমন করিয়াছিলেন এবং ডান হাত দ্বারা আকাশের দিকে ও বাম হাত পৃথিবীর দিকে দেখাইয়া বলিয়াছিলেন যে তিনি শেষবারের জন্য অবতীর্ণ হইয়াছেন। এইরূপ মূৰ্ত্তি কিন্তু নবজাত উলঙ্গ শিশুর নয়, পরিধানে অল্পবয়স্ক বালকের পোষাক আছে। পূৰ্ব্ব-ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জে আমর। কোথাও কোথাও শিববুদ্ধ মূৰ্ত্তির কথা জানিতে পারি। এমন কি কোন কোন পর্য্যটক বলিয়াছেন তাহারা যবদ্বীপে বুদ্ধমূৰ্ত্তির মাথায় foszfēją cwfRITIER ( Asiatic Researches, 1820, p. 365, foot-note ), কিন্তু ইহা প্রকৃতই লিঙ্গ কিনা বলা যায় না। ব্ৰহ্ম ও শ্যামদেশের বুদ্ধমূৰ্ত্তির মাথায় উষ্ণৗষের জায়গায় কয়েকটি থাক যুক্ত মন্দিরের মত একটা লক্ষণ দেখা যায়। কোথাও এই রকম তিনটি জিনিষ পাশাপাশি থাকে, মাঝেরটি বড়, দুষ্ট দিকের দুইটি ছোট । পুরীর জগন্নাথকে মধ্যযুগের লেখকগণ স্পষ্টই বুদ্ধ বলিয়া স্বীকার করিয়াছেন। কোন কোন প্রাচীন মূৰ্ত্তিতে ব্ৰহ্মার সঙ্গে বুদ্ধের সাৰূপ্য দেখা যায়। জাপানের কোন কোন চিত্রে বুদ্ধকে মেঘের মধ্যে দেখানো হয়। কোথাও কোথাও বুদ্ধ ফুল হাতে করিয়া আছেন এবং যেন কথা না বলিয়াও জীবন-সমস্যার সমাধান করিয়া দিয়াছেন। চীনে কোন কোন মূর্ণ হ বুদ্ধকে বোধিবৃক্ষের নীচে না বসাইয়া উহার মধ্যে বসানো হইয়াছে । তিব্বত ও চীনের মন্দিরে কোন কোন স্থানে “নাগতরুর” ( অষ্টশাখাযুক্ত প্রবাল দ্বারা নিৰ্ম্মিত) উপরে আটটি বুদ্ধমূৰ্ত্তি দেখানো হয় । ভারতীয় মূৰ্ত্তিতে বুদ্ধ পদ্মাসনে বসিয়া থাকেন। কিন্তু বৃহত্তর ভারতের পূর্ব অঞ্চলের বহু স্থানে বুদ্ধকে এমন ভাবে বসানো দেথা যায় যেন চেয়ারে বসিয়া নীচে পা ঝুলাইয়া দিয়াছেন । ইহাকে সাহেবরা ইউরোপীয় ধরণে বসা