পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫৯৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8لاول প্রবাসী SeB& - = --- سپہ আরও কয়েক বার সংসারের অসাচ্ছল্যের সময় ঐ চুড়ি বাধা দেওয়ার কথা উঠায় অনেক অপ্রতিকর ব্যাপার ঘটিয়া গিয়াছে। সে-সব স্মরণ করিয়াই কালিচরণ বলিল, “না, না, ও-সব হাঙ্গামায় কাজ নেই। তোমার অনস্ত দু-গাছা বরঞ্চ —” মা ঈষৎ ঝঙ্কার দিয়া কহিলেন, “ঐ তো বিধবার পুজি—যদি খোয় যায়—” { "কালিচরণ বলিল, “তাহলে চাকরির আশা ত্যাগ করতে হয় !” কথার শেষে সে একটি নিশ্বাস ফেলিল । ” “ মা বুদ্ধিমতীর মত পরামর্শ দিলেন, “তার চেয়ে বরঞ্চ আমার একগাছা অনন্ত নে, বৌমার আটগাছা চুড়ির মধ্যে চারগাছা নে ; তোর রাহাখরচ, থাইখরচ সবই তো লাগবে, এক-শ পচিশ টাকা ধার করে আনি।” ” কালিচরণ এ-প্রস্তাব সমর্থন করিল। মোক্ষদাও মুখে আনন্দ প্রকাশ করিয়া কহিল, “মার পুজিতে হাত দেওয়ার কি দরকার ছিল ! আমার হাত খালি করে যদি ভক্টি করে না দিতে পার-সে দোষ তোমারই । দু-গাছা নোয়া পরেও তো সধবার লক্ষণ বজায় রাখতে পারতাম ।’’ কালিচরণ মা এবং বে। দুই জনেরই বুদ্ধির প্রশংসা করিয়া পাজি খুলিয়া বসিল । ২৯শে সেপ্টেম্বর আপিসে যোগদানের শেষ তারিখ । আজ হইল ২৬শে । আজ আর কিছু এই অবেলায় যাত্র করা চলে না। টাকার জোগাড়, বিদেশ-বাসের জন্য কিছু ফরসা জামা কাপড় ও টুকিটাকি জিনিষের জোগাড়—সবই তো করিতে হইবে । তদুপরি অশ্লেষা নক্ষত্র । আগামী কালও তে যাত্রার পক্ষে দিনটি শুভ নহে। মঘা নক্ষত্র । কথায় বলে, “মঘ, এড়াবি ক-ঘা ।” পরশু দিনটি প্রশস্ততর না হইলেও যাত্রা করা চলে। কালবেল, বারবেল ইত্যাদি কাটাইয়া এক টুকরা মাহেন্দ্রযোগ যেন রহিয়াছে। যোগিনী দক্ষিণে নাই । ট্রেনের সময়টাও বেশ মিলিয়া যাইতেছে। উঠে পাখী না ছাড়ে বাসায় যাত্রা করিলে সামান্ত যে গণ্ডগোলটুকু আছে, কাটিয়া যাইবে । পরদিন অর্থাৎ তরণ্ড অবশ্য সবচেয়ে প্রশস্ত দিন। না আছে যোগিনীর বালাই, না বা কালবেলা বারবেলার হিড়িক । কিন্তু একেবারে চাকরিপ্রাপ্তির শেষ দিনে যাওয়াটা কি যুক্তিসঙ্গত। যে বেকারের ভিড় ভারতবর্ষে, এ হেন মুবর্ণ সুযোগ কি কেহ হেলায় হারাইতে চাহিবে ? ‘শুভস্য শীঘ্রম্ এ-কথাটাকে অগ্রাহ করাও তো যুক্তিযুক্ত নহে । “মা, শোন।” কালিচরণ ব্যগ্র কণ্ঠে হাকিল। মোক্ষদ। রান্নাঘর হইতে গলা বাড়াইয়া বলিল, “ম! যে বিমলিদের বাড়ী গেলেন—অনন্ত আর চুড়ি নিয়ে ।” “ও”, বলিয়া কালিচরণ পাজির পাতায় ডুবিয়া গেল । মা আসিলে বলিল, “যাক, সব দিকেই শুভ যোগাযোগ । টাকাটা ভালয় ভালয় পাওয়া গেল, পরশুই বেরিয়ে পড়ি। আজ এক খুরি দই পেতে রেখো ।” মা হাসিলেন, “ও-সব লক্ষণের কাজ আর তোকে শেখাতে হবে না, বাবা । কপালে দইয়ের ফোটা দেওয়া, পূৰ্ণঘট আমের ডাল দিয়ে সামনে রাখা, ঠাকুরের পেসাদী ফুল, বিৰিপত্তর শুকিয়ে কাপড়ের খুটে বেঁধে দেওয়া, সিদ্ধি দাতে কাটা—” কালিচরণ বলিল, “মোদাৎ ক্রটি যেন কিছুতে না হয় জান তো, চাকরির বাজার দারুণ মাগ্যি। আর শোন, আমি যেই চৌকাঠের বাইরে পা দেব, অমনি তুমি পেছন থেকে ডাকবে ।” মা গালে হাত দিলেন । বলিলেন, “ও মা সে কি কথা ! শুভ কাছে যাচ্ছিস, পেছু ডাকব কি রে ?” কালিচরণ হাসিয়া বলিল, “তুমি খনার বচন কিছুই জান না দেখছি । শোন : ভরা হতে শূন্ত ভাল যদি ভরিতে যায়। আগু হতে পিছু ভাল যদি ডাকে মায় । তুমি মা, তুমি পিছু ডাকলে নির্যাং ফললাভ।” একটু থামিয়া বলিল, “আর ওকেও বলে ঠিক ঐ