পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫৭৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ফাত্তন कांजिन्ही Q~9 বৈচিত্র্যে সম্পদে অপরূপ হইয়া প্রকাশ পাইতে আরম্ভ করিয়াছে ; গভীর তমিশ্ৰাময়ী কালি যেন কমলা রূপে রূপান্তরিত হইতেছেন । অচিস্ত্যবাৰু লক্ষ্য করিতেছিলেন বেনা ঘাসের গাঢ় সবুজ ঘন জঙ্গল চরের এক প্রাস্ত হইতে আর এক প্রাস্ত পধ্যস্ত চলিয়া গিয়াছে। তিনি একটা দীর্ঘনিশ্বাস ফেলিলেন । উ, রাশি রাশি খস খস ঐ ঘন সবুজ আন্তরণের নীচে লুকাইয়া আছে । খেয়াঘাটের ঠিকাদার ঠিক এই সময়েই ঘাটে আসিয়া উপস্থিত হইল । অচিস্ত্যবাবুকে দেখিয়া সে একটি প্রণাম করিয়া বলিল—আজি আঞ্জে ভাগ্যি আমার ভাল । পেভাতেই বাহ্মণ দর্শন হ’ল । এই ঘাট নিয়ে বুঝলেন f' না, কত যে জাত-অজাতের মুখ সকালে দেখতে হয় ! এ কাজ আপনার অতি পাজী কাজ মশায় । তবে দুটো পয়স আসে, তাই বলি– - অসমাপ্ত কথা—সে আকর্ণ-বিস্তার হাসিয়া শেষ করিল। অচিস্তবাবু আবার একটা দীর্ঘনিশ্বাস ফেলিয়া বলিলেন—লাভ এবার তোমার ভালই হবে, বুঝলে কি না! ওপারের চরে কল বসছে, চিনির কল ! লোকজনের আনাগোনা দেখতে দেখতে বেড়ে যাবে তোমার । ঠিকাদার সবিস্ময়ে অচিন্ত্যবাবুর মুখের দিকে চাহিয়া বলিল—কল ? চিনির কল ? —হঁ্যা চিনির কল! কাল কলকাতা থেকে মস্ত এক মহাজন এসেছে, সঙ্গে একটি ছালা টাকা! আমি নিজের চোখে দেখেছি। কাল আমার ছোট-রায়ের বাড়ীতে নেমস্তন্ত্র ছিল কি না ! ঠিকাদার কিছুক্ষণ চুপ করিয়া থাকিয়া বলিল, আচ্ছা ই টাকা কে পাযে ? চরটা তো চক্কবতী বাড়ীরই বলছে সবাই ; ত ছোট-রায়মশায়ের বাড়ীতে—? —ছোট-রায়ুমশাইই আজকাল ওদের কর্তা যে! উনিই সব দেখাশুনো করছেন যে ! বার-বার ঘাড় নাড়িয়া ঠিকাদার বলিল—বটে, আজ্ঞে বটে ! তা দেখলাম কাল, এইখানেই চক্কবতী বাড়ীর ছোট্‌কা আর রায়মশায়ের ছেলে—বসেছিল অ্যানেকক্ষণ ; খুব ভাব দেখলাম দু-জনায়। আনেক কথা হ’ল দুজনায়। —ছ। অচিস্ত্যবাৰু খুব গম্ভীর হইয়া বলিলেন-হু!” আচ্ছা কি কথা দু-জনের হচ্ছিল বল তো ? স্বদেশীর কথা ? মানে, সায়েবদিকে তাড়াতে হবে, বন্দেমাতরম, মহাত্মা গান্ধীকি জয়, এই সব কথা হচ্ছিল ? —আজ্ঞে না। আমি তো টুক্‌চে দূরে বসেছিলাম । তবে শুনছিলাম কান বাজিয়ে, কাল কথা হছিল আজ্ঞে, আমি অঁাচে বুঝলাম-কথা হছিল আপনার-আচ্ছা উমা কার নাম বলেন তো ? এই ছোট-রায়ের ঝিউড়ী মেয়ে লয় ? —হঁ্যা-হঁ্যা । আমি তাকে পড়াতাম যে ! বলিতে বলিতেই অচিন্তবাবুর ক্র কুঞ্চিত হইয়া উঠিল, বলিলেন— মেয়েটাকে কলকাতায় পাঠিয়ে ধিঙ্গী করে তুললে! ছোটরায় বাইরে বাঘ—আর ভিতরে একবারে শেয়াল ! বুঝলে কি না, গিন্নীর কাছে একবারে কেঁচে । মেয়েকে যে ভয় করে—তাকে আমি ঘেন্না করি, বুঝলে ! —আঞ্জে হ্যা ! তা কাল আপনার ছোট-রায়ের ছেলে ঐ চক্কবতী বাড়ীর ছোটুকাকে ধরেছিল—বলে তোমাকে তাকে বিয়ে করতে হবে ! —বল কি ! অচিস্ত্যবাবু একেবারে তীরের মত সোজা হইয়া দাড়াইয়া উঠিলেন। বার-বার ঘাড় নাড়িয়া উপলব্ধি করার ভঙ্গিতে বলিলেন,—ঠিক কথা ! ইন্দ্র রায়ের মতলব এতদিন ঠাওর করতে পারছিলাম না । স্থ – অহীন্দ্র ছেলেটি যে হীরের টুকরো ছেলে ! এবারে ও তোমার ফোর্থ হয়েছে ইউনিভার্সিটিতে ! বটে ! ঠিক শুনেছ তুমি! —আজ্ঞে হঁ্যা ! বয়সেও যে অ্যানেকটে হ’ল । মানুষ ইা করলেই বুঝতে পারি, কি বলবে। তা ছাড়া আপনার, রায়মশায়ের মেয়ের বিয়েরও তো আপনার হ্যাঙ্গামা আছে গো ! চক্কবতী-বাড়ীর বউ আর রায়ুমশায়ের বুন। কুলের খুত ধরতে তো লোকে রায়মশায়েরই ধরবে । —ওরে বাপ রে, বাপ রে! এই দেখ, কথাটা একবারে ভুলেই গিয়েছিলাম আমি ! তুমি তো ভয়ানক বুদ্ধিমান