পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫৯৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ফাণ্ডল ব্ৰহ্মদেশের মার্ট-উপাসনা এবং কিলে অগ্নি-সংযোগ করিয়া তাড়াতাড়ি নামিয়া উণ্টেছে, নইলে আর কিছু দিন ব্যবসা চালাত । আরে পড়িল । o মশায়, মূষড়ে পড়লেন কেন ? টাকা তে আপনার নষ্ট সে নামিলে দেখা গেল, প্রজ্জলিত জিনিসটি আর কিছুই নহে—ছোট ছোট দুটি লাল রঙের মোমবাতি ও তাহার মধ্যস্থলে একটি ক্ষুদ্রকায় শ্ৰীগণেশ-মূৰ্ত্তি নিম্নশিরে ংস্থাপিত। লোকটা রসিক বটে ! ক্রুদ্ধ জনতা হুঙ্কার দিয়া উঠিল । ওদিকে শাস্তিরক্ষকের দল আসিয়া পড়িল । এখনই মনঃক্ষোভের উপর দেহক্ষোভের আর এক পৰ্ব্ব আরম্ভ হইবে হয়ত! পাশের একটা লোক হতভম্ব কালিচরণের জামার প্রান্ত টানিয়া লালদীঘির মধ্যে চুকিয়া পড়িল ও বলিল, “গণেশ উণ্টেছে কোম্পানী। কত টাকা গচ্ছা গেল ?” কালিচরণ বলিল, “টাকা তো দিইনি,-আজ দেব ভেবেছিলাম।” লোকটা কালিচরণের পিঠ চাপড়াইয়া বলিল, “তবে তে ভাগ্যবান পুরুষ আপনি! এই যে এত লোক দেখলেন—প্রায় সবাই দরখাস্তের সঙ্গে অগ্রিম টাকা জমা দিয়েছেন, কি না, চাকরি ফসকাবে না বলে । আরে মশাই, শুড়িপাড়ার ঝামু ছেলে হ’য়ে আমিই যে কাল অদেক টাকা জমা দিয়ে গেছি, বলি চাকরিটা আধপাকা হয়ে থাক। মেলা টাকা পেয়েই তো ওরা এত শীঘ্ৰ গণেশ হয় নি। পারেন তো চাকরির চেষ্টা ছেড়ে ঐ টাকায় একটা ছোটখাটো পানের দোকান খুলে বস্থন এই শহরে, তাতে লোকসান নেই।” লোকটি একমনে বকিয়াই চলিয়াছে, কালিচরণ ততক্ষণে ভাবিতেছে শুভযাত্রার কোন ত্রুটি-বিচূতি ঘটিয়াছিল কিনা। মাঃ, মেয়েটাকে মারা খুবই অন্যায় হইয়াছে। ঐটুকু মেয়ে সংসারের শুভাশুভ কি-ই বা বোঝে। সে না হাচিলে কালই যাত্রা করিতে হইত, আর এই অনন্ত ও চুড়ি বন্ধক দেওয়া এতগুলি টাকা-•• সহসা উৎফুল্ল কণ্ঠে কালিচরণ জিজ্ঞাসা করিল, “ভাল জামা পাওয়া যায় কোথায় বলতে পারেন ? ছোট মেয়ের ফ্রক ?” —সিধে চলে যান ; বৌবাজারে কাটা কাপড়ের দোকানে,—হরেক রকম জিনিষ পাবেন । জামা, শেমিজ, শাড়ী যা কিছু দরকার । কালিচরণের উজ্জল চোখ মুখ ও পায়ের দৃঢ় গতিবেগ দেখিয়া বোধ হইল, সে বুঝি এতক্ষণে ঠিক পথের সন্ধান পাইয়াছে। ব্ৰহ্মদেশের নাট-উপাসনা ঐীবীরেশ্বর গঙ্গোপাধ্যায় ব্ৰহ্মদেশীয় বৌদ্ধগণ হিন্দুদিগের ন্যায় জন্মান্তরবাদী। অন্তলোকবাসী সত্তাদিগের অস্তিত্বে এবং তাহাদিগের মধ্যে ইহলোকের কৰ্ম্মাতুযায়ী অত্যুচ্চ, উচ্চ, অমুচ্চ ও নীচ শ্রেণীস্থ সত্তার অস্তিত্বে তাহাদিগের বিশ্বাস আছে। ব্ৰহ্মদেশীয় ভাষায় এই সকল উচ্চশ্রেণীর সত্তার সাধারণ নাম “নাট” । নিম্নশ্রেণীর সত্তাদিগের সাধারণ নাম “টছে” বা ভূত । নাট শব্দ সংস্কৃত নাখ শব্দের অপভ্রংশ ; অর্থ প্রভৃ= দেবতা ( অধ্যাপক ডাডসন )। ব্ৰহ্মদেশীয়গণ নাট শব্বদ্বারা দেবতা বা উৎকৃষ্ট শ্রেণীর সত্তাদিগকেই দোতন করে । দেবতাগণ নাটশ্রেণীর অন্তভূক্ত হইলেও ব্রহ্মদেশে দেবরাজ ইন্দ্র ব্যতীত অন্য কোনও দেবতার পূজার ব্যবস্থা নাই । অগ্নিবরুণাদি দেবতা মী-নাট, মো-নাট ও ইয়ে-নাট প্রভৃতি বিভিন্ন শ্রেণীস্থ সত্তার সহিত মিশ্রিত হইয়া