পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪৯০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8ማህ” ●श्वबांजौ ASSR, নিস্পৃহতায়। যত ব্যবধান সে স্থই করে—তত যেন তার লোভ বেড়ে যায় । সেদিন সন্ধ্যায় জ’লো মেঘের দলে আকাশ ভরে গেল। ধুলো-উড়নো ঠাও বাতাসে নম্বর মন নেচে উঠল আনন্দে হালকা পালকের মত। বীজধানের বস্তা খুলে দেখলে—হালের গোরুদুটোর মুখে খড় দিয়ে এল। বারুণীর সঙ্গে কেমন অদ্ভূত ভাবে আস্তে আস্তে কবে থেকে কথার ধারাও বন্ধ হয়ে গিয়েছে—তুলোকে মাঝ থানে রেখে অভাব-অভিযোগের কচিং দু-একটা কথা হয় হয়ত। আজ কথা বলবার লোকের অভাবে নন্দ ভূলোকেই ডেকে বললে—খুব ভারী জল নামবে—না রে ভুলো ? তুলে ভয়ে ভয়ে বললে—স্থ । জলো হাওয়ার মুখে দাড়িয়ে নন্দ বললে—আঃ, বাচ। গেল। চাষ-বাস স্বরু হবে এইবার। রায়বাবুদের চড়ার জমিটা কোন রকমে করিয়ে নিতে হবে-ধরব হাতে পায়ে, কেঁদে-কেটে পড়ব । সেই খালধারের জমি— জানিস তো ? বেশ ধান হয়। - সন্ধোর পর জল নামল কিন্তু রায়েদের জমি ভাগচাষে বন্দোবস্ত করতে যাওয়ার জন্যে ইনাথকে পাওয়া গেল না। জলে ভিজতে ভিজতে ইনাথের ছেলে সাধু সদ্ধের পর খবর দিয়ে গেল, বুড়ে মরে গিয়েছে। —কি রকম ! নন্দ থ হয়ে গেল, সকালে যে দেখলাম, ভাল মানুষ রে । কিন্তু শ্ৰীনাথ মরে গিয়েছে। কেনালের মাটি কাটার কাজ হচ্ছে—কাজের শেষে শ্ৰীনাথ ঘরে ফিরছিল। কিন্তু ঘর পর্যান্ত পৌছতে পারে নি-কঠাৎ দৈহিক অবসন্নতায় একটু জিরোবার জন্তে পথের ধারে অশথ গাছটার তলে বসে পড়েছিল, হাতে কোদাল । বুড়োর সেই বলাই শেষ বস। সাধু পরে আসছিল। গাছের তলায় অমন সন্ধোবেলা কে বসে আছে—ডাকাডাকি ক’রে সাড়া না পেয়ে শেষকালে কাছে গিয়ে চিনলে সাধু। বহুদিনের ক্রনাথ—ৰাজন্ম বহু স্মৃতির সঙ্গে জড়িত । সে জার কোন দিনই জাসবে না। নন্দর চোখে জলের ধারা নামল । বললে—আজি জল থেমে গিয়েছে কিন্তু আকাশে কালো মেঘের দল অন্ধকার করে আছে। বুড়ে ত্রনাথের মৃত্যু পল্লীর শস্বহীন গভীর রাত্রিকে যেন ঘন ঘোর করে তুলেছে। নন্মর চোখে ঘুম নেই। একটা নিরবয়ব অসহায় চেতনার মধ্যে সে মোহাচ্ছন্ন হয়ে গিয়েছে। সেও এক দিন এমনি রাতে হয়ত মরে যাবে। গ্রাম ছেড়ে, সমস্ত পরিচিত আবহাওয়া ছেড়ে কোথায় চলে গেল নন্দ নিঃশব্দ অন্ধকারে । এমনি কত দিন কত জন মরে গিয়েছে—তারা যেন সবাই অন্ধকারের অন্তরালে আজ ভিড় ক’রে দাড়িয়ে নম্বর দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে আছে—কোথায় কত দেশে । কিন্তু বারুণী পাশের বিছানায় হয়ত অকাতরে ঘুমোচ্ছে। পুরানো বারুণী আর নেই, ভাবলে নন্দ । 碌 碌 碌 ঝাকড় পাকা চুল ইনাথের-তুরুর চুলগুলোও পাক, কুঁচকে ঝুলে পড়েছে চামড়া চোখের উপরে। তার মধ্যে থেকে দুটাে ঘোলাটে চোখের দৃষ্ট যেন চোখের উপরে দেখতে লাগল বারুণী । শিয়রের রুদ্ধ জানালাটায় বাতাস গুমরে উঠল, জানালাটা নড়ে উঠল—বfরুণীর সমস্ত দেহ ঠাগু হয়ে গেল। তার মনে হ’ল, নন্দকে যেন ডাকতে এসেছে বুড়ো দত্তদের পুকুরে মাছ চুরি করতে যাওয়ার জন্যে। রুদ্ধ জানালা, তবু যেন তার মনে হ’ল, রেলিং ধরে বুড়ো দাড়িয়ে আছে বাইরে-অন্ধকারে এলোমেলো পাক চুলগুলো স্পষ্ট হয়ে উঠেছে—আর জল্‌জলে চোখের দৃষ্ট ; হিস্ হিস্ করছে সাপের মত, নন্দ নন্দ । --ই তার কাশির শব্দ—উঠোনে যেন পায়চারি করছে তার পায়ের শক – 碌 囊 碌 নন্দ বললে—কি রে-উঠে এলি যে ! বারুণী বললে—ভয় লাগছেবডড। অসহায় কণ্ঠে বললে, কে যেন কাশল—শুনছ না ! — দূর পাগলী, আমি মরে গেলে ঘর করবি কি ক’রে ! নন্দ হাসলে, আদরের কোমলতার কথাগুলি ওর আস্তর থেকে যেন তরল হয়ে বেরিয়ে এল।