পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8&ზr সংযুনত্ত, তিনি শুভবুদ্ধির দ্বারা আমাদের সঙ্গে এক হয়ে মিলুন। যেমন জ্ঞানগত বুদ্ধি পশুস্বভাবের মূঢ়তায় খর্ব হ’লে প্রাণধারণের নানা প্রকার দৈন্য মানুষকে ঠুর্ভাগা করে তেমনি পশুস্বভাবে কত ব্যবুদ্ধির বিকার ঘটালে মানবসমাজকে আঘাত ক’রে অন্তরে বাহিরে সর্বনাশ সাধন করতে থাকে। এখানে রিপুর প্রবত নায় আমাদের সেই দেবতাকেই আমরা তিরস্কৃত করি ধিয়ো যে ন; প্রচোদস্থাৎ, তখন আসে মহতী বিনষ্টির দিন। সেই বিনষ্টির অশুভ লক্ষণ আজ দিকে দিগন্তরে দেখা দিয়েছে । যারা ইতিহাসের সদ্যোবিচারের বিতর্কে বিরুদ্ধপক্ষকে দোষ দিয়ে নিজেকেই সাধু ব’লে ঘোষণা করতে চায় তাদের নিজের জবানীর ওকালতিতে তারা যে নিষ্কৃতি পাবে সে সম্ভাবনা নেই। কেননা এ বিচারশালায় দরখাস্তের নৈপুণ্যে দয়া জাগবে না, প্রশ্রয় নামবে না ; এখানে আছেন মহন্তয়ং বজ্ৰমুষ্ঠতম। যারা প্রলোভনের পথে সিদ্ধিলাভ ক’রে নিজের মদোন্মত্ত অহমিকার পিছনে ফেলে অনাদর করেছে আপন দেবতাকে, তারা অনেক দিন থেকে মনে করেছে বিজ্ঞান তাদের সহায়, উপকরণে তার স্বরক্ষিত, অন্যায়কে উপায় ব’লে অমুসরণ করবার অধিকার তাদের আছে, কিন্তু তার কালে কালে নিজের ভিতরকার সেই দেবতার প্রেরণা থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে ধিয়ে যে নঃ প্রচোদয়াৎ, তাদের নিজের ভিতরকার দেবতা ক্রমশই আচ্ছন্ন হয়ে গেছেন । বহু দিনের অন্যায়ের ভার নিয়েও ধর্মমন্দিরে যাওয়া চলে এবং প্রার্থনামন্ত্রও মুখে না বাধতে পারে কিন্তু নিজের অস্তরের মধ্যে দেবতার সম্মুখে যেখানে রিপুর যবনিক পড়ে গেছে সেইখানে প্রবেশপথ দুর্গম হয়ে ওঠে, অবশেষে অন্ধতার নেপথ্যে বিনাশের আঘাত লাগতে থাকে ইতিহাসের মূলে। প্রথমে ধীরে ধীরে অবশেষে এক দিন অকস্মাৎ দুর্দান্ত বেগে । আমাদের দেশে যারা দুর্বল ক্রোধে নালিশ করতে বসেছেন যে কোনো ঈশ্বর এসে নিজের হাতে তাদের দুঃখের অশ্রজল কেন মুছে দেন নি, তাদেরকে উপনিষদের একটি বাণী স্মরণ করাব । প্রবাসী Yegy يخصيصعصح--- অথ ষোন্তাং দেবতাম্ উপাস্তে, অন্তোইলোহহম্ অন্তে অস্ট্রীতি ন স বেদ, যথা পশুরেব ল দেবানাম্। যে মানুষ উপাসনা করে অন্য দেবতাকে, তিনি অন্য, আমি অন্য ষে এমন কথা ভাবে সে তো দেবতাদের পশুর মতোই। মানুষের হয়ে এত বড়ো কথা আর কোন দেশের ধমশাস্ত্রে বলতে সাহস করে নি, অথচ আমাদের দেশে পদে পদে এ কথার যেমন অকুষ্ঠিত প্রতিবাদ এমন আর কোনো দেশে দেখা যায় না । মানুষ আরম্ভ করেছিল আপন জীবন পশুর মতোই অভাবে, অজ্ঞানে, নিরস্তর আশঙ্কায় । সেইটেই যদি সত্যু হ’ত তবে আজ পর্যন্ত সেই দশাই হ’ত নিত্য । কিন্তু তার থেকে মাতুষকে বার ক’রে আনলে কে । সে কি বাইরে থেকে কোনো বিশেষ নামধারী কোনো দেবতা ? পশু বলির রক্তে তৃপ্ত কোনো অমানুষ সত্তা মাতুষকে বর দিয়েছে কি ? স্তবমস্ত্রের বদলে কোনো দেবতার কাছ থেকে মানুষ কি পেয়েছে কোনো পুরস্কার ? না, মাস্থ্যু দেবতার পশু নয় । যে দেবতা মামুযের সঙ্গে একাত্ম হয়ে মানুষকে দিয়েছেন সম্মান, মামুষের জ্ঞানে বিজ্ঞানে সমাজে সভ্যতায় ক্রমশ হয়েছে তারই সমুজ্জল আবির্ভাব । সে সামান্য দুঃখে হয় নি। প্রাণপাত ক’রে আদিম পশুকে শাসন করেছেন যে বীর তিনিই মানুষের ভিতর থেকে আবিষ্কৃত করেছেন আপন দেবতাকে । সেই আবিষ্কার আজো চলেছে নিৰ্ভীক নিনিদ্র সাধকপরম্পরায় । যেখানে আমরা অকৃতকার্য, যেখানে আমাদের পরাভব সেখানে আমরা দুঃখ পাবই, প্রশ্রয় পাব না ; সেখানে আমাদের দেবতা উপেক্ষিত হয়েছেন, সেখানে যেন আমরা নিলজের মতো অভিমান না করি, দয়ার দাবী না রাখি, বৃথা আস্ফালনে না বলি তুমি নেই। যদি নেই তো সে কার দোষে ? কোন দুর্বল কোন উীর তাকে আপন জড়ত্বের অন্তরালে রাহুগ্রস্ত করেছে । অবশেষে বাইরে খুঁজে বেড়াচ্ছে গুরুর পায়ে ধরে, পুরুৎকে ঘুষ দিয়ে, কাসর-ঘণ্টার কর্কশ শব্দে বধির করে দিয়ে আত্মশক্তিকে । তাই বলি, বৃহদারণ্যকের এই বাণী কখনো যেন না ভুলি যে, ”অথ যোহন্তাং দেবতাম্ উপাস্তে, অন্তোহলে অন্তোহহম্ অস্ট্রীতি ন স বেদ, যথা পশুরেব স দেবানাম।” এই কথা মনে