পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫৪৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মাখ কাবুলের চিঠি ৫৬১ তার কতটুকু অংশ শস্য বা মাতুষ বহন করতে পারে । বুদ্ধির প্রয়োগেই মুক্তির উপায় খুজে দরিদ্র দেশ নানা ক্ষেত্রে প্রাণশক্তির পরিচয় দিচ্ছে । আমানুল্লা চেয়েছিলেন এক রাতে গড়া কল্পরাজ্য, ভিত্তি বানাবার শক্তি বা ধৈৰ্য্যের অভাবে তার উদ্যম ব্যর্থ হয়েছিল, রাষ্ট্রিক বাধার চেয়ে সেইটেই গুরুতর কারণ। নূতন আমলে আদর্শকে মাটিতে গাথবার চেষ্টা চলেছে দেখে উৎসাহিত হয়েছি । শিক্ষার চাষ স্বরু হয়েছে ; যেটুকু ফসল তার সবটাই বিন মাগুলে জনসাধারণের প্রাপ্য, এ বিষয়ে এর ভারত্রের চেয়ে অগ্রগামী । বুখাবন্দিনী নারীর দুর্গে শিক্ষা হচ্ছে নার্সিং এবং চিকিৎসাশাস্থের যোগে–ধারাবাহিক বক্তৃতার আয়োজন হয়েছে । আফগানীর যুরোপীয় স্বী পৰ্য্যন্ত এথানে জেনানা মানতে বাধ্য ; অথচ কাবুলের পথে দেখ জাপানী, ইরানী, তুকী, যুরোপীয় লেগেশনের নারী স্বচ্ছন্দে ঘুরছেন। এর ফন হ’তে বাধ্য। ইসলাম ধৰ্ম্মের উদারতা যেখানে নকল মোল্লার অতুশাসনে ভ্ৰষ্ট সেখানেও জ্ঞানের ক্রিয়া চলছে—ধর্মের সত্য জয়ী হবেই নূতন যুগের কৰ্ম্মে । কাবুলের দ্রষ্টব্য চোখে দেখাই উচিত—তার বিষয়ে লিথে পড়ে কী লাভ ? এখানকার আকাশকে বাদ দিয়ে কেমন ক’রে দেখাব বা বরের সমাধি-উদ্যান শহরের প্রাস্ত-পাহাড়ে ? কাশ্মীরের শালিমার নিশাতে র চেয়ে এই বাগানের মাধুর্য্য কম নয় ; সামনে কো-হি-বাবার শুভ্ৰ শৈলমালা গৌরব বাড়িয়েছে। কাবুল নদীর উপত্যকায় খামলের ঢেউ, মধ্যে মধ্যে গেরুয়া মাটির বাড়ী ; পথের দু-ধারে গাছের বীথিকা, পাহাড়ের ঢালুতে যব, গম, ধানের সোমালি সবুজ মিশেছে নীলাভ ছায়ায় । কাবুলের লোকালয় গিরিপাত্রে বিধৃত । এইখানে চিরবিশ্রাম করতে চেয়েছিলেন বাবর ; আগ্ৰী হ’তে তার দেহ বহন ক’রে আনা হয়েছিল লক্ষ লোকের সমারোহে । বালা-হিসার দুর্গে দশকের ভিড় । ইতিহাসের কাহিনী কাবুলের রাজপথ পুঞ্জীভূত ক’রে রেখেছে কাবুলের অপর প্রাস্তে । দার-উল-আমান অঞ্চলে নূতন শহরতলী গড়ে উঠছে ; য়ুনিভাসিটি, মুজিয়ম, উচ্চকৰ্ম্মচারীর উপনিবেশ রমণীয় স্থাপত্যে বিদ্যমান। পনেরো দিনের মেয়াদে দেখবার সময় যথেষ্ট ; পাথমান কাবুলের পাশেই, উচু পাহাড়ে, ফলফুলঝরণায় শোভিত উংসবের কেন্দ্র । কাবুলের প্রসিদ্ধ অর্ক এবং চিল-সতুন প্রাসাদ চোখে পড়বেই। কালে শোনবার কাজেও ব্যস্ত ছিলাম-লেগেশনগুলিতে যাবার বাধা হয় নি । দরজা থোলবার জাঙ্কু আছে অক্সফোর্ডের চাবিতে এবং রাষ্ট্রিক উদ্দেশ্যের দারুণ অভাবে । মুসাফিরকে কে ঠেকাবে ; দুঃখের বিষয় তাকেও আজ তার লক্ষ্মীছাড়া দশা প্রমাণিত করতে হয় পুথিপত্রের যোগে । কাবুলের হিন্দু মন্দির এবং বৌদ্ধ শু প চাকরি মিনার আবশুদর্শনীয় । সবচেয়ে দেথ বার, ভোলবার, স্বেচ্ছায় পথ হারাবার জায়গা পুরোনো বাজার । শিরাজ ৬ মাস্কাস জেরুজালেমের প্রাচীন ঢাকা বাজারের বহু স্মৃতি ঘনিয়ে এল । ধুলো, আইস-ক্রীম, উগ্র গ্রামোফোন, fহং, কাবাবের গন্ধ, ঘণ্টার শব্দ, অবিশ্বাস্থ্য সুন্দর ঘোড়ার সাজ, চিত্রিত ছেড়া গিলিমের পদ, মেওয়ার সোনালী স্ত,প, কী আছে, কী নেই, কী না হ’তে পারে এই বাজারে । এই বার চরিখর হয়ে বামিয়ানের পথে যাত্র অমুদরিয়ার দিকে মুথ ক’রে ।