পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Fx

“S. Fiன் কালিন্দী ঐতারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় 5 צ জ্যৈষ্ঠের শেষে কয়েক পশলা বৃষ্টি হইয়া গিয়াছে, মাটি ভিজিয়া সরস হইয়া উঠিয়াছে। চাষীর দল হাল-গরু লইয়া মাঠে গিয়া পড়িল । ধানচাষের সময় একেবারে মাথার উপর আসিয়া পড়িয়াছে, কাজেই নবীন ও রংলাল ধানের জমি লইয়া ব্যস্ত হইয়া পড়িল। ধানের বীজ বুনিবার জন্য হাফরের জমিতে আগে হইতেই চাষ দেওয়া ছিল, এখন আবার তাহাতে দুই বার লাঙ্গল দিয়া তাহার উপর মই চালাইয়া জমি কয়খানির মাটি ভূরার মত গুড়া করিয়া বীজ বুনিয়া দিল । অন্য জমি হইতে বীজের জমিগুলিকে পৃথক ভাবে চিহ্নিত করিয়া রাখিবার জন্য একখানা করিয়া তালপাত কাটিয়া তাহাতে পুতিয়া রাখিল। ঐ চিহ্ন দেখিয়াই রাখালের সাবধান হইবে, এই জামগুলিতে গরুবাছুর নামিতে দিবে না। আষাঢ়ের মাঝামাঝি আবার এক পশলা জোর বৃষ্টি নার্মিলীললে মাটি অতিরিক্ত নরম হওয়ায় চাষ বন্ধ হইয়া গেল। নবীন আসিয়া বলিল—মোড়ল, এইবারে চরের উপর এক বার জোটপাট ক'রে চল । এখন এক বার চষেকুড়ে না রাখতে পারলে আশিন-কাতিক মাসে কি আর ওখানে ঢোকা যাবে! একেই তো বেনার মুড়োতে আদার হয়ে আছে। রংলাল বসিয়া বসিয়া তামাক থাইতেছিল, সে বলিল— এই বসে বসে আমিও ঐ কথাই ভাবছিলাম লোহার। ওখানে তো একা এক কাজ সুবিধে হবে না, উ তোমার ‘গাতো’ ক’রে কাজ করতে হবে। এক বারে পাচ জনার হাল—আমার দুখানা—তোমার দুখানা—আর উ তিন জনার তিনখানা—এই সাতখানা হাল নিয়ে এক বারে পড়তে হবে । ওদের জমিতে এক দিন ক’রে আর আমাদের দুখানা করে হাল-আমর দু-দিন ক’রে লোব। বলিয়া সে স্থা কা হইতে কৰে থসাইয়া নবীনকে দিয়া বলিল-লাও, খাও। কস্কেতে টান মারিয়াই নবীন কাশিয়া সারা হইয়া গেল, কাশিতে কাশিতে বলিল—বাবা রে, এ যে বিষ! বেজায় চড়া হয়ে গিয়েছে হে ! হাসিয়া রংলাল বলিল—হু—ছ, বর্ষার জন্যে তৈরি ক’রে রাখলাম। জলে ভিজে হালুনি যখন লাগবে, তখন তোমার একটান টানলেই গর-ম হয়ে যাবে শরীর । –তা বটে। এখন কিন্তু এ তোমার বিষ হয়ে উঠেছে। বলিয়া সে কস্কেটি আবার গোষ্ঠকে ফিরাইয়া দিল । বুংলাল বলিল—ত হ’লে কালই চল সব জোটপাট করে। মাঠানে তো এখন তোমার দু-তিন দিন হাল , লাগবে না । —তাতেই তো এলাম গো তোমার কাছে । বলি, মোড়লের ঘুম ভাঙিয়ে আসি এক বার। এই নরম মাটিতে বেনা-কাশ বেবাক উঠে যাবে তোমার –কিন্তু একটা কথা আমি ভাবছি হে। ভাবছি, চক্কবতি-বাড়ী থেকে যদি হাঙ্গাম-হজ্জোত করে তো কি হবে । জমি তো বন্দোবস্ত ক’রে দেয় নাই ! —ক্ষেপেছ তুমি! হাঙ্গামা করবে কে হে বাপু ? কত্তা তো ক্ষেপে গিয়েছে। আবার নাকি শুনছি, বড় রোগ হয়েছে হাতে। বড় ছেলে তো কালাপানি, ছোটজনা তো পড়তে গিয়েছে ক-দিন হ’ল। মজুমদারের জবাব হয়ে গিয়েছে। আর মজুমদারই তো তোমার স্থা ক’রে আছে, আবার এক বার বাগ পেলে হয়! থাকবার মধ্যে গিমীমা—আর মানদা ঝি। হুকুম দেবে গিল্পীমা আর লড়বে তোমার মানদা ঝি, না কি ? বলিয়া রংলাল হো হো করিয়া হাসিয়া সারা হইল।