পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

V89 দিবার ব্যবস্থা করা হইয়াছে। বাস্তব ক্ষেত্রে সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম একটি টিলকে এরূপ অসম্ভব গতিশক্তিসম্পন্ন করার বিষয় বৈজ্ঞানিকদের নিকট অসম্ভব বলিয়াই বিবেচিত হইত। কিন্তু এই যন্ত্রসাহায্যে অধ্যাপক লরেন্স তাহাই সম্ভব করিয়া তুলিয়াছেন। এই যন্ত্রসাহায্যে কৃত্রিম উপায়ে তিনি প্রায় এক শত পঞ্চাশটি নুতন স্বতোবিকিরণকারী পদার্থ প্রস্তুত করিতে সমর্থ হইয়াছেন এবং কৃত্রিম উপায়ে রেডিয়ামের অনুরূপ পদার্থ উৎপাদন করিবার যথেষ্ট সম্ভাবনা দেখা যাইতেছে । এই পদার্থগুলিকে চিকিৎসাবিদ্যায় প্রয়োগ করিবার যথেষ্ট চেষ্টা চলিতেছে। সাইক্লোট্রন আধুনিক যন্ত্র-বিজ্ঞানের চরমোৎকর্ষ। একটি সাধারণ তথ্য হইতে কিরূপে এমন একটি বিরাটু জটিল যন্ত্রের গঠন সম্ভব হইয়াছে তাহা ভাবিলে অবাক হইয়া যাইতে হয় । আরও বিস্ময়ের বিষয় এই যে, এই যন্ত্ৰ নিৰ্ম্মাণের মূল তথ্য প্রায় অৰ্দ্ধ শতাব্দীর অধিক কাল পূৰ্ব্বেও জানা ছিল, তথাপি ইহা নিৰ্ম্মাণ করা সম্ভব হয় নাই । তড়িতাবিষ্ট একটি কণিকার উপর চুম্বক ও তড়িৎ ক্ষেত্রের প্রভাব কিরূপ, তাহা একটি পুরাতন আবিষ্কার । তড়িতাবিষ্ট একটি কণিকার উপর একই ক্ষেত্রে একই সময়ে বৈদ্যুতিক ও চুম্বক ক্ষেত্র প্রয়োগ করিলে তাহার ফল কিরূপ দাড়াইবে, লরেন্স ইহা দেখিতে মনস্থ করিয়াছিলেন । সাধারণ গাণিতিক হিসাবেই তিনি দেখিতে পাইলেন –ইহার ফল অসাধারণ । যান্ত্রিক অসুবিধাজনিত কোন বাধা না পাইলে সেই তড়িতাবিষ্ট কণিকাটি অসীম শক্তি অর্জন করিতে সমর্থ হইবে । যান্ত্রিক অসুবিধার জন্য বাস্তবক্ষেত্রে কণাটিকে অসীম শক্তিশালী করা সম্ভব না হইলেও তাহার শক্তি ষেরূপ বৰ্দ্ধিত করা যায় সেরূপ আর কোন উপায়েই করা সম্ভব ছিল না। এই যন্থসাহায্যে তড়িতাবিষ্ট কণিকাটি কিরূপে বিপুল শক্তি অর্জন করে, এক্ষণে সেই বিষয়ে কিঞ্চিৎ আলোচনা করিতেছি । নোবেল-প্রাইজ প্রাপ্তির সংবাদের সঙ্গে সঙ্গেই দেখা গেল—প্রায় প্রত্যেক সংবাদপত্রই সাইক্লোট্রনকে পরমাণু চুর্ণ করিবার যন্ত্র বলিয়া বর্ণনা করিয়াছেন। প্রবাসী సిరిgఆ جیح ح-------- যেন ইহা এক প্রকার যাতা-কল। কতকগুলি পরমাণু ইহার ভিতর প্রবেশ করাইয়া দিলে সেগুলি কে ডালের মত চূর্ণ হইয়া বাহির হইয়া পড়িবে। সাইক্লোট্রনের আকৃতি দেখিয়া এরূপ একটা দান হওয়াও অস্বাভাবিক নহে। কিন্তু সাইক্লোটুম তড়িতাবিষ্ট কণিকার শক্তি বৃদ্ধি করিবার যন্ত্রবিশেষ। তড়িতাবেশশুন্য কোন কণিকার উপর সাইক্লোটুনের কোন প্রভাব লক্ষিত হয় না। সাইক্লোট্রনের ভিতর হইতে পরমাণু চুর্ণিত হইয়া বাহির হইয়া আসে না ; কিন্তু পরমাণুকে বিধ্বস্ত করিবার জন্য ইহারই সাহায্য লsয় হয়। কিরূপে ইহা সম্ভব হয় ? তড়িৎ দুই প্রকার-- ধন-তড়িৎ ও ঋণ-তড়িৎ । বিষমগুণসম্পন্ন তড়িৎ পরস্পরকে আকর্ষণ করে এবং সমগুণসম্পন্ন তড়িৎ পরম্পরকে দূরে ঠেলিয়া দেয়। অর্থাৎ ঋণ-তড়িৎ ধনতড়িৎকে আকর্ষণ করে এবং ঋণ-তড়িৎকে দূরে ঠেলিয়া দেয় । বিভিন্ন তড়িং-সম্পন্ন দুইটি ফলককে পাশাপাশি রাখিলে উহাদের মধ্যস্থলে একটি বৈদ্যুতিক ক্ষেত্রের স্বষ্টি হইবে । এখন দুইটি ফলকের মধ্যস্থলে যদি একটি ধন-তড়িৎ কণিকা ছাড়িয়া দেওয়া হয় তবে ফল কি হইবে ? ধন-তড়িৎ-সম্পন্ন ফলকটি কণিকাটিকে দূরে ঠেলিয়া দিবে, কিন্তু ঋণ-তড়িং-সম্পন্ন ফলকটি উতাকে আকর্ষণ করিবে । ফলে কণিকাটি ঋণ-তড়িৎ ফলকটির প্রতি বেগে ধাবিত হইবে । বেগে ধাবিত হইবার ফলে ইহার গতির মাত্রা বৃদ্ধি পাইবে । তাত হইলেই বুঝা গেল, বৈদ্যুতিক ক্ষেত্রে একটি তড়িতাfবষ্ট কণিকার কেমন করিয়ু শক্তি বৃদ্ধি হইতে পারে। তড়িৎক্ষেত্রের মত তড়িভাবিষ্ট কণিকার উপর চৌম্বক ক্ষেত্রের প্রভাব একই রকমের নঙ্গে । চুম্বককে ঘিরিয়া একটি চুম্বক-ক্ষেত্র অবস্থান করে । চৌম্বক ক্ষেত্রের আকর্ষণী শক্তির মাত্রা বিভিন্ন স্থলে বিভিন্নরূপ হইয়া খাকে । কিন্তু একই প্রকারের দুইটি চুম্বক পাশাপাশি রাখিলে উহাদের মধ্যস্থিত চৌম্বক ক্ষেত্রের আকর্ষণী শক্তি সৰ্ব্বত্রই প্রায় সমান দেখা যায়। এইরূপ একটি চুম্বক-ক্ষেত্রে কোন তড়িতাবিষ্ট কণিকা প্রবেশ করিবামাত্রই তাহার পথ বৃত্তাকারে বাকিয়া যায়। ধনতড়িৎকণা যেদিকে বাকিবে, ঋণ-তড়িৎকণা তাহার