পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫৭৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

कोस्लुब् কালিন্দী ہ:مناq আপনার এখানে—তাতেও আরম্ভ করুন আখের চাষ । কল আপনাদের অনিষ্ট করবে না—ভালই করবে। ভাল কথা, এখানে এবারেই আমার ইট হবে পনর লাখ। আপনার তো দোকান এই চরের উপরেই—আমার অনেক কুলী আসবে শহর থেকে ইট তৈরি করবার জন্যে, দু-মাসের মধ্যেই এসে পড়বে, দোকান আপনি বাড়িয়ে ফেলুন। ঐবাসের মুখ ধীরে ধীরে কোমল ও উজ্জল হইয় উঠিল, সে এবার বলিল—ত আপনাদের মত ধনী লোক যেখানে আসবে সেখানে তো দশের অবস্থা ভালই হবে। দোকান আমি হুকুম হ’লেই বাড়াব। আর দেখতে শুনতে যা-হয় সব আমি দেখে শুনে দোব। এই দেখুন এই সব সাঁওতাল সব আমার তাবে । আমার কাছেই ধান খায় বছর বছর । এক নেয় এক দেয়। ওদের সঙ্গে খুব মুখ আমার । লোকজন যা দরকার হবে, সব আমি ঠিক ক’রে দোব । ঘোষ বলিল-আজকে এত ভিড় কিসের হে ? --আঞ্জে, আজ ওদের ‘রোয়া’ পরব। মানে, চাষের জল তো লেগে গেল, তা ধান রুইবার আগে ওরা পূজো-টুজো দেবে। তার পর চাষে লাগবে। তাই সব জিনিসপত্তর নিচ্ছে, আর খোরাকীর ধানও নিচ্ছে । বিমলবাবু বলিলেন—তাই নাকি, আজ ওদের পর্ব ? তা হ’লে তো বড় ভাল দিনে এসে পড়েছি। বাঃ । কই, ওদের সর্দার কই ? সাওতালদের সমস্ত দলটি নীরবে বসিয়া এক বিচিত্র দৃষ্টি দিয়া বিমলবাবুকে দেখিতেছিল, বিস্ময়, ভয় শ্রদ্ধা, সঙ্গে সঙ্গে আরও অনেক কিছু সে-দৃষ্টির মধ্যে প্রকাশ পাইতেছিল। বিমলবাবুর আহানেও কমল সাড়া দিল ন, তাহার প্রকাগু দেহ লইয়া সে খানিকটা নড়িয়া চড়িয়া বসিল মাত্র । ঐ বাস ব্যস্ত হইয়া উঠিল, বিমলবাবুকে সন্ত্রম ও সাওতালদের উপর আধিপত্য ছইই একসঙ্গে দেখাইয়া ব্যস্ত ভাবে বিরক্তিপূর্ণ কণ্ঠস্বরে বলিল—এই কমল মাঝি, কানে তোর কথা ঢুকছে না না কি ? ইদিকে আয় ; কতবড় লোক একটা ডাকছেন দেখছিস না ! কমল এবার উঠিয়া ধীরে ধীরে আসিয়া নত হইয়া প্ৰণাম জানাইয়া বলিল—কি বলছিন—আপুনি ? হাসিয়া বিমলবাবু পরিষ্কার সাওতালী ভাষায় বলিলেন—তুমি এখানকার সর্দার ? কমল অবাক হইয়া গেল, অদূরে উপবিষ্ট সাওতালদেরও বিস্ময়ের সীমা রহিল না, তাহাদের মধ্যে মৃদু গুঞ্জন উঠিল,—এই, এই বাবু আমাদের কথা বলছে, আমাদের কথা বলছে ! উ বাবারে! বিমলবাবু সাঁওতালীতেই বলিলেন—হঁ্যা তোদের ভাষাতেই কথা বলছি আমি । কমল ভাঙা ভাঙা বাংলাতে প্রশ্ন করিল—আমাদের ভাষা আপুনি কি ক’রে জানলি বাবু ? —আমার কাছে অনেক সাওতাল কাজ করে । আমার তিনটে কল আছে। কল বুঝিস তো ? —ই-ই। আপুনি চলে, খুব ধূয় উঠে—হিস্ হিল ক’রে । একটো এই মোটা এই বড় লোহার চোঙা থেকে ধূয়া উঠে—গুম্‌ গুম্‌ শব্দ উঠে। বয়লা ব’লে—ইঞ্জি বলে— —হ্যা । বয়লার-এঞ্জিনে কাজ হয় কলে । এখানেও একটি কল করব আমি । তোরা সব কাজ করবি । তার পর—আজ তোদের রোয়া পরব বটে ! নয় ? কমলের বড় বড় হলুদ রঙের দাতগুলি বাহির হইয়া পড়িল, বলিল—তাই তো করছি গো ! জল তো অনেক হো-য়ে গে-লো। বীজ চারাগুলি বড় বড় হইছে, আর বসে থেকে কি হবে ? —ঠিক ঠিক । তা—চিৎ কোপে জম এডুয়া ? আজ কি কি খাওয়া-দাওয়া হবে রে ? এ্যা! হাসিয়া কমল এবার নিজের ভাষাতেই বলিল-জেল, দাকা, হাণ্ডি । —ও তা হ’লে তো আজ ভোজ রে তোদের । মাংস, ভাত, পচুই—অনেক ব্যাপার যে ! কত হাণ্ডি করেছিল ? সলজ ভাবে কমল বলিল—করলম তা মেলাই হবে গো । মেয়েগুলা খাবে, আমরা খাব, তবে তো আমোদ হবে ! —ঠক ঠিক । তা বেশ । এই নে, আজ তোদের পরবের দিন-খাওয়া-দাওয়া করবি । বলিয়া মনিব্যাগ