পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪৮২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8ግ• আমার ভার লাঘব করি’ নাই বা দিলে সাস্তুনা, বহিতে পারি এমনি যেন হয়। নম্র শিরে মুখের দিনে তোমারি মুখ লইব চিনে, দুথের রাতে নিখিল ধরা যে-দিন করে বঞ্চনা, তোমারে যেন না করি সংশয় ॥ বজ্ৰে তোমার বাজে বাশি সে কি সহজ গান। সেই সুরেতে জাগব আমি দাও মোরে সেই কান ৷ ভুলব না আর সহজেতে সেই প্রাণে মোন উঠবে মেতে মৃত্যুমাঝে ঢাকা আছে যে অস্তুহীন প্ৰাণ । সে ঝড় যেন সষ্ট আনন্দে চিত্তবীণার তারে সপ্তসিন্ধু দশদিগন্ত নাচাও যে ঝংকারে। আরাম হতে ছিন্ন ক’রে সেই গভীরে লও গো মোরে অশাস্তির অস্তরে যেথায় শান্তি স্বমহান ॥ ৭ই পৌষ, ১৩৪৬ [ শাস্তিনিকেতনের সাংবৎসরিক উৎসবে আচার্য্যের উপদেশ ]; সন্তান ঐসুশীল জানা ভুলো মুঠা মুঠে। ধুলো উড়োচ্ছে আকাশের দিকে। নন্দ ধমক দিয়ে বললে ছেলেকে—এই, চোখে এসে পড়লে কানা হয়ে ষাবি যে ! ফের ধুলো ঘাটে। যাচ্ছি— এই উঠলাম — কিন্তু নন্দ ব’সে ব’সে স্তিমিত চোখে নির্লিপ্তভাবে তামাক টানতে লাগল। মাঠের পাশে বসে সে আর শ্ৰীনাথ বুড়ে জিরোচ্ছে, স্বমুখে হাল-গরু দাড়িয়ে । কঙ্কালসার গরুগুলোর পাজরার খাজে খাঞ্জে ঘামের ধারা স্পষ্ট হ’য়ে উঠেছে। কেউ কেউ ধান বুনে গিয়েছে মাঠে—পার্থীদের ভিড় সেখানে, ঠোট দুটো সব ফাক হয়ে আছে কড়া রোদে। বহু দূরে দূরে খাপছাড়া ভাবে কৃষকপল্লী আর গাছের স্তুপীকৃত ঘন ছায়া—আলোকোজ্জল প্রকাও আকাশ আর ধুধু মাঠের পাশে কেমন যেন অপ্রয়োজনের নিঃসঙ্গতায় ঝিমিয়ে আছে। বহু দূরে দিগস্তের বনরেখার উপর দিয়ে মেঘের দল ভেসে ভেসে যাচ্ছে উত্তর দিকে । নন্দ সেই দিকে তাকিয়ে ছিল । বললে—ক-দিন থেকে আজ মেঘ দেখছি কিন্তু জল তো হচ্ছে না খুড়ো। আকাশের দিকে ঘোলাটে চোখে তাকিয়ে শ্ৰীনাথ বললে—ঐ মেঘগুলো ঘুরলেই জল হবে। —ও আর ঘুরেছে। নন্দ মাঠের দিকে তাকালে । মাটি ফেটে চৌচির হয়ে গিয়েছে। পায়ের নীচের ফাটলট পা দিয়ে খুঁটতে খুটতে বললে—ম বহুমতী কেমন হা করে আছে দেখ খুড়ো—রাকুসী এবার সব থাবে আমাদের—সব তার পর প্রচুর হাসি নন্দর—সম্ভবত নিজের মৌলিক রসিকতায় । তার পর কাশি আর কাশি, তার পর এক বালক রক্ত । মুখ মুছে নন্দ বললে—কাশির জালায় গেলাম খুড়োআজ ক-দিন আবার রক্ত উঠতে স্বরু করেছে, বে। তো সেদিন রক্ত দেখে ভয়ে কেঁদে-কেটে সে এক কাও—নন হাসলে।