পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪৮৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মাঘ ' সকলে সকরুণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকবে নন্দর দিকে দূর থেকে—এমন কি ভীরু বারুণীও । শিশু ভুলে— তাকেও ডাকলে ভয়ে সে ছুটে পালায়। কি ভয় দেখিয়েছে বারুণী তাকে কে জানে। এই দরদী সহৃদয় অবহেল কোন রকমেই সহ্য করতে পারে না নন্দ । খাজনার টাকা জমানো ছিল—কিছু টাকা নিয়ে বেরিয়ে গেল । ডাক্তারের কাছে ওষুধ থেয়ে সে বঁাচবেই । তখন বারুণীকে বাপের বাড়ী পাঠিয়ে দেবে—আনবার নামও মুখে আনবে नीं । ওষুধ নিয়ে এল নন্দ । ওষুধ খাওয়ার কিছুক্ষণ পরেই তার মনে হ’ল : মনের ক্লাস্তি আর দৈহিক দুর্বলতা একেবারে নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে । তার পর দিন যেন কাশিটাও অনেক কম মনে হ’ল তার ; ভোরবেল উঠে সে গোয়ালের কাছে পায়চারি করতে লাগল। বারুণীকে বললে, দুধ আর গোয়ালাকে বেচব না বোঁ । বারুণী বললে, গোয়ালা টাকা পাবে যে ! নন্দ বিরক্ত হ’ল—উৎফুন্ন মন মুহূর্তে খারাপ হয়ে গেল। কটু কণ্ঠে বললে—আমার গরু, আমার ইচ্ছে, আমি দুধ বেচব না। নন্দ ঝগড়া স্বরু করলে—তুই বলবার কে । ক-টাকা পাবে সে ? আজই দিয়ে দেব সব । খাজনার টাকা থেকে গোয়ালারও টীকা শোধ হয়ে গেল। বিবাহিত জীবনে এই প্রথম বারুণী একটা চড় খেয়ে চোখ মুছতে মুছতে চলে গেল আর নন্দ গুম হয়ে ব’সে রইল দাওয়ায় । সে বঁাচবে—কেউ যেন ভেবে উঠতে পারে না । যেন অসহায় পরলোক থেকে নন্দ মস্ত পৃথিবীটাকে দেখতে পেল কুটিলতায়, ছলনায় আর মুখোসে । শ্ৰীনাথৰুড়ো এসে মনটা আরও খারাপ ক’রে দিলে নন্দর । 攻 শ্ৰীনাথ বললে—খেয়াল আছে তো—তোর নীলামের দিন আসছে সোমবার। খাজনার টাকাটা এইবার পাঠিয়ে দে । নন্দ অসহায় ভাবে শ্রীনাথের দিকে তাকাল । তার পর * و سملاوين সপ্তাল 8*6. নীরস কণ্ঠে বললে—তোমরা কি চাও খুড়ে, আমি এমনি ভাবে মরে যাই । এমনি বিন চিকিৎসায় শেষের দিকে নন্দর গলা কেঁপে থেমে গেল । শ্ৰীনাথ তীক্ষ দৃষ্টিতে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলে—কি হ’ল তোর ? নন্দ অঙ্ক দিকে মুখ ফিরিয়ে চুপ করে রইল। তার পর আস্তে আস্তে বললে-খাজনার টাকা আমি ভেঙে ফেলেছি খুড়ো। ওষুধ কিনেছি। কিন্তু সরকার তো এ দোহাই শুনবে না। সূৰ্য্যাস্তের নীলাম ষথাসময়েই হবে । নন্দ ঠাণ্ডা মাথায় বুঝল কথাটা। বললে, কি হবে খুড়ো ! গ্রামের যদু দত্ত বড়লোক, মহাজনী কারবার আছে। শ্ৰীনাথ ভরসা দিলে, টাকা সেখানে মিলতে পারে। শ্ৰীনাথও সঙ্গে যাবে । কেঁদে কেটে পড়লে হবে । খোদ ষদ্ধ দত্তকে ধরতে হবে । কিন্তু নন্দর থাইসিস। ষত্ব দত্ত হুঁ-হঁ৷ ক’রে উঠল। নন্দ তফাৎ থেকে হাউমাউ ক’রে কেঁদে ফেলে বললে, পায়ে ধরছি হুজুর-এ-যাত্রা রক্ষা করুন। ঐ দু-বিঘে আমার সম্বল । যা লেখবার লিখিয়ে নেন —থামো বাপধন, থামো। ছোট ভাই বিধুর দিকে তাকিয়ে যদু দত্ত বললে, এমনি ক’রে নিতাই আমাকে মাঠে বসিয়েছে, বিপিন কেশব, মথুরও। অত জমি আর টাকা—সব মাগনায় গেল। খাতক বাচান কি সরকারী আইন হ’ল—মহাজনী কারবার বিশ হাত জলে ডুবে গেল । নন্দর দিকে তাকিয়ে বললে, আর এক পয়সা ছোয়াচ্ছি নে বাপধন । যাও এখন সরকারের কাছে। —তারাই তো পেটে মারতে বসেছে হুজুর। সূৰ্য্যাস্তের নীলাম—এ-যাত্রা বাচান— যদু দত্ত হাসলে, বললে—বোঝ এবার—সরকারের প্রজা হওয়ায় স্বথ, না জমিদারের প্রজা হওয়ায় সুখ । রাজা থাকে সাত সমুদ্র তের নদীর পারে আর জমিদার তোর ঘরের পাশে—দুটো কথা শুনতে পারে, শোনে— আর ষত সব খুনেরা মিলে তোলপাড় লাগিয়ে দিয়েছে— জমিদারী ভাঙো—হেন কর, তেন কর— দাদাকে উদ্বেগু করে বিধু ইংরেজীতে বললে—এই