পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬০৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8 نعوها প্রবাসী Segú, ইহাতেও আমাদের আপত্তি নাই। বস্তুত যদি সকল হিন্দু উচ্চনীচভেদ ভুলিয়। এক হন, সকলে সমান মনুষ্যত্ব বা মৰ্য্যাদার অধিকারী হন, তাহার চেয়ে মুখের আর কিছু নাই । তাহাই আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত । শ্ৰীনিৰ্ম্মলকুমার বসু আসাম ও বঙ্গদেশের বিবাহ-পদ্ধতি— তিব্বত পর্যটক স্ত্রবিজয়ভূষণ ঘোষ চৌধুরী প্রাচ্যতত্ত্বসাগর প্রণীত ও প্রকাশিত, ২য় সংস্করণ। ১৩৪৪ সাল, পৃ. ১• +৩৮২, মুল্য ২॥• টাকা। প্রাপ্তিস্থান – ১৪১ নং কর্ণওয়ালিস স্ট্রীট, কলিকাতা । আধুনিক হিন্দুসমাজে সমাজ ও ধৰ্ম্মাশ্রিত যে-সকল সংস্কার প্রচলিত আছে তাহার মধে। বিবাহই প্রধান । ইহা সমাজস্থিতির মূল বলিয়া ইহাতে নানা বিধি-fণষেধের উদ্ভব হইয়ছে । ব্যক্তি, পরিবার ও সমাজের মঙ্গলের জন্ত অনুষ্ঠিত হয় বলিয়া বিবাহ বিষয়ে লোকের ভাবনার অস্ত নাই ! এই জন্ত মনুসংহিতায় কুবিবাহ’ ও ‘দুবিবাহ নিবারণের জষ্ঠ বিধান দেখা যায় । অন্তান্ত দেশ ও জাতির 巫5 হিন্দুদের মধ্যেও এই যুগ-যুগ-প্রচলিত সামাজিক কৃত্যের মধ্যে নান৷ BB BB BBB BBB BBB Bg KD SDDB BBBgg BBBS ব্যবস্থা ও মামুষের মনোভাবের উপর নির্ভর কয়ে । আধুনিক সমাজবিজ্ঞান ও নৃতত্ত্বে এই সব বিচিত্র প্রথার আলোচনা, তুলনা ও কারণ নির্ণয়ের চেষ্টা দেখা যায় । আমাদের দেশে এ সম্বন্ধে যে-সব লেখ বাহির হয় তাহার অধিকাংশই প্রাচীন শাস্ত্রবচনের পুনরাবৃত্তি মাত্র। বিবাহ-অনুষ্ঠানের মধ্যে যে সব দেশাচার ও লোকাচার প্রবেশলাভ করিয়াছে তাহার মধ্যে বৈজ্ঞানিক ভাবে আলোচনা ও সমালোচনা হয় না । এই অবস্থার এইরূপ গ্রন্থ দ্বারা উক্তরূপ আলোচনীর বিশেষ সাহায্য হইবে । হথের বিষয়, এই প্রয়োজনীয় গ্রন্থের দ্বিতীয় সংস্করণ হইয়াছে, তাহাতে গ্রন্থকার নুতন তথ্য ও অমুসন্ধানের ফল সন্নিবেশিত করিতে পারিয়াছেন। তিনি ইতিপূৰ্ব্বে আসামের সামাজিক নানা বিষয় সম্বন্ধে গবেষণামূলক গ্রন্থ লিখিয়া খ্যাতিলাভ করিয়াছেন। তিনি ধরে বসিয়া উপকরণ সংগ্রহ করেন নাই। নিজে ঘুরিয়৷ দেখিয়া ও সমাজের লোকজনের সঙ্গে ব্যক্তিগত সংস্পর্শের ফলে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করিয়াছেন । বাংলা দেশেই বিবাহ-পদ্ধতির এমন সব বিচিত্ৰতা আছে যাহা আমরা জাপি মা ; বাংলা দেশের নিকটবৰ্ত্তী আসামের কথা আমরা কিছুই জানি না বলিলে অত্যুক্তি হয় না । ঘোষ-মহাশয় অতি যত্নে ও পরিশ্রমে এক দিকে বৈদিক কাল হইতে আমাদের শাস্ত্রে যে-সকল উল্লেখ পাওয়া যায় তাহী এবং সমাজের নান! স্তরে প্রচলিত নানা পদ্ধতির অতি সুন্দর আলোচনা করিয়াছেন। বঙ্গদেশ ও আসামের সমাজ যে-সব স্মৃতিগ্রস্থ দ্বার শাসিত সেইগুলির বচন উদ্ধার করিয়া আচারগুলির মুলা খুজিয়া বাহির করিয়াছেন। তাহদের সামঞ্জস্ত বা অসামঞ্জস্তের কারণ দেখাইয়াছেন । অনেকগুলি আচারের মধ্যে যে রহস্ত লুকাইয়া আছে তাহ। বিশেষ কৌতুহল উদ্রেক করে, গ্রন্থকার আধুনিক নৃতত্ত্বের আলোকে সেগুলির ব্যথা করিবার চেষ্টা করিয়া খুব ভাল কাজ করিয়াছেল । এরূপ আলোচনা না হইলে আচারগুলি বুঝিবার কোন হযোগ হয় না। এই জন্ত অধিবাস হইতে আরম্ভ করিয়া অষ্টমঙ্গল পৰ্য্যন্ত প্রত্যেকটি আচার বণিত ও ব্যাখ্যাত হুইয়াছে । বিবাহ-সংস্কারের সিদ্ধত। যাহাকে ইংরেজীতে c neunulatio , ও সংস্কৃতে লিষ্ঠা বলা হয়, সে সম্বন্ধেও গ্রন্থকারের আলোচনা বিশেষত্বপূর্ণ । আমরা দেখিয়া সুখী হইলাম যে শাস্ত্র লইয়া শ্রদ্ধার সঙ্গে আলোচনা কৱিলেও গ্রন্থকার শাস্ত্র নামে পরিচিত যে কোন গ্ৰন্থকে অঙ্গভাবে অমুসরণ করেন নাই, তিনি স্বাধীন চিন্তা ও যুক্তির দ্বার। শাস্ত্রের তাৎপৰ্য্য বুঝাইবার চেষ্টা করিয়াছেন এবং আধুনিক যুগে প্রচলিত কতকগুলি ক্রিয়ার দোষ ও অযৌক্তিকত দেখাইতে সাহসী হইয়াছেন । “সেকালে বর-কঙ্কার জন্মপত্রিক প্রস্তুতের, তাহার দ্বারা রাশিগণনাদির, যোটক বিচারের শুভলয়ে বিশেষতঃ রাত্রিকালে কস্তাসম্প্রদান করিবার প্রথ} ছিল না" (পৃ. ৩১ ) । কলিত-জ্যোতিষের এই প্রভাব ও কুফল সম্বন্ধে গ্রন্থকারের বিস্তৃত আলোচনা খুব জোরালে হইয়াছে এবং ইহাতে অনেকের চোখ ফুটিবে। প্রাচীনতম শাস্ত্রগ্রন্থ হইতেই গ্রন্থকার প্রমাণ করিতে চেষ্টা করিয়াছেন যে যৌবন-বিবাহ শাস্ত্রসঙ্গত । আসামে প্রচলিত বিধবা-বিবাহ সম্বন্ধেও আলোচনা আছে । আসাম ও বঙ্গদেশের কয়েকটি জাতি সম্বন্ধে সবিস্তারে অনেক কথা লিখিত হইয়াছে, যেমন আসামের সাহ এবং বাংলার বৈদ্য । গ্রন্থকারের কোন কোন মন্তব্য কিছু আপত্তিকর বলিয়া মনে হইবে। গ্রন্থে একই বিষয় দুই-তিণ বার আলোচনার জনা ইহার কলেবর বৃদ্ধি হইয়াছে। একটু গুছাইয়া লিখিলে পাঠকের পক্ষে সুবিধা হইত। কতকগুলি ভুল লক্ষ্য করা গেল,—“কালিদাসের কাদম্বরীতে" (পৃ. ৯৪ )। “পাণ্ডুরাজার পত্নী কুন্তী এবং মাত্রীর গর্ভে ধৰ্ম্ম প্রভৃতি দেবগণের ঔরসে অঙ্গ, বঙ্গ, কলিঙ্গাদি পুত্রোৎপাদনের” (পৃ. ১১- ) । এই গ্রন্থ আসাম ও বঙ্গদেশের বিবাহপ্রথা ও সমাজ সম্বন্ধে আলোচনার পক্ষে অপরিহার্যারূপে প্রয়োজনীয় হইবে । শ্রীরমেশ বসু বিজয়িনী—ঐকুৱেন্দ্রনাথ দাসগুপ্ত। মিত্র এও ঘোষ, ১• হ্যামাচরণ দে ষ্ট্রট, কলিকাতা। পৃ. ১০ও । মুলা ১।• । দেশ-বিদেশে ডক্টর কুরেঞ্জনাথ দাসগুপ্তের পাণ্ডিত্যের থ্যাতি অাছে। কিন্তু এপালে তিনি ডক্টর দাসগুপ্তরূপে আত্মপ্রকাশ করেন নাই, করিয়াছেন শ্রীহরেন্দ্রনাথ দাসগুপ্তরূপে। যদিও ইতিপূৰ্ব্বে কতিপয় গ্রন্থে উহার সাহিত্যামুরাগের পরিচয় পাইয়াfছ, তথাপি এই কবিতার বইখালি খুলবার পুৰ্ব্বে মনে মনে আশঙ্কা করিতেছিলাম, কি জানি, হয়ত, লেখকের পাণ্ডিত্য আমাকে দূরে রাখিয়া দিবে, তাহার অস্তুরলোকে প্রবেশ করিতে পারিব না। কিন্তু কয়েকটি কবিতা পড়িতেই সে আশঙ্কা দূর হইল। একটি রসস্নিগ্ধ হৃদয়ের সহজ আহবান শুনিতে পাইলাম । দেখিলাম, এখানে দার্শনিক হার মানিয়াছেন, কাব্যলগীই বিজয়িনী । গ্রন্থারম্ভে রবীন্দ্রনাথের আশীৰ্ব্বাদ কবিতাটি মনোরম ৷ আলোচ্য কীবে। অনেক স্থলে রক্টক্স-প্রভাব লক্ষিত হয় ; ভাষার গম্ভীর ভঙ্গিমায় সংস্কৃত সাহিত্যের প্রভাবও পরিস্ফুট । কিন্তু কবির ভাব ও কল্পনা সম্পূর্ণ নিজস্ব । “জোনাকী”, “স্মৃতি” এবং “আবিষ্কার’— কবিতা তিনটির সহজ, সুন্দর প্রকাশভঙ্গী বিশেয করিয়া ভাল লাগিল । “সুর্য্যমুখী বর্ণে আঁকা তোমার অঞ্চল করে ঝলমল, দূৰ্ব্বার হরিতক্ষেত্রে, পল্পবিত বনে শিশিয়ের সনে, চিরদিন চিররাত্রি কাপে তোমার মঙ্গল গাথ। শেফালিকা-দলে শয্যা পাতা" ( মহীয়সী ) -কাব্যলক্ষ্মীয় অঞ্চল-দ্যুতির আভাস পাইলাম। দুই-এক স্থানে ভাব ও ছন্দ ঈষৎ দুৰ্ব্বল বলিয়। মনে হইল । অধিকাংশ কবিতাই হৃদয়গ্রাহী। গ্রন্থের বহিঃসৌষ্ঠব মুরুচিসঙ্গত । ঐধীরেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়