পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রসাদের মধ্য দিয়া জামার প্রসাদের মূল্য ও পরিচয় আমি লাভ করিতে চাই । এ কথাতেও সন্তুষ্ট না হয়ে কেউ হয়ত এমন কথা বলিতে পারেন যে হয়ত কোনও কোনও বিশিষ্ট ব্যক্তির পক্ষে এই রকম ভাবের জঃস্থ কামনাবিহীনস্কপে বিশ্বের প্রতিকামনা বা আত্মপ্রসার্থের মধ্য দিয়া বিশ্ব-প্রসাদের আমন্ত্রণের মন্ত্র উচ্চারিত হইতে পারে কিন্তু ইহা যে সৰ্ব্ব মছুষ্যসাধারণ তাহা কি করিয়া বলিৰ ? কিন্তু মানুষের সম্পর্কে কোনও কথা প্রাত্যক্ষিক বস্তুর ন্যায় অসংশয়িত ভাবে প্রমাণ করা কঠিন। কিন্তু একথা বলা যায় যে মামুষের চরম পরিণতিতে যদি বিশ্ব-প্রসাদের মধ্য দিয়া আত্মপ্রসাদের ধারার অনুসন্ধান সফল হইয়া থাকে তবে একথা স্বীকার করিতে হয় যে সেই গতি লাভ করার জন্যই মামুষের মন প্রধাবিত হইতেছে। মানুষ যখন পাথরের ফলা ছুড়িয়া ও শরপ্রয়োগের দ্বারা পশুবধ আরম্ভ করিয়াছিল তখনই সে বৰ্ত্তমান মেসিনগানের ও বোমার অঙ্গুসন্ধানে লিপ্ত হইয়াছিল, একথা অস্বীকার করা যায় না । অর্থাৎ যে জিঘাংসা-বৃত্তির দ্বারা ও যে আত্মরক্ষার অতু-প্ররণায় মানুষ শরশল্য আবিষ্কার করিয়াছিল সেই বৃত্তিস্বয়েরই চরম পরিণতিতে মানুষ উদ্ভাবন করিয়াছে তাহার আগ্নেয়াস্ত্র । যে-মনোবৃত্তিতে মানুষ বহু শ্রম স্বীকার করিয়া আপনাদের বুদ্ধির ইতিবৃত্ত, চরিত্রের ইতিবৃত্ত প্রস্তরে অঙ্কিত করিয়াছে সেই বৃত্তির যথার্থ উৎস হইতেছে সমগ্র মামুষের সঙ্গলাভের স্পৃহা ও সৰ্ব্ব মামুষের বক্ষে আপনার জন্য একটি নীড় রচনা করিবার প্রবল আগ্রহ । তার সঙ্গে জড়িত থাকিতে পারে স্পৰ্দ্ধা, জড়িত থাকিতে পারে আত্মাভিমান, কিন্তু স্পৰ্দ্ধা ও আত্মাভিমানকে মানুষ চিরন্তন করিয়া রাখিতে চায় না। চিরন্তন করিয়া রাখিতে চায় সে, তাহার পশ্চাতে প্রচ্ছন্ন হইয়া রহিয়াছে যে-শক্তি তাহাকে । শক্তি মানুষের প্রিয়, মামুষের নিকট আমরা প্রিয় হইতে চাই—আমাদের শক্তির পরিচয়পত্রে । বুদ্ধি মাছুষের প্রিয় তাই চিরন্তন মামুসের কাছে আমর! প্রিয় হইতে চাই আমাদের বুদ্ধির প্রমাণপত্রে । মামুষের কল্যাণ, মাছুষের মহত্ত্ব মানুষের কাছে প্রিয় তাই আমরা ব্যাখ্যান করিতে চাই—আমাদের চরিত্রের মহত্ব, আমাদের কল্যাণ কীৰ্ত্তি । এই মনোবৃত্তির মধ্যে হয়ত অনেক পক্ষ ক্লেদ থাকিতে পারে কিন্তু সেই সমস্ত পঙ্ক কালিমা ভেদ করিয়া যে একটি শ্বেত শুভ্র কমনীয় মুণালদও দেদীপ্যমান যুধ্যালোকের দিকে উৰ্দ্ধস্কুরদগভস্তি হইয়া ছটিয়াছে, একথা অস্বীকার করা যায় না। উপনিষদ বলিয়াছেন— देनर मदर्द पलब्रशांच्च नर्सर उः गब्रांशान् cयाश्छज श्रांझनः गकर {y cक्न, गर्रानि कृछानि बबू, श्छ जुनि झूठानि সৰ্ব্বভূতেষু চাঞ্জানং ততো ন বিজুগুপসতে । কি অর্থে ঋষিরা এই সমস্ত বাণী উচ্চারণ করিয়াছিলেন তাঙ্ক আমরা নির্ণয় করিয়া বলিতে পারি না । এই সমস্ত বাণীর দ্বারা হয়ত তাহারা কোনও সমাধিলভ্য দার্শনিক তত্ত্বের ইঙ্গিত করিয়াছিলেন, কিন্তু আমরা এই জিনিসটি আমাদের প্রত্যক্ষ অনুভবের দ্বারা হৃদয়ঙ্গম করিতে পারি ষে আমাদের প্রত্যেকের চিত্তবৃত্তির সমস্ত আতানে-বিভানে, তার সংগঠনে, তার স্পৃহা ও কামনায়, তার আদর্শের সন্ধারণে, তার সৌন্দর্য্যোপলব্ধিতে, তার রসোপলব্ধিতে, তার আনন্দে আহলাদে, তার চরম ও পরম গতির নিৰ্দ্ধারণে, সভ্যজগতের প্রত্যেক মানুষ অতীত ও বর্তমানের সমস্ত সভ্যসমাজকে ব্যক্ত করিয়া ভবিষ্যৎ মানব-সস্ততিদের সহিত এক মহাযাত্রার স্রোতে আপনাকে ঢালিয়া দিয়াছে। এই যে মনুষ্যসমাজের চিত্ত আমাদিগকে ব্যাপ্ত করিয়া রহিয়াছে ইহাকে বর্জন করিয়া আমাদের স্বতন্ত্র অস্তিত্বের যুথনই অকুসন্ধান করিতে যাই তখনই যেন ব্যর্থ হইয়া ফিরিয়া আসি । শিল্পে, সাহিত্যে, কল্পনায়, জ্ঞানে বিজ্ঞানে, আদশে, বাণিজ্যে, লোকব্যবহারে, আমাদের চিত্তের যে প্রকৃতির পরিচয় পাই, তাহার মধ্যেই অতীত ও বর্তমান সমগ্র মানবজাতির চিত্তের স্বভাবকে অঙ্কিত দেখিতে পাই ! এই বিশ্বাত্মা হইতে আমাদের আত্মাকে যখন আমরা বিযুক্ত করিয়া দেখিতে যাই তখন মনে হয় যেন আমাদের কিছুই অবশিষ্ট রহিল না। এই জন্যই সমস্ত বিশ্বমানবের চিত্তকে আমরা নিরস্তর আমাদের মধ্যে পাইতেছি এবং এই জন্তই সৰ্ব্বণি ভূতানি মধু। এই জন্যই ঈশোপনিষদ বলিয়াছেন ‘যস্থ সৰ্ব্বাণি ভূতানি আত্মন্তেবানুপশুতি ( যিনি সৰ্ব্বচিত্তকে আপনার চিত্তে সন্নিবিষ্ট দেখেন এবং যিনি সৰ্ব্বচিত্তের মধ্যে আপনার গতিকে প্রত্যক্ষ দেখেন এবং সৰ্ব্বচিভকে আপন আত্মা বলিয়। মনে করেন তিনি যথার্থ জ্ঞানী । কোনও দার্শনিক তত্ত্বের অতুসন্ধান না করিয়া ও একথা আমরা সহজেই বুঝিতে পারি যে, আজকার দিনের সভ্যজগতের আত্মার যে পরিচয় আমরা পাই তাহার মধ্যেই সমস্ত প্রাচীন যুগের মানব অশরীরী ভাবে বাস করিতেছে এবং একটি অখণ্ড মানবচিত্ত সৰ্ব্বদেশে সৰ্ব্বকালে আপনাকে ব্যাপ্ত করিয়া রাখিয়াছে । যেমন একটি সাগরের জলের আস্বাদের মধ্যে সপ্ত সাগরের জল মিলিত রহিয়াছে, তেমনি একটি মানবচিত্তের মধ্যে আমরা সৰ্ব্ব মানুষকে প্রত্যক্ষ করিতে পারি । মানুষের সহিত মানুষের সম্বন্ধ যদি এতই ঘনিষ্ঠ, তবে মানুষের সঙ্গের জন্য যে আমাদের চিত্ত লোলুপ হইবে ইহাতে বিস্ময়ের কিছুই নাই, কিন্তু তথাপি