পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬৬৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সঙ্গ শ্ৰীমুরেন্দ্রনাথ দাসগুপ্ত মনুষ্যসমাজ কেমন ক’রে বহু সহস্ৰ বৎসরের ইতিহাসে আপনাকে গড়ে তুলেছে, এ সম্বন্ধে যারা আলোচনা করেছেন তারা বোধ হয় এই সিদ্ধাস্তে এসেছেন যে মামুষের মধ্যে স্বভাবতই অপর মানুষের সঙ্গে মিলবার একটা অদম্য স্পৃহা আছে। ইংরেজী আম্বীক্ষিকী শাস্ত্র পড়তে গেলে প্রথমেই একটা কথা দেখতে পাই, সেটা S{53 –Man is rational animal offs & হইতে মানুষের প্রভেদ এইখানে যে মানুষ বুদ্ধিপ্রধান। আন্ধীক্ষিক বুদ্ধিশাস্ত্র সেইজন্য মানুষের লক্ষণ ੇ ਜਿਬ তাহাকে বুদ্ধিপ্রধান বলিয়া বর্ণনা করিয়াছে। কিন্তু সমাজ বা রাষ্ট্রশন্স কিংবা মামুষের সভ্যতার ইতিহাসের দিক দিয়া দেখিতে গেলে মানুষকে মনুষ্যকামী বলিয়া বর্ণনা করিতে হয়। ইংরেজীতে বলিতে গেলে বলিতে হয়— Man is not only a rational animal but he is pre-eminently a social animal. Ata: “fee &f: ও মহৰ্ষিতুল্য ব্যক্তিরা মাতুষকে তাহার বৃদ্ধির প্রাধান্যের দিক দিয়াই দেখিয়াছেন। সমস্ত ইউর প্রাণী জন্মের সঙ্গে সঙ্গেই আত্মরক্ষার জন্য প্রস্তুত হইয়া জন্মিয়াছে। কেহ বা নথ-দন্ত-শৃঙ্গের দ্বারা শক্রকে পরাজিত করে, কেহ বা উল্লম্ফনের দ্বারা কিংবা দ্রুত প্রধাবনের দ্বারা আত্মরক্ষা করে। যে প্রাণী যেরূপ জল, বায়ু বা যেরূপ প্রাকৃতিক পরিবেষ্টনের মধ্যে জন্মগ্রহণ করে, তাহার দেহযন্ত্র ও দেহের আবরণ তদনুরূপই হইয়া থাকে। যে সমস্ত প্রাণী গভীর সমুদ্রজলে থাকে জলভার বহনের জন্য তাহাদের শল্ক বৰ্ম্মের ন্যায় স্বকঠিন হয়। যে সমস্ত পক্ষী বহু উচ্চে আকাশে ওড়ে তাহাদের ডান স্বকঠিন ও স্বকঠোর, যাহারা অল্প দূর মাত্র ওড়ে তাহাদের ডানা কোমল । EffsfLT gsfo FR STfLE–Structure of an animal is a function of its environment. TNG প্রাণিজগৎ এমনি করিয়া প্রকৃতির পর্য্যবেক্ষণে চলিয়াছে, ԵԵտաֆՀe কেবলমাত্র মানুষই অসহায় হইয়া জন্মগ্রহণ করে ও সকল প্রাণীর উপর প্রভুত্ব করে। কিন্তু মানুষের এই যে প্রভূত্ব, এই যে স্বাতন্ত্র্য, ইহা কেবল তাহার বুদ্ধির বলেই ঘটে নাই। বুদ্ধি মানুষের যতই থাকুক, সে বুদ্ধি তাহাকে মাচুষের সদগতি কখনই দিতে পারিত না, যদি না তাহার সঙ্গে নরসঙ্গের কামনা, স্বজাতি কামনা, আত্মপরিবারের মঙ্গলকামনা সেই বুদ্ধিকে তাহার যথার্থ মার্গে প্রেরণ করিত । অনেক মনুষ্যশিশু ব্যাঘ্রগুচায় পালিত হইয়াছে একথা শোনা যায়, কিন্তু সেই ব্যাভ্রের আরণ্যজীবনের আবেষ্টনে তাহার মতুযাবুদ্ধির তীক্ষতা প্রকাশ পাইয়াছে, এরূপ ঘটনা কেবলমাত্র টার্জনের গল্পেই দেখা যায়। অসভ্য যুগ হইতে মানুষ যদি দল বাধিয়া না থাকিত, কোনও না কোন উপায়ে আপনাদের দলে সকলে একত্র হইয়া নিজেদের নিরাপত্তা বিধান না করিত, তবে পশুদের অত্যাচারে মনুষ্যজাতি বিলুপ্ত হইয়া যাইত। এই যে দল বাধিয়া পরস্পরের জন্য থাটিয়া পরস্পরকে নিরাপদ করিয়াছে, পরস্পরের শ্রমজাত দ্রব্যের বিনিময়ে পরস্পরের সমৃদ্ধি বিধান করিয়াছে, অন্য জাতির আক্রমণ হইতে আপনাদিগকে বাচাইবার জন্য দলপতি নিৰ্ব্বাচন করিয়াছে, শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষার আক্রমণ হইতে আত্মরক্ষার জন্য গৃহ ও পুরনির্মাণ করিয়াছে, পরস্পরের নিকট পরস্পরের গতায়াতের জন্য ও দ্রব্যবিনিময়ে পরস্পরের সাহায্য করিবার জন্য পথ ও বক্স প্রস্তুত করিয়াছে, অশ্ব, গর্দভ প্রভৃতি ইতর প্রাণীকে পণ্যবাহু করিয়াছে, একস্থানে প্রতিষ্ঠিত হইয়া থাকিবার জন্য বসুমতীকে শস্যোৎপাদিনী করিয়াছে—ইহার সকলের মূলেই বুদ্ধি দেখিতে পাই সন্দেহ নাই ; কিন্তু বুদ্ধি এখানে স্বতন্ত্র বা স্বাধীন হইয়৷ কাজ করে নাই। বুদ্ধির মূলে স্বজাতির প্রতি প্রতি, পুত্রকন্যা-পরিবারের প্রতি প্রতি প্রেরিকা হইয়া রহিয়াছে। মানুষ যদি পশুস্বভাবই থাকিত এবং তাহার তীক্ষুবুদ্ধি