পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ফাত্তম বিপরীত দিকে বাকিয়া থাকে এবং বৃত্তাকার পথের বাস কণাটির গতি ও ভারের উপর নির্ভর করে। কণাটির গতি যত বেশী হইবে, ইহার পথের ব্যাসও ততই বদ্ধিত হইবে । ভার বেশী হইলেও ব্যাসের পরিমাণ বদ্ধিত হইবে। কিন্তু চুম্বক ছুটির আকর্ষণী শক্তি বাড়াইয়া দিলে কণাটির পথের ব্যাস হ্রাস পাইবে । কারণ কণাটির উপর চুম্বকের প্রভাব বৃদ্ধি পাওয়ায় ইহাকে অধিকতর দ্রুতগতিতে বাকাইয়া দিবে। ফলে বৃত্তটি ছোট হইয়া পড়িতে বাধ্য। গতির সহিত কণার বৃত্তাকার পথ রচনার আরও অদ্ভুত আছে। পূৰ্ব্বেই বলিয়াছি, তড়িতাবিষ্ট কণিকা চুম্বক-ক্ষেত্রে ষে-বৃত্ত রচনা করে তাহার পরিধি গতির সঠিত বৃদ্ধি পায়। অপেক্ষাকৃত অল্পগতিসম্পন্ন কণিকা অধিকতর গতিসম্পন্ন কণিকা অপেক্ষা ক্ষুদ্রতর বৃত্তে পরিভ্রমণ করিবে । আর একটি অদ্ভূত ব্যাপার এই যে, ক্ষুদ্রতর বৃত্তে পরিভ্রমণকারী কণিকার একটি বৃত্ত পরিভ্রমণ করিয়া আসিতে যে-সময় লাগিবে, বৃহত্তর বৃত্তে ভ্রমণকারী কণিকাও ঠিক সেই সময়ের মধ্যেই বৃত্তটি ঘুরিয়া আসিবে। অর্থাৎ একটি তড়িতাবিষ্ট কণিকার গতির মাত্র যতক্ট হউক না কেন, চৌম্বক ক্ষেত্রে ক্ষুদ্র অথবা বৃহৎ একটি সম্পূর্ণ বৃত্ত পরিভ্রমণ করিয়া আসিতে সৰ্ব্বদা একই সময় লাগিবে । কিন্তু কণিকাটির তড়িতের মাত্রা বুদ্ধি করিলে অথবা চৌম্বক ক্ষেত্রের আকর্ষণী শক্তি বাড়াইয়া দিলে সম্পূর্ণ একটি বৃত্ত রচনার সময় কমিয়া যাইবে । এইরূপ একটি বৈদ্যুতিক ক্ষেত্র ও চৌম্বক ক্ষেত্রের একত্র সমবায়ে সাইক্লোট্রন যন্ত্র নিৰ্ম্মিত হইয়াছে। উপরে ও নীচে দুইটি চুম্বক রাখিয়া তন্মধ্যে একটি চৌম্বক ক্ষেত্র স্বষ্টি করা হয়। এই চৌম্বক ক্ষেত্রে অৰ্দ্ধগোলাকার ফাপা যা তার মত দুইটি পাত্র পাশাপাশি স্থাপন করা হয়। এই দুইটি অৰ্দ্ধ-গোলকের একটি ধন-তড়িৎ এবং অপরটি ঋণ-তড়িৎ সম্পন্ন। বৃহৎ একটি ফাপা যাতাকে মাঝামাঝি কাটিয়৷ দুই ভাগে ভাগ করিলে যেরূপ হয়, যন্ত্রের নমুনা কতকটা সেইরূপ । অৰ্দ্ধ-গোলাকার ফাপ র্যাত দুইটির মধ্যস্থলে একটু ফাক রাখিয়া একই সমতল ক্ষেত্রে মাটির সহিত সমান্তরালে সম্পূর্ণরূপে বায়ুশূন্ত আবদ্ধ পাত্রে স্থাপন করা বৰ্ত্তমান বর্ষে বিজ্ঞালে লোবেল-প্রাইজ w8% হয়। উপরিউক্ত অৰ্দ্ধ-গোলাকার র্যাত দুইটির মধ্যস্থিত ফাকা জায়গায় যদি ধনতড়িতাবিষ্ট একটি কণিকা ছাড়িয়া দেওয়া হয়, তবে চৌম্বক ক্ষেত্রের আকর্ষণের ফলে ইহা একটি বৃত্তাকার পথ অবলম্বন করিবে এবং ধন-তড়িৎসম্পন্ন অৰ্দ্ধবৃত্তাকারে র্যাত হইতে বিক্ষিপ্ত হইয়া ঋণ-তড়িংসম্পন্ন যাতার দিকে আকৰ্ষিত হইবে। ফলে কণিকাটির গতিশক্তি বৃদ্ধি পাইবে। অর্থাৎ কণিকাটি ঋণ-তড়িৎসম্পন্ন যাতার ফাপা স্থানের মধ্যে একটি অৰ্দ্ধবৃত্ত রচনা করিয়া উহার মধ্য হইতে বাহির হইয়া আসিবে । কণিকাটির গতি হইবে এখন অপর দিকস্থ ধন-তড়িৎসম্পন্ন যাতাটির দিকে । কিন্তু এই যাতাটি ধন-তড়িংসম্পন্ন থাকায় কণাটিকে বিপরীত দিকে ঠেলিয়া দিবার চেষ্টা করিবে । কিন্তু যে মুহূৰ্ত্তে কণিকাটি ঋণ-তড়িৎসম্পন্ন যাতার ঠিক কিনারায় আসিয়া উপস্থিত হয়, ঠিক সেই মুহুর্তে যান্ত্রিক কৌশলে ধন-তড়িংসম্পন্ন অপর র্যাতাটিকে ঋণ-তড়িৎসম্পন্ন করিয়া দেওয়া হয় । ফলে কণিকাটি বিকর্ষিত না হইয়া অপর যাতাটি কর্তৃক আকৃষ্ট হইয়া তাহার মধ্যে প্রবেশ করে। ইহাতে তাঙ্গার গতিবেগ আরও বৃদ্ধি পায় এবং গতি বৃদ্ধি হইলেই তাহার রচিত বৃত্তের পরিধিও বাড়িয়া যায়। অতি অল্প সময়ের মধ্যে বার-বার উপরিউক্ত প্রক্রিয়ার ফলে কণাটি ক্রমশ: বৃহত্তর বৃত্ত পরিভ্রমণ করিয়া কুণ্ডলীর মত পথে ছুটিতে থাকে কণিকাটির গতির মাত্র বাড়িতে বাড়িতে যখন তাহার বৃত্তের পরিধি র্যাতার পরিধির সমান হইয়া আসিবে তখন যা তার এক পাশের গর্ত দিয়া ভীম বেগে ছুটিয়া বাহির হইয়া পড়িবে। এই বিপুল গতিসম্পন্ন টিলটি ছুটিয়া আসিয়া কোন পদার্থকে আঘাত করিলে তাহার কতকগুলি পরমাণু নিশ্চয়ই বিপৰ্য্যস্ত হইয়া যাইবে এবং তাহাদেব কেন্দ্রীয় পদার্থের রূপান্তর সংঘটিত হইবে। টিলটি আহত পদার্থের কেন্দ্রীনের সহিত মিলিত হইয়া নূতন এক প্রকার যৌগিক কেন্দ্রীনের স্বল্প করিবে। কাজেই এই যন্ত্রসাহায্যে পরমাণুর কেন্দ্রীয় পদার্থকে বিপুল শক্তিসম্পন্ন চিলৰূপে ব্যবহার করিয়া কৃত্রিম উপায়ে স্বতো বিকিরণকারী পদার্থ প্রস্তুত অথবা এক পদার্থকে অন্য পদার্থে রূপান্তরিত করা সম্ভব হইয়াছে। চুম্বক-ক্ষেত্রটি কণিকাটিকে সৰ্ব্বদা একটি বৃত্তাকার পথে চলিতে বাধ্য