পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

($$ করে--একবারে রুদ্রাক্ষের মালার মত গাথা ! দেখ, বিচার ক’রে দেখ—যদি সকলের হয় সকলে নেবে। চক্ৰবৰ্ত্তীদের একা হয়—একাই নেবে চক্ৰবৰ্ত্তীরা। একা তোমার হয় তুমি নাও, তার পর তুমি দান কর মেয়ে-জামাইকে— নিজে রাখ-যা হয় কর । তখন বলতে আসি-কান দুটো ধরে মলে দিয়ো । ইন্দ্র রায়ের কানে ইহার একটা কথাও প্রবেশ করিল না। ধীরে ধীরে তিনি আত্মসম্বরণ করিয়া এতক্ষণে একটা গভীর দীর্ঘনিশ্বাস ফেলিয়া বলিলেন—তারা—তারা মা ! তার পর তিনি ডাকিলেন—গোবিন্দ । ওরে গোবিন্দ ! গোবিন্দ, রায়ের চাকর । চাকরের সাড়া না পাইয়া তিনি ডাকিলেন—ঘরের মধ্যে কে রয়েছে ? ঘরের মধ্যে ছিল অমল ও অহীন্দ্র । অহীন্দ্র বিস্ফারিত দৃষ্টিতে স্তম্ভিতের মত বসিয়াছিল, আর অমল হাসিয়া গড়াইয়া পড়িতেছিল, বলিল-কুরুকুল চীৎকার করছে, পাণ্ডব-যাদবের মিতালি দেখে । মাই গড় ! পিতার স্বর শুনিয়া সে হাসি থামাইয়া বাহিরে আসিতেই রায় বলিলেম—গোবিন্দ কোথায় ? এদের তামাক দিতে বল তো ! শূলপাণি বলিল—তামাক আমরা ঢের খেয়েছি, তামাক খেতে আমরা আসি নি। আগে আমাদের কথার জবাব চাই ! —কথার জবাব ? সঙ্গে সঙ্গে ক্রোধে রায়ের মাথা উত্তপ্ত হইয়া উঠিল কিন্তু বিপুল ধৈৰ্য্যের সহিত আত্মসম্বরণ করিয়া কিছুক্ষণ পর বলিলেন–জবাব আমি এখনই দিতে পারলাম না । ও-বেলায় দু-এক জন আসবেন, জবাব দেব আমি । শূলপাণি আবার লাফ দিয়া উঠিতেছিল, কিন্তু হরিশ তাহাকে থামাইয়া দিয়া বলিল,—থাম তুমি শূলপাণি ; ইন্দ্ৰ হ’ল এখন আমাদের রায়গুষ্ঠির প্রধান লোক, তার সঙ্গে এমন ক’রে কথা কইতে নাই। আমি বলছি । শূলপাণি সঙ্গে সঙ্গে হরিশের উপরেই ক্রোধে ক্ষিপ্ত হইয়া উঠিল । বলিল–যা যা যাঃ-তোষামুদে কোথাকার! তোষামুদি করতে হয় তুই করগে যা ! আমি করব না। আচ্ছা, আচ্ছা, কে যায় চরের উপর দেখা যাবে। প্রবাঙ্গী Megòs বলিয়া সে হন হন করিয়া কাছারির বারান্দা হইতে নামিয়া চলিয়া গেল । হরিশ বলিল—ত হ’লে মামলা-মোকদ্দমাই স্থির ইন্দ্র । ইন্দ্র রায় বলিলেন—আপনার আগে আগে গেলে আমাকে রামেশ্বরের হয়ে পেছন পেছন যেতে হবে বই কি ! হরিশ বলিল—তুমি ঠকবে ইন্দ্র । আমার কাছে এমন কাগজ আছে—একেবারে ব্রহ্মাস্ত্ৰ ! ইন্দ্র রায় হাসিলেন ; কোন উত্তর দিলেন না। আবার এক বার আস্ফালন করিয়া সকলে চলিয়া গেল। শূলপাণি তখনও চলিয়া যায় নাই, সে ইন্দ্র রায়ের দারোয়ানের নিকট হইতে খইনি লইয়া খাইতেছিল। রায় আজ অসময়ে অন্দরে প্রবেশ করিয়া বলিলেন – তৈম ! আমার আঙ্গিকের জায়গা কর তো ! অনদর হইতে হৈমবর্তীও সমস্ত শুনিয়াছিলেন, তিনিও আঞ্জ দিগভ্রান্তের মত বিহ্বল হইয়া পড়িয়াছেন। উমা, র্তাহার বড় আদরের উমা ! অতীন্দ্রও সোনার অহীন্দ্ৰ ! কিন্তু এ তো কোনদিন তিনি কল্পনা করেন নাই ! স্নান-আহ্নিক শেষে রায় আহারে বসিলেন, তৈম বলিলেন-ওদের কথায় তুমি কান দিয়ে না। কুৎসা করা ওদের স্বভাব | রায় মৃদু হাসিলেন, বলিলেন—আমি বিচলিত হই মি তৈম । 寨 熹 熹 সন্ধ্যায় তিনি বিমলবাবুকে লইয়া বসিলেন। বাধাবিল্পের সম্ভাবনার কথা সমস্তই বলিয়া বলিলেন-বাধাবিঘ্ন হবে এ আমি বিশ্বাস করি না। ওদের আমি জানি । তবে সমস্ত কথা আপনাকে আমার বলা দরকার । তাই বলছি । আপনি কাগজপত্র দেখুন—দেখলে সত্যকার আইনের দিকটাও দেথতে পাবেন । বিমলবাবু কাগজপত্রগুলি গভীর মনঃসংযোগ করিয়া পরীক্ষা করিয়া দেখিলেন, তার পর বলিলেন—অামার দিক থেকে কোনও আপত্তি নেই, আজই দলিল হয়ে যাক । টাকাকড়ির কথাবার্তা শেষ করিয়া তিনি অমলকে