পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ડૅન્ગ প্রবাসী به هیه که در নবীন আস্তে আস্তে ঘাড় নাড়িয় বলিল—উ হু। ছোটজন ভারি স্থসিয়ার ছেলে হে, সে ভারি এক চাল চেলে গিয়েছে। সেই যি পঞ্চাশ বিঘে জমি-আমাদিকে ও দিলে না, সাওতালদিগেও দিলে না, সেই জমিট ভাগে বন্দোবস্ত ক’রে গিয়েছে—যত ছোকরা মাঝিদিগে। এখন যা হয়েছে তাতে গিন্নীঠাকরুণ হুকুম দিলে, গোটা সাওতাল পাড়া হয়তো ভেঙে আসবে। এবার রংলাল বেশ একটু চিন্তিত হইয়া পড়িল, নীরবে বসিয়া মাথার চুলের মধ্যে আঙল চালাইয়া মুঠায় ধরিয়া চুল টানিতে স্বরু করিল। নবীন আপনার পায়ের বুড়ে আঙুলের নখ টিপিতেছিল। কিছু ক্ষণ পর সে ডাকিল, . মোড়ল ! — উ । —ত হ’লে ? —সেই ভাবছি। —আমি বলছিলাম কি, গিল্পীঠাকরুণের কাছে গিয়ে বন্দোবস্তের হাঙ্গামা মিটিয়ে ফেলাই ভাল। কাজ কি বাপু, লোকের ন্যায্য পাওনা ফাকি দিয়ে! তার উপর ধর, জমিদার ব্রাহ্মণ । —উ ছ, সে হবে না । না, তখন দেব না । —ত হ’লে ? —ত হ’লে আর কি হবে ; হাল-গরু নিয়ে চল তো কাল—তার পর যা হয় হবে । —উঠিয়ে দিলে তো মান থাকবে না, সে কথাটা ভাব । রংলাল এবার খানিকট মুচকি হাসিল, তার পর বলিল-তখন মেজেষ্টারীতে দরখাস্ত দেব যে, আমাদের জমি থেকে জোর করে আমাদের তুলে দিয়েছে। নবীন চক্ৰবৰ্ত্তী-বাড়ীর অনেক দিনের চাকর, উপস্থিত চাকরি না থাকিলেও এই পুরাতন মনিব-বাড়ীর জন্য সে খানিকটা মমতা অল্পভব করে । সেই প্রভুবংশের সহিত এই ধারায় বিরোধ করিতে তাহার মন সায় দিল না ! ,দ মাথা হেঁট করিয়া বসিয়া রহিল। রংলাল বলিল—কি হ’ল, চুপ ক’রে রইলে যে ! চলই তো জোটপাট ক’রে, দেখাই যাক না কি হয় । যখন বলেছি, সেলামী দেব ১৩৪৬ নবীন এবার বলিল—সে ভাই আমি পারব না। লোকে কি বলবে এক বার ভাব দেখি ! ংলাল হাসিল, তার পর দুই হাতের বুড়া আঙুল দুইটি একত্র করিয়া নবীনের মুখের কাছে ধরিয়া বলিল -কচু ! লোকে বলবে কচু! তুমি ঘরে তুলবে আলু গম কলাই গুড়, আর লোকে বলবে কচু ! নবীন তবুও চুপ করিয়া বসিয়া রহিল। রংলাল এবার তাহার হাত ধরিয়া টানিয়া বলিল, চল, এক বার ঘুরে ফিরে ভাবগতিকটা বুঝে আসি। সাওতাল বেটাদের কি রকম হুকুম-টুকুম দেওয়া আছে, গেলেই জানা যাবে। আর তোমার জমিটার অবস্থাও দেখা হবে। চল, চল । নবীন ইহাতে আপত্তি করিল না, উঠিল। কালী নদীতে ইহার মধ্যে জল খানিকটা বাড়িয়াছে, এখন হাট পয্যন্ত ডুবিয়া যায়। কয়েক দিন আগে জল অনেকটা বাড়িয়া উঠিয়াছিল, উপরের বালুচর পর্য্যস্ত ছিলছিলে রাঙা জলে ডুবিয়া গিয়াছিল। জল এখন নামিয়া গিয়াছে, বালির উপরে পাতলা এক স্তর লাল মাটি জমিয়া আছে । রৌদ্রের উত্তাপে এখন সে স্তরটি ফাটিয়া টুকরা টুকরা হইয় গিয়াছে, পা দিলেই মুড় মুণ্ড করিয়া ভাঙিয়া বালির সহিত মিশিয়া যায়। তবুও এই লক্ষ টুকরায় বিভক্ত পাতলা মাটির স্তরের উপর এখনও কত বিচিত্র ছf জাগিধা আছে। কাচা মাটির উপর পার্থীরা পায়ের দাগ রাখিয়া গিয়াছে, আঁকাবাকা সারিতে নক্সা অঁাকা কাপড়ের চেয়েও বিচিত্র ছক সাজাইয়া তুলিয়াছে যেন। তাহারই মধ্যে প্রকাও চওড়া মানুষের দুষ্টটি পায়ের ছাপ চলিয়া গিয়াছে। এ বোধ করি ঐ কণ ঝর পায়ের দাগ ! একটা প্রকাণ্ড সাপ চলিয়া যাওয়ার মহণ বঙ্কিম রেখা একেবারে চরের কোল পয্যন্ত বিস্তৃত হইয়া আছে । ইহারই মধ্যে তীক্ষ দৃষ্টিতে দেখিলে দেখা যায় অতি সূক্ষ্ম বিচিত্র রেখায় লক্ষ লক্ষ পতঙ্গের পদচিহ্ন। বেন ও কাশের গুল্মে ইহারই মধ্যে সতেজ সবুজ পাত বাহির হইয়া বেশ জমাট বাধিয়া উঠিয়াছে, বন্য লতাগুলিতে নূতন ডগা দেখা দিয়াছে, ভিতরে ভিতরে শিকড় হইতে কত নূতন গাছ গজাইয়া গিয়াছে, সাওতালদের