পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

888 ॰धंबणॆौ t SOHO দেওয়া যাবে । শশক-মাংস নাকি অতি উপাদেয় আর অতি পুষ্টিকর—মানে ওরা খায় যে একেবারে ফাস্টক্লাস ভিটামিন, ছোলা মম্বর—এই সবের ডগা খেয়েই তো ওদের দেহ তৈরি । রায় বলিলেন–আচ্ছা, আজ আমি আপনাকে শশকমাংস খাওয়াব—আমার এখানেই রাত্রে খাবেন, নেমস্তন্ন করলাম। চরের সাওতালরা আঞ্জ দুটো খরগোস দিয়ে গেছে । অচিন্ত্যবাবু হাসিয়া বলিলেন—সে আমি শুনেছি মশায়, বাড়িতে ব’সেই আমি তার গন্ধ পেয়েছি। রায় হাসিয়া উত্তর দিলেন—ত হ’লে সিংহ ব্যাঘ্র না হতে পারলেও ইতিমধ্যেই আপনি অন্ততঃ শৃগাল হয়ে উঠেছেন দেখছি। ভ্রাণশক্তি অনেকটা বেড়েছে। অচিস্তাবাবু অপ্রস্তুত হইয়া ঠোটের উপর খানিকট হাসি টানিয়া বসিয়া রহিলেন । রায় বলিলেন—আসবেন তা হ’লে রাত্রে । অচিন্ত্য বলিলেন—বেশ । আবার এখন এই ভিজে মাটিতে ট্যাং ট্যাং করে যাচ্ছে কে, তাই আসব! সেই একবারে থেয়ে দেয়ে যাব । অম্বল ভাল হ’ল তো সন্দি টেনে আনব না কি ? তাছাড়া আসল কথাই তো আপনাকে এখনও বলা হয় নি । এক্ষুনি বললাম না সায়েব কোম্পানীর কথা ? এবার যা একটা ব্যবসার কথা কয়ে এসেছি—কি বলব আপনাকে—একেবারে তিন-শ পারসেণ্ট লাভ ; দু-শ পারসেন্টের তো মার নেই। সকৌতুকে ভ্র দুইটি ঈষৎ টানিয়া তুলিয়া রায় বলিলেন—বলেন কি ? —আঞ্জে হ্যা! খস্থ চালান দিতে হবে, খসখস্ বোঝেন তো ? —তা বুঝি —বেনাঘাসের মূল । অচিস্তাবাবু পরম সন্তুষ্ট হইয়। দীর্ঘশ্বরে বলিলেন— হা! সাওতাল ব্যাটার চর থেকে তুলে ফেলে দেয়— সেইগুলো নিয়ে আমরা সাপ্লাই করব! দেখুন এখন হিসেব ক’রে লাভ কত হয় ! রায় কোন জবাব দিলেন না, খানিকট হাসিলেন মাত্র । অন্দরের ভিতর হইতে শাখ বাজিয়া উঠিল— ঈষৎ চকিত হইয়া রায় চারি দিকে চাহিয়া দেখিলেন—সন্ধ্যা ঘনাইয়া আসিয়াছে ; পশ্চিম দিগন্তে অল্প মাত্রায় রক্তসন্ধ্যার আভাস থাকায় অন্ধকার তেমন ঘন হইয়া উঠিতে পারে নাই। গভীর স্বরে তিনি ইষ্টদেবতাকে স্মরণ করিলেন— তারা তারা তার পর অচিন্ত্যবাবুকে বলিলেন—তা হ’লে আপনি একটু নায়েবের সঙ্গে বসে গল্প করুন-আমি সান্ধ্যকৃত্য শেষ ক’রে নি । অচিন্ত্য বলিলেন—একটি গোপন কথা বলে নি । মানে, মাংস হ’লেও একটু দুধের ব্যবস্থা আমার চাই কিন্তু। ব্যাপারটা হয়েছে কি জানেন—ৰ্দাত তুলে দিয়ে ডাক্তারের বললেন বটে যে, আর হজমের গোলমাল হবে না—আমি কিন্তু মশাই—অধিকন্তু ন দোষায় ভেবে, আফিং খানিকটা করে আরম্ভ করেছি। বুঝলেন, তাতেই হয়েছে কি-ওই গব্যরস একটু না হ’লে আবার ঘুম আসছে না ! রায় মৃদু হাসিয়া অন্দরের দিকে চলিয়া গেলেন । এক জন চাকর প্রদীপ ও প্রধূমিত ধূপদানী লইয়া কাছারির দুয়ারে দুয়ারে সন্ধ্যা দেখাইয়া ফিরিতেছিল, অন্ত এক জন চাকর দুই-তিনটা লণ্ঠন আনিয়া ঘরে বাহিরে ছোট ছোট তেপায়াগুলির উপর রাথিয়া দিল । সমৃদ্ধ রায়-বংশের ইতিহাস আরম্ভ হইয়াছে অস্তুত দু-শ বংসর পূৰ্ব্বে, হয়তো দশ-বিশ বৎসর বেশীই হইবে, কম হইবে না। তাহারও পূৰ্ব্বকাল হইতেই রায়েরা তান্ত্রিক দীক্ষায় পুরুষানুক্রমে দীক্ষিত হইয়া আসিতেছেন। ছোট রায়ের প্রপিতামহ অবধি তন্ত্রের একটা মোহময় প্রভাবে প্রভাবান্বিত ছিলেন ; আজও গল্প শোনা যায় অমাবস্যা অষ্টমী প্রভৃতি পঞ্চপর্বে র্তাহারা শ্মশানে গিয়া জপতপ করিতেন । তাহারও পূৰ্ব্বে কেহ এক জন নাকি লতা-সাধনে সিদ্ধ হইয়াছিলেন। যুগের প্রভাবে তন্ত্রের সে মোহময় প্রভাব এখন আর নাই, কিন্তু তবুও তন্ত্রকে একেবারে তাহারা পরিত্যাগ করিতে পারেন নাই । ইন্দ্র রায় প্রতিদিন সন্ধ্যায়ু তন্ত্রমতে সায়ংসন্ধ্যায় বসেন— র্তাহার গলায় তখন থাকে রুদ্রাক্ষের মালা, কাধের উপর