পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উদ্বোধন ঐরবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রভাতের উদ্বোধন শাস্তিতে, এই শাস্তিতে সমস্ত দিনব্যাপী কমের ভূমিকা। বিশ্বস্বষ্টিযজ্ঞে যে অগ্নি জলছে তারায় তারায়, তাকে আপন আপন মর্যাদায় নিযুক্ত করেছে অক্ষুন্ন শান্তি। এতস্য বা অক্ষরস্য প্রশাসনে গাগি নিমেষ মুহূত অহোরাত্রাণ্যধ্ব মাস মাস ঋতব সংবৎসর ইতি বিধুতাস্তিষ্ঠন্তি । এই অক্ষরের প্রশাসনে হে গার্গি নিমেষ মুহূত অহোরাত্র অধৰ্মাস মাস ঋতু বৎসর বিধৃত হয়ে রয়েছে, নিমেষে নিমেযে কালের তরঙ্গিত গতি নিরস্তর স্বজন প্রলয়ের আবতনপর্যায় বিস্তার করছে, কিন্তু বিরাট সমগ্রতায় সে স্থির, বৃহৎ শান্তিতে সে বিধুত। যদিদং কিঞ্চ জগং সৰ্বং প্রাণ এজুতি নি:স্থতং—বিশ্বচরাচরের য কিছু সমস্তই অনিঃশেষ প্রাণের কেন্দ্ৰ হ’তে নিঃস্থত হয়ে অবিশ্রান্ত প্রাণেই স্পনিদত হচ্ছে। আকাশে আকাশে কম্পমান অণুপরমাণুসংঘ নিয়ে প্রাণের স্ব৪-বিকাশী গতি সমগ্রের বিরুদ্ধে কোথাও উদ্ধাম নয়, সে অতিপ্রবল শাস্তিতে সংযত। মহাবিশ্বের আধার এই যে শাস্তি মামুষের জীবনে এই শাস্তিতেই তার আত্মস্থষ্টি তার কমথষ্টির ধ্রুব প্রতিষ্ঠা। সংসারে আঘাতের পর আঘাত আসে ক্ষতির পর ক্ষতি, পরাভব তখনি হয় যখন শান্তিরক্ষা করতে পারি নে, তখনি জানব ভাঙন এল, কেননা অশান্তি প্রলয়ের বাহন। সংসারে যারা স্বল্প করতে অক্ষম সেই সকল নৈতিক পদুদের লক্ষণ ঔদ্ধতা, চাঞ্চল্য, উদ্বেগ, ক্ষমার কার্পণ্য, বলপূর্বক আপন প্রভাব প্রকট করবার জন্য অন্যায়পরত। । এই লক্ষণগুলি হৃষ্টিতত্ত্বের বিরুদ্ধ প্রমাণ, এর নিরস্তর অশান্তি আলোড়িত করতে করতে চরম আত্মঘাতে নিয়ে যায়। এরা রিপু, এদের হাত দিয়ে সাংঘাতিক শাস্তি আরম্ভ হয় শাস্তিকে বিপর্যস্ত করে দিয়ে। যুদ্ধের আঘাতে জর্জর যুরোপ আজ উৎকণ্ঠিত হয়ে বাইরে শাস্তির উপায় খুঁজে বেড়াচ্ছে, ভুলে যাচ্ছে শাস্তি অলুন্ধতা, শাস্তি ক্ষমায়, শাস্তি দাক্ষিণে, ন্যায়পরতায়, শাস্তির উৎস চারিত্রে। আমাদের এই উৎসবে আমরা শাস্তির উদ্বোধন করি। এ কথা যেন মনে রাখি, আত্মহষ্টির কার্য আমাদের প্রত্যেকের পক্ষে প্রতিনিয়ত। মামুয বিধাতার অসমাপ্ত হঃ, এই স্বষ্টিকে সম্পূর্ণ করবার ভার মামুষের নিজের হাতে। মামুযের মহত্ত্ব তার আপনার গড়া, মানববিশ্বের সে স্রষ্টা সে বিধাতা। এই স্বষ্টিকার্যের জন্যে প্রত্যহ চাই তার জীবনের নিমল আকাশে শাস্তির উদ্বোধন। তার ধ্যানে আস্থক শান্তি, তার কমে বিরাজ করুক শাস্তি, তার প্রাত্যহিক জীবনযাত্রায় অবিচলিত থাকু বীরোচিত শান্তি । দুঃখদহনের মধ্যে তার চরিত্র নীহারিকার মধ্যবর্তী নিনিমেষ নক্ষত্রের মতো শাস্তি দীপ্তি বিকীর্ণ করুক। মনে এই মন্ত্র নিঃশব্দে বাজতে থাক শাস্তম্ শিবম্ । দ্বেী: শাস্তিরস্তরীক্ষং শাস্তি: পৃথিবী শাস্তিরাপ: শাস্তি রোষধয়: শাস্তি: সৰ্বং শান্তি: শাস্তিরেবঃ শাস্তি: | १झे পৌষ, ১৩৪৬ { শাস্তিনিকেতনের সাংবৎসরিক উৎসবের উদ্বোধন । ]