পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪৮৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ieeAeeAAA AAAAA 8* আমাদের দেশের চাষা—খেতে কুলোয় না, খাজনা দিতে পারে না আরও কত কি—আর ইয়োরোপের চাষীরা ঐ জমিতে সোন ফলিয়ে নেয় কত দিক দিয়ে। স্থা:– হাসলে বিধু দত্ত। চেয়ার ছেড়ে উঠে দাড়িয়ে বললে—বেলা হ’ল, উঠি । তিনটের ট্রেন ধরতে হবে আবার । —তুই কি আজই যাবি ? থাক না ছদিন— --বাপ রে । খেয়ালী রামের সঙ্গে আজ রাত্রেই দেখা করার কথা। না দেখা হ’লে অনেকগুলো টাকা ক্ষতি হবে দাদা । —তবে যা যা । পুজোয় বউমারা সব আসছেন তো রে ? —রক্ষে কর । কাল সন্ধ্যেয় এসেই ঘন ঘন যে রকম হাই উঠতে লাগল—ভাবলুম, এই রে, ধরলে বুঝি কালজির কি ম্যালেরিয়া। এলে তাদের আর ফিরে যেতে হবে না । বিধু ঘরের মধ্যে চলল, যছ দত্তও উঠল। নন্দ ব্যাকুল হয়ে পড়ল হতাশায়, বললে—হজুর— তার পর কাশতে লাগল। ষদু দত্ত আতঙ্কে চীৎকার ক’রে উঠল, আরে আরে—ম’লো যা । এই শিব সিং— রাম .ঘরের মধ্যে একে ঢুকতে দিলে কে ! এই উল্লুক— শ্ৰীনাথ বুড়ো সঙ্গে গিয়েছিল—সঙ্গেই ফিরে এল নন্দর। নিরুপায় নন্দ তার কাছেই টাকা চেয়ে বসল। শ্ৰীনাথ হেসে বললে—কোথায় পাব টাকা ? পেট ভরে দুটাে ভাতেরই দেখা মেলে না যে রে । —আমাদের চাষীদের মধ্যে আর কারুর কাছে আছে জান ? —সকলের অবস্থাই তো জানি–চোখে দেখছি। যার কাছে যা ছিল, খাজনা মিটিয়ে ফতুর হয়ে গিয়েছে সব ৷ —তবে আর উপায় নেই শ্রীনাথ খুড়ো। দীর্ঘনিশ্বাস ফেলে নন্দ বললে, তুমি যাও তা হ’লে। ঘরে এসে নন্দ দেওয়ালে ঠেস দিয়ে চুপ করে বসে রইল। বোকা বারুণীকে সে নিজেই অত্যধিক মাত্রায় ভীরু ক’রে তুলেছে, তবু সে বসতে বসতে শুয়ে পড়ল এবং কাংরাতে লাগল । প্রবাসী Seg\, আশা করতে লাগল সে ; খুব ধীর একটা পদশক আর অন্তত তার কিছু দূরে একটা পরিচিত শঙ্কাভরা কণ্ঠস্বর । কিন্তু বারুণী কি শুনতে পায় না ! অনেকক্ষণ কেটে গেল । দীর্ঘদিন রোগে ভোগা রোগীর মত চি চি ক’রে ডাকল নন্দ বারুণীকে নয়, ভুলোকে-ভূলো রে-আ: ঘরে কি কেউ নেই নাকি ! একটু জল— বারুণী জল নিয়ে এল। নন্দ জলটুকু খেয়ে ফের ধপ ক’রে শুয়ে পড়ে উঃ আঃ করতে লাগল। না, তবু বারুণী ব্যস্ত হ’য়ে ঝুকে পড়ল না তার উপরে। অগত্যা নন্দ বললে—জমিটুকু গেল বেী—টাকার জোগাড় করতে পারা গেল না । বারুণী শুধু নীরবে ভীরু চোখে চাইলে নন্দর দিকে। টাকাপয়সা সম্বন্ধে কোন কথা ব’লে চড় খাওয়ার ইচ্ছে তার আর নেই। নন্দ যেন বুঝল এই অভিমানী বারুণীকে । তাই সে যেন খোসামোদি ক’রে সাম্ভুনা দিয়ে বললে—সেদিন তোর কথা না শুনে খাজনার টাকাগুলো খরচ ক’রে ফেললাম রে—গোয়ালাকে দিলাম, ওষুধ কিনলাম— সমস্ত দোষ আজ নিজের ঘাড়ে নিলে নন, কিন্তু তবু কথা বলে না বারুণী, তবু কাছে আসে না। কাছাকাছিই দাড়িয়ে আছে সে—তবু অনেক দূরে চলে গেল যেন, দেখা ষায় না আর তাকে, চোখ বুজে দেথল নন্দ । কিন্তু তবু সে বকর বকর করলে কিছুক্ষণ, বললে –পাচ জনে কি মিথ্যে ভয়ই না দেখিয়েছিল। ওষুধ খেয়ে দিব্যি আছি । বলে—এ রোগ সারে না। বাজে কথা যত । কত দিন জল হয়নি বল দেখি—ঐ গরমেই মুখ দিয়ে রক্ত উঠেছিল। সমস্তটা হাসি দিয়ে বারুণীকে বুঝিয়ে দিল নন্দ । আর সঙ্গে সঙ্গে গলাটা মুড় মুড় ক’রে উঠল—নিশ্বাস বন্ধ ক’রে আপ্রাণ চেষ্টায় সেটা চাপতে লাগল নন্দ । শেষ পর্য্যস্ত পেরে উঠল না। তবু বারুণীর স্বমুখে সে কালব্যাধির রক্তাক্ষরগুলি দেখাবে না-বারুণীর স্বমুখ থেকে একরকম ছুটে বেরিয়ে গেল । বারুণীর সমস্ত মাধুর্ঘ্য নিশ্চিহ্ন হয়ে গেল। একটা ষড়যন্ত্ৰ যেন প্রকাশ হ’য়ে গিয়েছে—এই ভাবে অপরাধী